নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
স্বামী বিবেকানন্দের নানা প্রবন্ধ ও বক্তৃতা তরুণ দেশপ্রেমিকদের মধ্যে উদ্দীপনার সঞ্চার করে। অধঃপতিত ভারতবাসীকে তিনি আত্মবলে বলীয়ান হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। স্বামীজী পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের জন্য যুবসমাজকেই এগিয়ে আসতে বলেছিলেন।
যুবশক্তির ওপর স্বামীজির প্রভাব—
(১) স্বদেশসেবায়—
হতাশাগ্রস্ত যুবসমাজকে তিনি দেশের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। বিবেকানন্দ উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের যুবশক্তি জাগ্রত না–হলে দেশ ও সমাজের মঙ্গলসাধন সম্ভব নয়। তাই তিনি দৃপ্তকণ্ঠে ডাক দেন, “ওঠো, জাগো–লক্ষ্যে পৌঁছোবার আগে থেমো না”।
(২) পাশ্চাত্যের অনুশীলনে—
স্বামীজি সকলকে পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, দৃঢ়তা, সাহস, আত্মবিশ্বাস ও কঠোর মনোবল রপ্ত করার পরামর্শ দেন।
(৩) নব ভারত গঠনে—
স্বামীজি তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এক নতুন ভারত গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তরুণেরা আগুন ছড়িয়ে দেবে হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত আর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত”।
(৪) কুসংস্কার ও অনাচারের বিরোধিতায়—
জাতিভেদ, ধর্মীয় কুসংস্কার, সামাজিক অনাচার, অশিক্ষা, অসাম্য ইত্যাদির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি তরুণ সমাজকে উদ্দীপিত করেন।
(৫) রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠায়—
স্বামীজি মানুষ গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন (১৮৯৭ খ্রি.)। যার দ্বারা তিনি যুবসমাজকে ভবিষ্যতের মানবসমাজের সেবা করার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। স্বামীজি মনে করতেন একশো জন খাঁটি আদর্শবান যুবক একজোট হলে ভারতবর্ষ মুক্তি পাবেই।
স্বামীজির অনুপ্রেরণার জন্যই পরবর্তী সময়ে ভারতের বৈপ্লবিক আন্দোলনে যুবকরা দলে দলে যোগ দেয়। গোপাল হালদার লিখেছেন, “বাংলাদেশে যাকে অগ্নিযুগ বলে, তাঁর অগ্নিমন্ত্র কেউ যদি জাগিয়ে থাকেন তবে সে বিবেকানন্দ”।
Comments
Post a Comment