Skip to main content

Posts

Showing posts with the label ইতিহাস রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রস্তুতি শুরু করা যাক [খুব তাড়াতাড়ি আসছে]

WBSSC WBPSC WBPRB WBCS

সাম্প্রতিক পোস্ট

দশম শ্রেণী - জীবনবিজ্ঞান - জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় - উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান - 'সদৃশ জোড়' (Analogous Pair)

দশম শ্রেণী - জীবনবিজ্ঞান - জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় - উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান - 'সদৃশ জোড়' (Analogous Pair) 'সদৃশ জোড়' (Analogous Pair) বা প্রথম জোড়ার সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়াটি পূরণ : ১. জগদীশচন্দ্র বসু : ক্রেস্কোগ্রাফ :: উদ্ভিদের কাণ্ডের আলোকবৃত্তি : ❓ অক্সিন ২. তীব্র আলোক : ফটোন্যাস্টিক :: আলোক উৎসের গতিপথ : ❓ ফটোট্রপিক ৩. সিসমোন্যাস্টিক : লজ্জাবতী :: প্রকরণ চলন : ❓ বনচাঁড়াল ৪. অনুকূল জিওট্রপিক : উদ্ভিদের মূল :: প্রতিকূল জিওট্রপিক : ❓ সুন্দরী গাছের শ্বাসমূল ৫. সূর্যমুখী : ফটোন্যাস্টিক :: টিউলিপ : ❓ থার্মোন্যাস্টিক

পশ্চিমবঙ্গের প্রধান শিক্ষা বোর্ডসমূহ [খুব তাড়াতাড়ি আসছে]

WBBPE WBBSE WBCHSE WBMSC

হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের সামাজিক জীবনের বিস্তারিত পরিচয় (A detailed introduction to the social life of the inhabitants of the Harappan civilization)

🗿 হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের সামাজিক জীবনের বিস্তারিত পরিচয়           হরপ্পা সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের সামাজিক জীবন সম্পর্কে জানার প্রধান উৎস হলো প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত নগর পরিকল্পনা, সমাধিক্ষেত্র, মৃৎপাত্র, মূর্তি, অলংকার এবং অন্যান্য নিদর্শনসমূহ। এই নিদর্শনের ভিত্তিতে সমাজবিজ্ঞানীরা হরপ্পা সমাজের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি তুলে ধরেছেন:

হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনার বিশদ বিবরণ (Details of the city planning of the Harappan civilization)

🧱 হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনার বিশদ বিবরণ            হরপ্পা সভ্যতা (আনুমানিক ২৬০০ - ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যা সিন্ধু সভ্যতা নামেও পরিচিত, প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম উন্নত এবং সুপরিকল্পিত নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। হরপ্পা, মহেন-জো-দারো, লোথাল, কালিবঙ্গান এবং ধোলাভিরা-এর মতো স্থানগুলিতে খননকার্যের ফলে যে নগর পরিকল্পনা উন্মোচিত হয়েছে, তা এই সভ্যতার প্রকৌশল ও পৌর প্রশাসনের দক্ষতা প্রমাণ করে। এটি সমসাময়িক মিশরীয় বা মেসোপটেমীয় সভ্যতার নগর পরিকল্পনা থেকেও অনেক বেশি সুশৃঙ্খল ও আধুনিক ছিল।

মেহেরগড় সভ্যতার অবস্থান ও কালসীমা (Location and Chronology of the Mehrgarh Civilization)

মেহেরগড় সভ্যতার অবস্থান ও কালসীমা (Location and Chronology of the Mehrgarh Civilization)

বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য

বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এক মহাদেশের সারাংশ (Epitome of the World)                        ভারতবর্ষ শুধুমাত্র একটি দেশ নয়, এটি একটি উপ-মহাদেশের সমতুল্য। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, নৃতাত্ত্বিক ভিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক বিপুলতা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাসে যে "অন্তর্নিহিত মৌলিক ঐক্য" ( Fundamental Unity ) বারবার প্রকাশিত হয়েছে, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে যথার্থই " India offers unity in diversity " বা "বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য" বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের মিলনকেন্দ্র হওয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষকে "মহামানবের সাগরতীর" নামে অভিহিত করেছেন। ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যের স্বরূপ (The Nature of Diversity)                  ভারতের বৈচিত্র্যকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক বৈচিত্র্য: ভূ-প্রকৃতি:                     উত্...

