নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের পরিচয়
শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব (১৮৩৬–৮৬ খ্রি.) ছিলেন আধুনিক ভারতের, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের এক অন্যতম আধ্যাত্মিক পুরুষ। রানি রাসমনি প্রতিষ্ঠিত কলকাতার দক্ষিণেশ্বরের দেবী ভবতারিণীর পূজারি এই ব্রাহ্মণকেই অধিকাংশ হিন্দু বিষ্ণুর এক অবতার হিসেবেই মানে।
ধর্মসমন্বয়ের আদর্শ প্রচার—
বিভিন্ন ধর্ম যখন মত ও পথের দ্বন্দ্বে লিপ্ত, তখনই শ্রীরামকৃষ্ণ ধর্মসমন্বয়ের বাণী প্রচার করেন।
🌼যত মত, তত পথ—
তাঁর এই বাণী মানবজাতিকে নতুন পথের সন্ধান দেয়। তিনি বলেন যে, সমস্ত ধর্মের একটাই লক্ষ্য এবং তা হল ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা। তাঁর মতে, সব ধর্মই সত্য। তিনি বলতেন, ঈশ্বর এক—কেবল নামে আলাদা।
🌼শিবজ্ঞানে জীবসেবা—
শ্রীরামকৃষ্ণ শিবজ্ঞানে জীবসেবার পরামর্শ দেন। তিনি বলতেন “জীব হল ঈশ্বরের সৃষ্টি। জীবের মধ্যেই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান। তাই জীবসেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়”।
🌼ধর্মের সহজবোধ্য ব্যাখ্যা—
সহজসরল দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি ধর্মশাস্ত্রের জটিল তত্ত্ব বুঝিয়ে দিতেন। তিনি বলতেন জল এক, কিন্তু কেউ তাকে বলে ওয়াটার, কেউ বলে জল, আবার কেউ বলে পানি। অর্থাৎ নাম আলাদা, কিন্তু বস্তুটি এক।
গান্ধিজি শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মূল্যায়নে বলেন—তাঁর জীবন আমাদের ভগবানকে সামনাসামনি প্রত্যক্ষ করতে সাহায্য করে। শ্রীরামকৃষ্ণ যে কত বড়ো লোকশিক্ষক ছিলেন তা বোঝা যায় তাঁর প্রিয়তম শিষ্য নরেনের(স্বামী বিবেকানন্দ) উক্তি থেকে—“আমি আমার গুরুদেবের ভাষাকে অনুসরণ করি”।
সবশেষে বলা যায় যে, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে হিন্দুধর্ম যখন অনেকদিক থেকেই কোণঠাসা এবং বিভিন্ন সংস্কারে আচ্ছন্ন তখন শ্রীরামকৃষ্ণের হাত ধরে হিন্দুধর্মের পুনর্জাগরণ ঘটে এবং শিকাগো ধর্মসম্মেলনে তাঁর শিষ্য বিবেকানন্দের মাধ্যমে তা বিশ্বজয় করে।
Comments
Post a Comment