Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

জানুন সেই ৬ জন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে যারা বারবার মনোনীত হওয়া সত্বেও নোবেল পুরস্কার পাননি

                    আজকের এই পোস্টটিতে আমরা এমন ৬ জন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে জেনে নেব যাঁরা একটুর জন্য নোবেল পুরস্কার পাননি।
কিন্তু তাদের গবেষণা গুলিকে এগিয়ে নিয়ে অনেক বিজ্ঞানী এই চূড়ান্ত সম্মান অর্জন করেছেন।

চলুন দেখে নিই সেই ৬ জন বিখ্যাত বিজ্ঞানীর অবদান।



(১) মেঘনাদ সাহা::



                          মেঘনাদ সাহা ছিলেন একজন অগ্রণী মহাকাশ বিজ্ঞানী। তিনি বিশ্বকে তাপীয় আয়নিকরন সমীকরণের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, যা সাহা সমীকরণ নামে অধিক পরিচিত। এই সমীকরণটি একটি উপাদানের আয়নিক অবস্থার সাথে চাপের ও তাপমাত্রার সম্পর্ক প্রদর্শন করে।
                          এই সমীকরণটি তার বৈজ্ঞানিক উত্তরসূরিদের নানাভাবে সাহায্য করেছিল।
                          মেঘনাদ সাহা ১৮৯২ সালে অবিভক্ত বাংলায় জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তিনি যথেষ্ট কম সুবিধাভুক্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, তবুও কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় এর মাধ্যমে সব বাধা কাটিয়ে উঠে অন্যতম শীর্স্থানীয় বৈজ্ঞানিক পুরুষ হিসাবে আবির্ভূত হন।
                          কলকাতা ইউনিভার্সিটি কলেজ ও সায়েন্সে অধ্যাপক থাকাকালীন তিনি কয়েকটি অসাধারণ রিসার্চ পেপার লেখেন, যা কলেজের বাজেটের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকাশ করা যায় নি।
                          ১৯১৯ সালে তার "Harvard Classification of Stellar Spectra" প্রবন্ধের জন্য তিনি প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি অর্জন করেন। এই বৃত্তির টাকায় তিনি দুই বছরের জন্য ইউরোপ যান এবং শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের সাথে কাজ করেন।
                          ১৯২০ সালে ইউরোপে সাহা তার সমীকরণটি আবিষ্কার করেছিলেন।
                          ভারতে ফিরে আসার পর সাহা দেশের প্রথম সাইক্লোট্রন তৈরি করেছিলেন।পাশাপাশি শুরু করেছিলেন "ইন্ডিয়ান সাইন্স নিউজ অ্যাসোসিয়েশন (১৯৩৫)" এবং "ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লেয়ার ফিজিক্স (১৯৫০)"
                          এই মহান বিজ্ঞানী সাতবার নোবেল পুরস্কার এর জন্য মনোনীত হওয়া সত্বেও দুর্ভাগ্যবশত এই চূড়ান্ত সম্মান টি পাননি।



(২) হোমি জাহাঙ্গির ভাবা::



                             তিনি ভারতের পারমাণবিক কার্যক্রমের জনক হিসাবে পরিচিত। হোমি জাহাঙ্গির ভাবা একজন ভারতীয় পারমাণবিক পদার্থ বিজ্ঞানী যিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে পরপর ৫ বার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।
                             কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তিনিও নোবেল পুরস্কার পাননি।
                             বোম্বের এক প্রভাবশালী ব্যাবসায়িক পরিবারে ১৯০৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
                             এলফিনস্টন কলেজে পড়াশোনা শেষ করার পর ১৯২৭ সালে রয়াল ইনস্টিটিউট অফ সাইন্সে যোগ দেন।
                             পরে তিনি পরিবারের ইচ্ছাতেই ক্যামব্রিজের কায়ুস কলেজে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন।
                             যাইহোক ক্যামব্রিজে তার আগ্রহ পরে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ওপর।
                             তার প্রথম রিসার্চ পেপার টি প্রকাশিত হয় ১৯৩৩ সালে, যেটি হলো "The Absorption of Cosmic Radiations"
                             তিনি Niles Bohr এর সাথেও কাজ করেছিলেন। ১৯৩৫ সালে তিনি ইলেকট্রন - পজিট্রন বিচ্ছুরণের ক্রসসেকশন গণনা করেছিলেন। তার সম্মানার্থে এই ঘটনাটির নামকরণ করা হয় ভাবা স্ক্যাটারিং।
                             ১৯৩৯ সালে তিনি ভারতের ফেরেন এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সাইন্স (IISC) এ স্যার সি ভি রামন এর সাথে কাজ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার আর ক্যামব্রিজে যাওয়া হয় নি।
                             ১৯৫৫ সালে তিনি সুইজারল্যান্ড এর জেনেভায় শান্তিমূলকভাবে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার সম্পর্কিত জাতিসংঘের সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন।