ঐতিহাসিক তথ্য সরবরাহে সাহিত্যকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় দেশীয় সাহিত্যের অবদান বিস্তারিত আলোচনা করো।

ঐতিহাসিক তথ্য সরবরাহে সাহিত্যকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়? প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় দেশীয় সাহিত্যের অবদান বিস্তারিত আলোচনা করো।           ইতিহাস হলো মানব সভ্যতার অগ্রগতির প্রামাণ্য দলিল। কিন্তু প্রাচীন ভারতে হেরোডোটাস বা থুকিডিডিসের মতো কোনো প্রথাগত ঐতিহাসিক ছিলেন না। এ কারণেই একসময় আল-বিরুনি মন্তব্য করেছিলেন যে, "ভারতীয়দের কোনো ইতিহাস চেতনা নেই।" কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ সত্য নয়। প্রাচীন ভারতের মুনি-ঋষি এবং কবিরা সরাসরি ইতিহাস না লিখলেও, তাঁদের রচিত বিপুল সাহিত্যরাশির মধ্যে ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের মহামূল্যবান উপাদান। এই উপাদানগুলিকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিশ্লেষণ করলেই প্রাচীন ভারতের লুপ্ত ইতিহাস পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝো? ইতিহাসের উপাদানগুলির শ্রেণিবিভাগ করো। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় মুদ্রার গুরুত্ব বিস্তারিত আলোচনা করো।

ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝো? ইতিহাসের উপাদানগুলির শ্রেণিবিভাগ করো। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় মুদ্রার গুরুত্ব বিস্তারিত আলোচনা করো। ১. ইতিহাসের উপাদান             ইতিহাস হলো মানব সভ্যতার অগ্রগতির ধারাবাহিক বিবরণ। কিন্তু এই বিবরণ কল্পনাপ্রসূত নয়; এটি নির্ভর করে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণের ওপর। যে সমস্ত উৎস, সাক্ষ্য বা প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ঐতিহাসিকরা অতীত দিনের ঘটনাবলী পুনর্গঠন করেন, তাকেই 'ইতিহাসের উপাদান' (Sources of History) বলা হয়। উপাদান ছাড়া ইতিহাস রচনা করা অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার শামিল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বা আর. সি. মজুমদার সকলেই একমত যে, প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের ক্ষেত্রে উপাদানের গুরুত্ব অপরিসীম। ২. ইতিহাসের উপাদানের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Historical Sources)           ইতিহাসের উপাদানগুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়—  (ক) সাহিত্যিক উপাদান এবং  (খ) প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান।  তবে আধুনিক যুগে এর সাথে আরও কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে। নিচে এর বিস্তারিত দেওয়া হলো: ক) সাহিত্যিক উপাদান (Literary Sources):...

ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝো? প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান কী? প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লিপির গুরুত্ব আলোচনা করো।

ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝো? প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান কী? প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লিপির গুরুত্ব আলোচনা করো। ১. ইতিহাসের উপাদান (Definition of Historical Sources)           অতীতের কোনো ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য বা প্রমাণ যেসব উৎস থেকে পাওয়া যায়, তাদের ইতিহাসের উপাদান বলা হয়। ঐতিহাসিকরা যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এবং যুক্তিনিষ্ঠ বিচার-বিশ্লেষণ করে ইতিহাস রচনা করেন, সেই ভিত্তিগুলিই হলো উপাদান। ২. প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান (Archaeological Sources)           প্রাচীন মানুষের ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, ধ্বংসাবশেষ বা মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা যেসব নিদর্শনের বিজ্ঞানসম্মত খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত তথ্যাদি ইতিহাস রচনায় সাহায্য করে, তাদের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান বলা হয়। উদাহরণ: (ক) লিপি বা লেখ, (খ) মুদ্রা, (গ) স্থাপত্য ও ভাস্কর্য, (ঘ) ধ্বংসাবশেষ (যেমন—হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো)। ৩. প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লিপির গুরুত্ব           প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পুনর্গঠনে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলির মধ্যে লিপি বা লেখ (Inscriptions) হলো...

