ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন - সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( Evolution of Indian Civilization - Short Questions and Answers ) ১। প্রস্তরযুগ বলতে কী বোঝো? প্রস্তরযুগকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী? যে যুগে মানুষ পাথরের হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করত, সেই যুগকে প্রস্তরযুগ বলা হয়। প্রস্তরযুগকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- (১) প্রাচীন প্রস্তরযুগ, (২) মধ্য প্রস্তরযুগ, (৩) নব্য প্রস্তরযুগ। ২। প্রাচীন প্রস্তরযুগ, মধ্য প্রস্তরযুগ ও নব্য প্রস্তরযুগের একটা করে বৈশিষ্ট্য দাও। প্রাচীন প্রস্তরযুগ: প্রাচীন প্রস্তরযুগে মানুষ ছিল খাদ্য-সংগ্রাহক। বলা যেতে পারে-Age of Food-gathering Man. মধ্য প্রস্তরযুগ: মধ্য প্রস্তরযুগে মানুষ খাদ্য-উৎপাদকে পরিণত হয়। এসময়কে বলা হয়-Age of Food-producing Man. নব্য প্রস্তরযুগ: এসময় মানুষ নগর সভ্যতার সাথে পরিচিত হয়। ধাতুর যুগ শুরু হয়। ঐতিহাসিক গর্ডন চাইল্ড এসময়কে বলেছেন-Age of Urban Culture.
উত্তর ভারতের নদনদী এবং দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলির মধ্যে পার্থক্য
| S. No | উত্তর ভারতের নদনদী | দক্ষিণ ভারতের নদনদী |
|---|---|---|
| 1 | উত্তর ভারতের অধিকাংশ নদীগুলি সুউচ্চ হিমালয় পর্বতের বিভিন্ন হিমবাহ থেকে সৃষ্ট। | দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদীগুলি ক্ষয়জাত পশ্চিমঘাট পর্বত ও দাক্ষিণাত্য মালভূমি থেকে উৎপন্ন। |
| 2 | উত্তর ভারতের নদনদীগুলি প্রধানত হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে বলে উত্তর ভারতের অধিকাংশ নদী বরফগলা জলে পুষ্ট। | দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলি কোনো হিমবাহ থেকে উৎপন্ন না হওয়ায় তারা বৃষ্টির জল বা ঝরণার জলে পুষ্ট। |
| 3 | উত্তর ভারতের নদীগুলি বরফগলা জলে পুষ্ট হওয়ায় সারাবছর নদীতে জল থাকে। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট বলে শুষ্ক ঋতুতে বেশির ভাগ সময় নদীতে জল থাকে না। |
| 4 | উত্তর ভারতের নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে বলে জলসেচের সুবিধা পাওয়া যায়। | শুষ্ক ঋতুতে নদীগুলিতে জলের পরিমাণ খুব কমে যাওয়ায় সারা বছর জলসেচের সুবিধা পাওয়া যায় না। |
| 5 | উত্তর ভারতের নদীগুলির দৈর্ঘ্য বড়ো। যেমন—সিন্ধু ও গঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে—৩০৪০ কিমি ও ২৫১০ কিমি। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির দৈর্ঘ্য তুলনামূলকভাবে কম। যেমন—গোদাবরী ও নর্মদা নদীর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে—১৪৬৫ কিমি ও ১৩১২ কিমি। |
| 6 | হিমালয় অঞ্চলে বর্ষার প্রাবল্যের জন্যে এই সমস্ত নদনদী বরফগলা জল ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টির জল পায়, তাই বর্ষাকালে অনেক সময় নদীগুলিতে বন্যা দেখা দেয়। | দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলির ক্ষেত্রে বন্যার প্রকোপ সীমিত। |
| 7 | উত্তর ভারতের নদীগুলির জলধারণ ক্ষেত্র ও নদী অববাহিকা অঞ্চল অনেক বৃহৎ। যেমন—গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মোট নদী অববাহিকা অঞ্চলের পরিমাণ হল ১১.৭৮ ও ৫.৮ লক্ষ বর্গকিমি। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির জলধারণ ক্ষেত্র ও অববাহিকা অঞ্চল অনেক ছোটো। যেমন—গোদাবরী নদী অববাহিকার পরিমাণ হল ৩.১২ লক্ষ বর্গকিমি। |
| 8 | উত্তর ভারতের নদীগুলির উৎস ও মোহানার মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য বিশাল। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির উৎস ও মোহানার মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য অপেক্ষাকৃত কম। |
