প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা
গঠন প্রক্রিয়া (পাত সঞ্চালন তত্ত্ব অনুসারে)
এই আগ্নেয় মেখলা সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ হল পাতের সীমান্ত বরাবর ক্রমাগত সংঘর্ষ ও অধোগমন:
পাত সীমানা: এই মেখলাটি প্রধানত প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতটির সঙ্গে এর চারপাশের বেশ কয়েকটি মহাদেশীয় পাতের (যেমন: উত্তর আমেরিকা পাত, দক্ষিণ আমেরিকা পাত, ইউরেশীয় পাত, ইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাত) অভিসারী পাত সীমান্ত বরাবর গঠিত হয়েছে।
অধোগমন (Subduction): অপেক্ষাকৃত ভারী ও ঘন প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতটি তার চারপাশের হালকা মহাদেশীয় পাতগুলির নিচে অধোগমন করে।
অগ্ন্যুৎপাত: এই অধোগমনের ফলে সৃষ্ট প্রবল ঘর্ষণ ও তাপে নিমজ্জিত পাতের শিলাস্তর গলে ম্যাগমা সৃষ্টি হয়। এই ম্যাগমা ফাটল বা দুর্বল অংশ (চ্যুতি) বরাবর ভূপৃষ্ঠের উপরে উঠে এসে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায় এবং আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি করে।
বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব
আগ্নেয়গিরির সংখ্যা: পৃথিবীতে বর্তমানে যতগুলি সক্রিয় ও সুপ্ত আগ্নেয়গিরি আছে, তার প্রায় ৭০% থেকে ৭৫% এই বলয় বরাবর অবস্থিত। এই কারণেই এই অঞ্চলটিকে 'প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগুনের বলয়' বলা হয়।
ভূমিকম্প প্রবণতা: আগ্নেয় মেখলাটি একইসঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। এই পাত সীমান্ত বরাবর প্রতিনিয়ত পাতগুলির সংঘর্ষ এবং সঞ্চালনের ফলেই এখানে প্রায়শই প্রবল ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
এই মেখলার বিস্তার প্রায় ৪০,০০০ কিলোমিটারের বেশি এবং এর মধ্যে মাউন্ট ফুজি (জাপান), মাউন্ট সেন্ট হেলেন্স (আমেরিকা) সহ অসংখ্য বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
Comments
Post a Comment