ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুদূরপ্রসারী। সমুদ্র ভারতের কেবল ভৌগোলিক সীমানাই নির্ধারণ করেনি, বরং এর সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং বিশ্ব-সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। ভারতবর্ষের তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত। তাই, ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব থাকাটাই স্বাভাবিক ঘটনা। (১) তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় তিন দিকের সীমান্ত বেশ সুরক্ষিত। (২) আবার এই সমুদ্রপথ ধরেই আমাদের দেশের সঙ্গে চিন, রোম, মালয়, সুমাত্রা, জাভা, সিংহল ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। (৩) এমনকি এই জলপথের মাধ্যমেই রাজনৈতিক প্রাধান্য স্থাপিত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া
স্ত্রী অ্যানােফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রােগাক্রান্ত মানুষের রক্ত টেনে নেওয়ার সময় ম্যালেরিয়ার জীবাণুও টেনে নেয় । ঐ জীবাণু মশার শরীরে গিয়ে মরে না । পরবর্তী ১০ থেকে ২০ দিনে রােগজীবাণুর নানা পরিবর্তন হয় । তাতে তাদের রােগ বিস্তারের ক্ষমতা যায় না । এরপর ঐ মশা কোন সুস্থ মানুষকে কামড়ালে পরবর্তিত জীবাণুগুলির মধ্যে কিছু সংখ্যক জীবাণু সুস্থ মানুষের শরীরে ঢােকে এবং তাকে অসুস্থ করে তােলে ।
বৰ্ত্তমান শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি লােক ম্যালেরিয়াতে ভুগেছে । মারাও গেছে অসংখ্য লােক । দক্ষিণ আমেরিকা , আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই রােগের ব্যাপক আক্রমণ ছিল ।
১৮৯৭ সালে কলকাতায় বসে পিজি হাসপাতালের বায়ােকেমিষ্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড . রােনাল্ড রস আবিষ্কার করেন যে ম্যালেরিয়া রােগ এক প্রকার জীবাণু থেকে হয় এবং অ্যানােফিলিস মশা এক ব্যক্তি থেকে ঐ জীবাণু বহন করে অন্য ব্যক্তিতে সংক্রামিত করে । তার আগে লােকের ধারণা ছিল ম্যালেরিয়া ( mal = bad , aria = air ) এক প্রকার দূষিত বাতাস থেকে হওয়া অসুখ । এই আবিষ্কারের জন্য ড. রস নােবেল পুরস্কার পান ।
ডিডিটি - র আবিষ্কার এবং স্বাধীনােত্তর কালে এর ব্যাপক ব্যবহার ম্যালেরিয়াকে প্রায় বিতাড়িত করেছিল । কিন্তু মশা ডিডিটি - র বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলায় ১৯৭০ সালের পর ম্যালেরিয়া আবার ফিরে এসেছে । ম্যালেরিয়া ও মশক নিবারণের ব্যাপক প্রয়াস না নিতে পারলে দুঃস্বপ্নের দিনগুলাে বােধহয় আবার ফিরে আসবে ।
Comments
Post a Comment