নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
মেকলের প্রতিবেদন (মেকলে মিনিটস্) ও ইনফিলট্রেশন থিয়োরি—
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে ভারতীয়দের জন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করার কথা বলা হয়। সেই টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য কোন শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে ভারতীয় ও ইউরোপীয়রা প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই সমস্যার সমাধান কল্পে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক তাঁর আইন সচিব মেকলেকে ‘পাবলিক ইনস্ট্রাকশন কমিটি’র সভাপতি পদে নিয়োগ করেন। মেকলে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের স্বপক্ষে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এই প্রতিবেদন মেকলে মিনিটস নামে খ্যাত।
(১) মেকলের প্রস্তাব—
মেকলে মিনিটসের বিভিন্ন প্রস্তাবে বলা হয়—
(i) প্রাচ্যের সভ্যতা দুর্নীতিগ্রস্ত, অনুন্নত ও নির্বুদ্ধিতাসম্পন্ন;
(ii) প্রাচ্য–শিক্ষা নিকৃষ্ট ও বৈজ্ঞানিক চেতনাহীন;
(iii) প্রাচ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটতে পারে একমাত্র পাশ্চাত্য–শিক্ষার হাত ধরেই।
(২) ইনফিলট্রেশন থিয়োরি—
মেকলে বলেন, ভারতীয়দের ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষা দিলে, তাদের মাধ্যমে আরও বহু ভারতীয় পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে। অর্থাৎ সীমিত সংখ্যক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তির মধ্য দিয়ে ইংরেজি শিক্ষা পরিস্রুত হয়ে জনগণের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে যাবে—এই নীতি ইনফিলট্রেশন থিয়োরি (Infiltration theory) নামে পরিচিত।
প্রভাব—
(১) মেকলে মিনিটস–এর প্রস্তাব মেনে কলকাতায় মেডিকেল কলেজ, মাদ্রাজে ইউনিভার্সিটি হাইস্কুল এবং বোম্বাইয়ে এলফিনস্টোন ইন্সটিটিউট গড়ে তোলা হয়।
(২) কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন পুনর্গঠিত করে কাউন্সিল অব এডুকেশন গঠন করা হয়।
পরিণতি—
মেকলের প্রতিবেদনের ফলেই ভারতে ইংরেজি শিক্ষার দ্বার খুলে যায়। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মার্চ এই প্রস্তাব সরকারের অনুমোদন পায়।
Comments
Post a Comment