নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
ইংরেজ দের ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ ভারতীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করে। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, ইতালি ও জার্মানির ঐক্য আন্দোলন, ফরাসি ও রুশ বিপ্লব ইত্যাদি ইউরোপীয় ঘটনাগুলি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পটভূমি রচনা করেছিল। তাই ক্রিস্টোফার লয়েড বলেছেন, “Nationalism is the religion of the modern world”.
১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকাস্থিত ইংরেজ উপনিবেশগুলি ইংল্যান্ডের অন্যায় শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ মাত্র তেরোটি উপনিবেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের আমেরিকান বলে দাবি করে এবং বিরাট শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় ভারতীয় জাতীয়তাবাদ অনুপ্রাণিত হয়। অধ্যাপক হেইজ এই প্রসঙ্গে বলেছেন—“আমেরিকার বিপ্লবের মাধ্যমে আমেরিকা এবং সমগ্র বিশ্বে গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়”।
(২) ইতালির আন্দোলন—
ম্যাৎসিনি, কাভুর ও গ্যারিবল্ডির নেতৃত্বে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ইতালি একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এতে ভারতীয়রা উদ্দীপিত হন।
(৩) ফরাসি বিপ্লব—
১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ বিপ্লব দ্বারা রাজতন্ত্রের উচ্ছেদের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। ফরাসি বিপ্লবের সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার ধারণা ভারতবাসীর জাতীয়তাবাদী চেতনাকে উজ্জীবিত করে।
(৪) রুশবিপ্লব (বলশেভিক বিপ্লব)—
রাশিয়ায় ১৯১৭ সালে বলশেভিক দলের প্রচেষ্টায় তিনশো বছরের রোমানভ রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। এই ঘটনায় অনুপ্রেরিত হয়ে ভারতীয়রাও বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারাও এদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটাতে পারবে।
এই ঘটনাগুলি ছাড়াও উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে গ্রিসের স্বাধীনতাযুদ্ধ, আয়ার্ল্যান্ডের আন্দোলন, জার্মানির ঐক্য আন্দোলন ব্রিটিশ–বিরোধী ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রেক্ষিত রচনা করেছিল। হ্যান্সফন বলেছেন, “ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় আন্দোলনের ধারা থেকে জাতীয়তাবাদের সূচনা ঘটে”। কার্ল মার্কসের মতে, “সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের অপরাধগুলিই ইতিহাসের পরোক্ষ অস্ত্ররূপে বিপ্লব ত্বরান্বিত করে”।
Comments
Post a Comment