| 9 | উত্তর ভারতের নদীগুলি বয়সে নবীন ও নদী উপত্যকায় জলের পরিমাণ বেশি থাকায় নদীগুলিকে প্রায়ই নদীখাত পরিবর্তন করতে দেখা যায়। | নদীগুলি বয়সে প্রাচীন ও প্রাচীন কেলাসিত শিলা দ্বারা গঠিত ভূভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বহুকাল নদীখাতের পরিবর্তন ঘটেনি। |
| 10 | মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে উত্তর ভারতের নদীগুলি নাব্য ৷ | দক্ষিণ ভারতে নদীগুলিতে সারা বছর জল না থাকার জন্য এবং মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নাব্য নয়। |
| 11 | উত্তর ভারতের নদনদীগুলির বেশিরভাগ অংশ সমতলভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীখাত চওড়া ও গভীর অথচ উঁচুনীচু নয়। এ কারণে উত্তর ভারতের নাব্য নদনদীগুলি সেচ ও বাণিজ্যের উপযুক্ত। | দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলো প্রায়ই উঁচুনীচু মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এরা খরস্রোতা এবং নদীখাত অনাব্য বলে বাণিজ্যের অনুপযুক্ত। |
| 12 | উত্তর ভারতের নদীগুলির মোহানায় বিশাল বদ্বীপ গড়ে উঠেছে। যেমন—গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির মোহানায় বদ্বীপের আয়তন অপেক্ষাকৃত কম। |
| 13 | উত্তর ভারতের নদনদীগুলি অনেক ক্ষেত্রে পর্বতকে আড়াআড়িভাবে অতিক্রম করে নিম্নভূমিতে অবতরণ করেছে, তাই এদের উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। | বহুদিনের ক্ষয়কার্যের ফলে দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলি মালভূমির উপরস্থ উৎস ও মোহানার মধ্যেকার ঢালকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলেছে। |
| 14 | উত্তর ভারতের নদনদীর তীরে ভারতের অধিকাংশ বিখ্যাত নগরগুলো অবস্থিত। | এই নদনদীগুলির তীরে বেশি নগর গড়ে ওঠেনি। |
| 15 | পার্বত্য প্রবাহ ছাড়া মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা অসুবিধাজনক। | অধিকাংশ নদীই মালভূমির ওপর দিয়ে বেশির ভাগ পথ অতিক্রম করায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উপযোগী। |
| 16 | উত্তর ভারতের নদীগুলি বয়সে নবীন হওয়ায় উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের পরিমাণ বেশি, ফলে মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে সঞ্চয়ের পরিমাণ বেশি। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি বয়সে প্রাচীন বলে উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়ের পরিমাণ কম, ফলে মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে সঞ্চয়ের পরিমাণও কম। |
| 17 | উত্তর ভারতের নদনদীগুলির উচ্চ, মধ্য, নিম্নগতি স্পষ্ট দেখা যায়। তাই এরা আদর্শ নদীর উদাহরণ। | দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলির এই তিন পর্যায় স্পষ্ট দেখা যায় না, তাই এদের আদর্শ নদী বলা যায় না। |
| 18 | উত্তর ভারতের নদীগুলির উপনদী ও শাখানদীর সংখ্যা বেশি। | দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির উপনদী ও শাখানদীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। |
| 19 | উত্তর ভারতের নদী উপত্যকাগুলিতে মৃত্তিকার গভীরতা বেশি। | দক্ষিণ ভারতে নদী উপত্যকাগুলিতে মৃত্তিকার গভীরতা কম। |
| 20 | উত্তর ভারতের নদী অববাহিকায় সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি বৈচিত্র্যময় ও সুস্পষ্ট। | দক্ষিণ ভারতের নদী অববাহিকায় সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি সুস্পষ্ট নয়। সঙ্গে সঙ্গে বৈচিত্র্যেরও অভাব রয়েছে। |
Comments
Post a Comment