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ || Geological variations and divisions of India

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ           ভারতবর্ষ একটি বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় দেশ। এর ভূপ্রকৃতিতে পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি, উপকূল এবং দ্বীপপুঞ্জ—সবকিছুরই সহাবস্থান দেখা যায়। এই প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের তারতম্য অনুযায়ী ভারতবর্ষকে প্রধানত পাঁচটি বা ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই এই বিভাগগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতবর্ষের নামকরণ-সংক্রান্ত বিতর্ক

 ভারতবর্ষের নামকরণ-সংক্রান্ত বিতর্ক             আমাদের দেশ 'ভারতবর্ষ' নামে পরিচিত হলেও এই নামকরণের উৎস নিয়ে ঐতিহাসিক ও পণ্ডিতদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য বা বিতর্ক রয়েছে। প্রধানত পৌরাণিক কাহিনি, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ঐতিহাসিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ বিষয়ে একাধিক মত প্রচলিত আছে।

প্রাচীন ভারতের জনগোষ্ঠী বা জাতিতত্ত্ব

প্রাচীন ভারতের জনগোষ্ঠী বা জাতিতত্ত্ব           ভারতের বিশাল ভূখণ্ডে যুগে যুগে নানা জাতি ও উপজাতির আগমন ঘটেছে। এই মহামিলনের ফলেই গড়ে উঠেছে ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ (V.A. Smith) তাই যথার্থই ভারতকে 'নৃতত্ত্বের জাদুঘর' (Ethnological Museum) বলে অভিহিত করেছেন।

Gandhi–Irwin Pact||গান্ধি আরউইন চুক্তি।

গান্ধি আরউইন চুক্তি পটভূমিঃ  গান্ধিজির নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন রকম নির্মম পন্থা অবলম্বন করেছিল । যেমন সত্যাগ্রহীদের উপর গুলিবর্ষন, আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ দের গ্রেফতার প্রভৃতি।

নব্যবঙ্গ আন্দোলন দ্রুত ভেঙে পড়ল কেন ?

নব্যবঙ্গ আন্দোলনের সূচনা ও উদ্দেশ্য -              হিন্দু কলেজের অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর নেতৃত্বে নব্যবঙ্গীয়রা সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তবে এই কাজ করতে গিয়ে বেশকিছু বাড়াবাড়ি করে ফেলায় তাঁদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।  নব্যবঙ্গ আন্দোলন দ্রুত ভেঙে পড়ার কারণ—               সহজাত কিছু ত্রুটির জন্য নব্যবঙ্গ আন্দোলন দ্রুত স্তিমিত হয়ে পড়ে। এখানে কয়েকটি ত্রুটি তুলে ধরা হলো —

ভারতের ইতিহাসে বিন্ধ্যপর্বতের প্রভাব আলোচনা করো।

ভারতের ইতিহাসে বিন্ধ্যপর্বতের প্রভাব          ভারতের ইতিহাসে এবং ভূগোলে বিন্ধ্যপর্বত কেবল একটি পর্বতমালা নয়, বরং এটি উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যে একটি প্রাকৃতিক প্রাচীর বা বিভাজিকা হিসেবে কাজ করেছে। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রভাব অপরিসীম। নিচে ভারতের ইতিহাসে বিন্ধ্যপর্বতের প্রভাব আলোচনা করা হলো: ১. ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক বিভাজিকা বিন্ধ্যপর্বত ভারতকে প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে: আর্যাবর্ত (উত্তর ভারত):  বিন্ধ্যের উত্তরাংশ, যা সিন্ধু-গঙ্গা সমভূমি ও হিমালয় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। দাক্ষিণাত্য (দক্ষিণ ভারত):  বিন্ধ্যের দক্ষিণাংশ, যা উপদ্বীপীয় ভারত নামে পরিচিত।        প্রাচীন ও মধ্যযুগে এই পর্বতমালা উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যে বাধা সৃষ্টি করেছিল। উত্তর ভারতের কোনো সম্রাটের পক্ষে (যেমন—মৌর্য, গুপ্ত বা মোগল) বিন্ধ্য অতিক্রম করে দীর্ঘকাল দক্ষিণ ভারত শাসন করা কঠিন ছিল। একইভাবে, দক্ষিণ ভারতের রাজশক্তিগুলোর (যেমন—রাষ্ট্রকূট বা চোল) পক্ষেও উত্তরে দীর্ঘস্থায়ী আধিপত্য বিস্তার করা সহজ ছিল না। ২. সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষা বিন্ধ...

ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব আলোচনা করো।

ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব           ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুদূরপ্রসারী। সমুদ্র ভারতের কেবল ভৌগোলিক সীমানাই নির্ধারণ করেনি, বরং এর সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং বিশ্ব-সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। ভারতবর্ষের তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত। তাই, ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব থাকাটাই স্বাভাবিক ঘটনা।  (১) তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় তিন দিকের সীমান্ত বেশ সুরক্ষিত।  (২) আবার এই সমুদ্রপথ ধরেই আমাদের দেশের সঙ্গে চিন, রোম, মালয়, সুমাত্রা, জাভা, সিংহল ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।  (৩) এমনকি এই জলপথের মাধ্যমেই রাজনৈতিক প্রাধান্য স্থাপিত হয়েছে।

প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তনে নদনদীর প্রভাব আলোচনা করো। অথবা, ভারতীয় ইতিহাসে এবং জনজীবনে নদনদীর প্রভাব আলোচনা করো

  ভারতীয় ইতিহাসে এবং জনজীবনে নদনদীর প্রভাব            ভারত-একটি নদীমাতৃক দেশ। ভারতীয় সভ্যতার সূচনা ঘটে নদী-অববাহিকা অঞ্চল থেকে। ভারতীয় ইতিহাসের ওপরও সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, গোদাবরী, যমুনা প্রভৃতি নদনদীর যথেষ্ট প্রভাব বর্তমান। নদনদীগুলি ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিকে সিক্ত করেছে, পলি মৃত্তিকায় উর্বর করেছে, আর শস্য-শ্যামলা করে ভারতীয় কৃষি-অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। অন্য দিকে নদী-উপকূলবর্তী অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে জনপদ, নগর, বাণিজ্যকেন্দ্র বা তীর্থস্থান। (১) সভ্যতার বিকাশ:  সিন্ধুনদের অববাহিকাতেই জন্ম নেয় পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা। পঞ্চনদীর তীরে বিকাশ ঘটে বৈদিক সভ্যতার। পরবর্তীকালে গঙ্গা-অববাহিকা ধরে বৈদিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে। সিন্ধু সভ্যতা:  ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং অন্যতম উন্নত সভ্যতা সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলির তীরে গড়ে উঠেছিল। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর মতো শহরগুলি নদীর উর্বর পলিমাটি এবং জল সরবরাহকে কাজে লাগিয়ে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল। গঙ্গা সভ্যতা:   গঙ্গা নদী এবং তার অববাহিকা বরাবর পরবর্তীকালে বৈদিক সভ্যতা, মহাজনপদ এ...

ভারতবর্ষকে কেন 'হিমালয়ের দান' বলা হয়? অথবা, ভারতবর্ষের ওপর হিমালয়ের প্রভাব বর্ণনা করো।

ভারতবর্ষের ওপর হিমালয়ের প্রভাব:                           ঐতিহাসিক K.M. Panikkar তাঁর A Survey of Indian History গ্রন্থে বলেছেন, মিশরীয় সভ্যতাকে যদি 'নীলনদের দান' বলা যেতে পারে, তবে ভারতীয় সভ্যতাকে অবশ্যই 'হিমালয়ের দান' বলা যেতে পারে। ভূগোলবিদ টলেমি হিমালয়কে 'ইমায়োস' বলে উল্লেখ করে বলেন যে, হিমালয় ভারতের উত্তরে বিশাল উঁচু প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থেকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছে। যেমন-