(৩) সত্যেন্দ্রনাথ বসু::



                               কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একজন অগ্রণী বিজ্ঞানী হলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। তিনি বোস - আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের উদ্ভাবক। কণা - পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে তাঁর নাম চিরস্মরণীয়।
                             
                           তার নামে নামকরণ করা হয়েছে সাব অ্যাটমিক বোসন কণার।
                           পদার্থবিদ্যা তে অসাধারণ কৃতিত্ব থাকা সত্বেও সত্যেন্দ্রনাথ বসু পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পাননি।
                           ১৮৯৪ সালের ১লা জানুয়ারি কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
                           প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে মিশ্রগনিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পরে তিনি কোয়ান্টম পদার্থবিদ্যার ওপর গবেষণা চালান।
                           ১৯২৪ সালের জুন মাসে, বোস নিজে আইনস্টাইনকে একটি চিঠিতে তার "গ্রাউন্ড ব্রেকিং ডেরিভেশন" সম্পর্কে লেখেন। বোসের এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে যান আইনস্টাইন এবং বোসের এই তত্ত্বটি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করেন। আইনস্টাইন বলেন "বোসের এই তত্ত্বটি আমার কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ তত্ব ও এটি আদর্শ গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্বের ব্যাখ্যা দেয়"।
                           ১৯৫৬, ১৯৫৯ ও ১৯৬২ সালগুলিতে তিনি নোবেল পুরস্কার এর জন্য মনোনীত হন কিন্তু দুর্ভগ্যজনকভাবে তিনি এই পুরস্কারটি পাননি।


(৪) উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী::



                             মারাত্মক কালাজ্বরের কবল থেকে রক্ষা করতে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী আবিষ্কার করেন জীবনরক্ষাকারী ঔষধ ইউরিয়া স্টিবামিন
                             তিনি ১৮৭৩ সালে বিহারের জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন বিখ্যাত ডাক্তার।
                             কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলের অনুশীলনকারী চিকিৎসক হিসাবে কাজ করার সময় পাশাপাশি কালা জ্বরের প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেছেন।
                             অবশেষে ১৯২২ সালে প্রতিষেধক আবিষ্কার করার পর সাফল্যের স্বাদ গ্রহণ করেন।
                             তিনি তার এই মহান আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার না পেলেও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে তার জীবনকালীন অবদানের জন্য ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ' নাইটহুড' উপাধি দেন।
                     

(৫) গোপালসমুদ্রম নারায়ণন রামচন্দ্রন::



                                 জৈব রসায়নের যে কোনো শিক্ষার্থীর কাছে রামচন্দ্রন প্লট একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। এই রামচন্দ্রন প্লট যিনি তৈরি করেন তিনি হলেন এই গোপালসমুদ্রম নারায়ণন রামচন্দ্রন।
                                 তিনি IISC তে স্যার সি ভি রামন এর তত্ত্বাবধানে গবেষণা করতেন।
                                 কেরালার এরনাকুলামে ১৯২২ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফস্ কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে B.Sc অনার্স পড়েন ও পরে IISC তে M.Sc এবং Phd করেন।
                                 তিনি রয়েল সোসাইটির ফেলো হিসাবে স্বীকৃতি পান।


(৬) তিরুভেঙ্গদম রাজেন্দ্র শেশাদি::



                             তিনি ছিলেন একজন পদ্মভূষণ ভারতীয় রসায়নবিদ। ১৯৬৬ সালে জৈব রসায়নে অসাধারণ গবেষণার জন্য নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
                             তিনি ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন, তামিলনাড়ুর কুলিথলাই গ্রামে, সাতজনের এক পরিবারে। তিনি মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
                             এই মহান বিজ্ঞানীও নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।



Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

জাতীয়তাবাদের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান কী ?

          বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–৯৪ খ্রি.) ছিলেন ঊনবিংশ শতকের অগ্রণী ঔপন্যাসিক ও প্রবন্ধকার। বঙ্কিমচন্দ্রের অধিকাংশ উপন্যাসের বিষয়বস্তু ছিল স্বদেশ ও দেশপ্রেম। বঙ্কিমচন্দ্রের সৃষ্টি ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। তাঁর ‘বন্দেমাতরম্’–মন্ত্র ছিল বিপ্লবীদের বীজমন্ত্র। অরবিন্দ ঘোষ তাই বঙ্কিমকে ‘জাতীয়তাবোধের ঋত্বিক’ বলেছেন।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন প্রবর্তন সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর–জেনারেল লর্ড লিটন দেশীয় পত্রপত্রিকার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (Vernacular Press Act, 1878) জারি করেন। পটভূমি ঊনবিংশ শতকে দেশীয় সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, দেশীয় সম্পদের বহির্গমন, দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ এ.আর.দেশাইয়ের মতে, “ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে সংবাদপত্র হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম”।

ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— (১) বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কোমল পাললিক শিলায় ঢেউ-এর মতো ভাঁজ পড়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়। (২) প্রধানত সমুদ্রগর্ভ থেকে সৃষ্টি হয় বলে ভঙ্গিল পর্বতে জীবাশ্ম দেখা যায়। (৩) ভঙ্গিল পর্বতগুলি সাধারণত পাললিক শিলায় গঠিত হলেও অনেক সময় ভঙ্গিল পর্বতে আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত শিলার সহাবস্থান চোখে পড়ে (কারণ—ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় শিলাস্তরে ফাটল সৃষ্টি হলে, সেই ফাটল দিয়ে ভূগর্ভের ম্যাগমা লাভারূপে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে যা ধীরে ধীরে জমাট বেঁধে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এর পর কালক্রমে প্রচণ্ড চাপ ও তাপের ফলে আগ্নেয় শিলা ও পাললিক শিলা রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়)

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

  স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য Sl. No. স্থলবায়ু সমুদ্রবায়ু 1 স্থলবায়ু মূলত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবায়ু মূলত উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির হয়। 2 স্থলবায়ু প্রধানত রাত্রিবেলায় প্রবাহিত হয়। সমুদ্রবায়ু প্রধানত দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়। 3 সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুর প্রবাহ শুরু হয় ও রাত্রির শেষদিকে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়। সূর্যোদয়ের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুরপ্রবাহ শুরু হয় ও অপরাহ্নে বায়ুপ্রবাহে বেগ বৃদ্ধি পায়। 4 স্থলবায়ু উচ্চচাযুক্ত স্থলভাগ থেকে নিম্নচাপযুক্ত জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে স্থলবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমুদ্রবায়ু উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে নিম্নচাপযুক্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে সমুদ্রবায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। 5 স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবার দরুন বেগ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ প্রবাহিত হ...

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিরস্মরণীয় কিছু উক্তি

          বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি"

পর্বতবেষ্টিত মালভূমি

পর্বতবেষ্টিত মালভূমি      ভূমিকম্পের ফলে ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি সৃষ্টি হওয়ার সময় দুটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী অপেক্ষাকৃত নীচু স্থানগুলি কিছুটা উঁচু ও খাড়া ঢালযুক্ত হয়ে মালভূমির আকৃতি নেয় । চারদিকে পর্বতবেষ্টিত হওয়ায় এই সব মালভূমিগুলিকে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি বলে।

মানব জীবনের ওপর মালভূমির প্রভাব আলোচনা করো

মানুষের জীবনধারণ ও জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রে মালভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন—  (১) মালভূমি সাধারণত স্বাভাবিক উদ্ভিদে সমৃদ্ধ হয়। যেমন—ছোটোনাগপুর মালভূমিতে প্রচুর শাল ও সেগুন গাছ জন্মে থাকে। (২) কোনোকোনো মালভূমির কঠিন শিলার ওপর উর্বর মৃত্তিকার আবরণ থাকলে সেই অঞ্চল কৃষিকার্যে উন্নতি লাভ করে। যেমন—ভারতের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল। (৩) মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর এবং ভূভাগ কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত বলে চাষ-আবাদ, রাস্তাঘাট ও শিল্পস্থাপনে প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে।