নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
স্বদেশপ্রেমমূলক জাতীয়তাবাদী সাহিত্যের বিবরণ
উনিশ শতকের ভারতে বেশ কিছু প্রতিভাবান ও সৃজনশীল লেখক আবির্ভূত হন। এইসব সাহিত্যিক তাঁদের সাহিত্যে নতুন যুগের আশা–আকাঙ্ক্ষা, ধ্যানধারণা, বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটান। এর মধ্যে স্বদেশপ্রেমমূলক জাতীয়তাবাদী সাহিত্য ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
স্বদেশপ্রেমমূলক জাতীয়তাবাদী সাহিত্য:
বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য—
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বদেশপ্রেমমূলক সাহিত্যভাণ্ডারে ছিল উপন্যাস, প্রবন্ধ, কাব্য–কবিতা, সংগীত ইত্যাদির সমাহার।
(১) বাংলা—
বাংলা ভাষায় স্বদেশপ্রেমমূলক সাহিত্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি ছিল—
(i) কাব্যের ক্ষেত্রে—
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শুর - সুন্দরী’, ‘কাঞ্চি - কাবেরি’, ‘কর্মদেবী’; হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভারত বিলাপ’, ‘ভারতভিক্ষা’; নবীনচন্দ্র সেনের ‘পলাশির যুদ্ধ’; মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘তিলোত্তমা’; বিহারীলাল চক্রবর্তীর ‘রত্নাসুন্দরী’ ইত্যাদি।
(ii) নাট্যসাহিত্যের ক্ষেত্রে—
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কৃষ্ণকুমারী’; দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’; মীর মশাররফ হোসেনের ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’; উপেন্দ্রনাথ দাসের ‘শরৎ–সরোজিনী’ ইত্যাদি।
(iii) উপন্যাসের ক্ষেত্রে—
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’, ‘সীতারাম’; রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’; শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ ইত্যাদি।
(২) অন্যান্য—
অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে অসমিয়া সাহিত্যে হেমচন্দ্র বড়ুয়ার বিভিন্ন ছোটোগল্প, ওড়িয়া সাহিত্যে ফকির মোহনের ‘ছা–মান–আত–গুন্থ’, মারাঠি সাহিত্যে এন.সি.কেলকার, তেলুগু সাহিত্যে বীরসালিঙ্গম পন্ডালু প্রমুখের লেখাগুলি দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটিয়েছিল।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সাহিত্যগুলি যেভাবে দেশপ্রেমের মন্ত্র ছড়িয়েছিল এবং ভারতবাসীদের জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিল তাতে ব্রিটিশ ভয় পেয়েছিল। তাই তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাহিত্য সৃষ্টির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে ‘পথের দাবী’–কে ইংরেজ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। শুধু তাই নয়, দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলির ওপর ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট জারি করেছিল। কিন্তু তাতেও দেশাত্মবোধক সাহিত্যসৃষ্টি স্তব্ধ করে দেওয়া যায়নি।
🔗🔗🔗
Read More ::
Comments
Post a Comment