সাঁওতাল বিদ্রোহ

  সাঁওতাল বিদ্রোহ           ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পূর্বে সংগঠিত প্রতিবাদী আন্দোলনগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সাঁওতাল উপজাতির অভ্যুত্থান (১৮৫৫ খ্রি.)। ড. কালিকিংকর দত্ত তাঁর “দি সাঁওতাল ইনসারেক্সন অব ১৮৫৫-৫৭' গ্রন্থে লেখেন—“বাংলা ও বিহারের ইতিহাসে এই পর্ব (সাঁওতাল বিদ্রোহ) নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটায়।” সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ— (১) রাজস্বের বোঝা—       কর্নওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করলে সাঁওতালদের বাসভূমি বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম, ছোটোনাগপুর প্রভৃতি অঞ্চল কোম্পানির রাজস্বের অধীনে আসে। ফলে এসব অঞ্চলে বসবাসকারী সাঁওতালরা রাজমহলের পার্বত্য অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে এবং রুক্ষ মাটিকে কৃষিকাজের উপযুক্ত করে জীবনধারণ করতে থাকে। এই অঞ্চল ‘দামিন-ই-কোহ’ (পাহাড়ের প্রান্তদেশ) নামে পরিচিত হয়। কিন্তু কিছুদিন পরে সরকার এই অঞ্চলকেও জমিদারি বন্দোবস্ত ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করে। ফলে সাঁওতালদের ওপর রাজস্বের বোঝা চাপে। এতে সাঁওতালরা ক্ষুব্ধ ও বিদ্ৰোহমুখী হয়৷

স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়

স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়                   স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিদ্যাসাগর মহাশয় বিশ্বাস করতেন যে, স্ত্রীজাতির উন্নতি ছাড়া দেশের ধর্ম, সমাজ ও জীবনধারার স্থায়ী বা প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। (১) বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা– সরকারি সাহায্য ছাড়াই নিজের উদ্যোগে তিনি ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি গ্রামাঞ্চলে বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের ওপর জোর দেন। নারীদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনের সঙ্গে মিলিতভাবে বেথুন স্কুল তৈরি করেন। (২) কলেজ প্রতিষ্ঠা– নারীদের উচ্চশিক্ষার আলোয় নিয়ে আসার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বেথুন কলেজ, মেট্রোপলিটান কলেজ (যার এখন নাম ‘বিদ্যাসাগর কলেজ’)। (৩) শিক্ষা সংগঠন প্রতিষ্ঠা– স্ত্রীশিক্ষার সুষ্ঠু প্রসারের লক্ষ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমান–সহ বিভিন্ন জেলায় ‘স্ত্রীশিক্ষা সম্মিলনী’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। মহাদেব গোবিন্দ রানাডে বিদ্যাসাগরের নারীকল্যাণকর ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা জান...

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - ‘ট্র্যাডিশনাল মডার্নাইজার’

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - ‘ট্র্যাডিশনাল মডার্নাইজার’             ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ পদে উন্নীত হন। এরপর তিনি সংস্কৃত কলেজে র  ইংরেজি পঠনপাঠন প্রবর্তন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় সকলের জন্য সংস্কৃত কলেজের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। তাঁর মূল বক্তব্য ছিল ‘যুক্তির বিকাশের জন্য পাশ্চাত্য-শিক্ষা’র প্রয়োজন। কিন্তু সেই শিক্ষার মাধ্যম হবে মাতৃভাষা। এজন্য তিনি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাঁর উদ্যোগে বিভিন্ন জেলায় বহু মডেল স্কুল চালু হয়। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল। কিন্তু পাশ্চাত্য-শিক্ষার প্রতি তাঁর কোনো অনীহা ছিল না। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সমন্বয়ের মাধ্যমে ভারতবাসীর সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সম্ভব। এই কারণে ড. অমলেশ ত্রিপাঠী বিদ্যাসাগর মহাশয়কে “Traditional Moderniser” বলে অভিহিত করেছেন।

সমাজসংস্কাররূপে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান।।

সমাজসংস্কাররূপে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান             হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে রাজা রামমোহন রায় ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭৭৪ খ্রি.) জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ভারত পথিক বলে সম্মান জানিয়েছেন। ভারতের ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের কাজে তাঁর নিরলস সাধনার কারণে তাঁকে আধুনিক ভারতের জনক বলে অভিহিত করা হয়। ড. বিপানচন্দ্রের মতে—“উনিশ শতকের প্রথম লগ্নে ভারতীয় আকাশে রামমোহন রায় উজ্জ্বলতম নক্ষত্ররূপে ভাস্বর ছিলেন”।