Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ || Geological variations and divisions of India

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ           ভারতবর্ষ একটি বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় দেশ। এর ভূপ্রকৃতিতে পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি, উপকূল এবং দ্বীপপুঞ্জ—সবকিছুরই সহাবস্থান দেখা যায়। এই প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের তারতম্য অনুযায়ী ভারতবর্ষকে প্রধানত পাঁচটি বা ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই এই বিভাগগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ || Geological variations and divisions of India

ভারতবর্ষের ভূপ্রকৃতিগত তারতম্য ও বিভাগসমূহ


          ভারতবর্ষ একটি বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় দেশ। এর ভূপ্রকৃতিতে পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি, উপকূল এবং দ্বীপপুঞ্জ—সবকিছুরই সহাবস্থান দেখা যায়। এই প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের তারতম্য অনুযায়ী ভারতবর্ষকে প্রধানত পাঁচটি বা ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই এই বিভাগগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান ভূপ্রাকৃতিক বিভাগসমূহ:

১. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল (The Northern Mountain Region):

বিস্তার: 
এটি মূলত হিমালয় পর্বতমালা এবং এর সংলগ্ন অঞ্চলের সমন্বয়ে গঠিত। কাশ্মীর থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত এর বিস্তার।

বৈশিষ্ট্য: 
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গগুলো এই অঞ্চলে অবস্থিত (যেমন – মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা)। এই অঞ্চলটি অসংখ্য হিমবাহ, নদী উপত্যকা, গভীর গিরিখাত এবং সুউচ্চ গিরিপথ (যেমন – খাইবার, বোলান, কারাকোরাম, নাথুলা) দ্বারা পূর্ণ। এই গিরিপথগুলো প্রাচীনকাল থেকে বাণিজ্য ও বহিরাগত আক্রমণের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

উদাহরণ: 
কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ।

২. সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি বা উত্তরের সুবিশাল সমভূমি (The Great Northern Plains):

বিস্তার: 
এটি সিন্ধু, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদ এবং তাদের অসংখ্য উপনদী দ্বারা বিধৌত পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ও উর্বর সমভূমি। এটি হিমালয়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে দাক্ষিণাত্যের মালভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য: 
এই অঞ্চলের পলিমাটি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উর্বর, যা ভারতবর্ষকে 'শস্য-শ্যামলা' করে তুলেছে। প্রাচীনকাল থেকেই এই অঞ্চল জনবসতি, কৃষি ও সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু।

উদাহরণ: 
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং রাজস্থানের পূর্বাংশ। দিল্লি, কলকাতা, এলাহাবাদ, বারাণসীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো এই অঞ্চলেই অবস্থিত।

৩. মধ্যভারতের মালভূমি (The Central Highlands):

বিস্তার: 
এটি মূলত গঙ্গা সমভূমির দক্ষিণে এবং বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতমালার উত্তরে অবস্থিত একটি মালভূমি অঞ্চল।

বৈশিষ্ট্য: 
এই অঞ্চলে বিন্ধ্য, সাতপুরা, আবল্লী (আরাবল্লী) পর্বতমালার মতো প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের অংশ রয়েছে। চম্বল, সোন, বেতোয়া-এর মতো নদীগুলো এই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই অঞ্চলটি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ।

উদাহরণ: 
মালব মালভূমি, বুন্দেলখণ্ড মালভূমি, বাঘেলখণ্ড মালভূমি এবং ছোটনাগপুর মালভূমি।

৪. দাক্ষিণাত্যের মালভূমি (The Deccan Plateau):

বিস্তার: 
বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতমালার দক্ষিণে এবং তিন দিকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত ত্রিভুজাকার আকৃতির মালভূমি অঞ্চল।

বৈশিষ্ট্য: 
এটি প্রাচীন গ্রানাইট ও রূপান্তরিত শিলা দ্বারা গঠিত, যা ভারতের প্রাচীনতম ভূখণ্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর পূর্ব দিকে পূর্বঘাট পর্বত এবং পশ্চিম দিকে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা অবস্থিত। এখানকার কৃষ্ণমৃত্তিকা তুলো চাষের জন্য বিখ্যাত।

উদাহরণ: 
মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু ও কেরালার কিছু অংশ।

৫. উপকূলীয় সমভূমি (The Coastal Plains):

বিস্তার: 
ভারতের পূর্বে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূল বরাবর এই সমভূমি অঞ্চল বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য: 
এর পশ্চিমাংশ 'পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি' (গুজরাট থেকে কেরালা) এবং পূর্বাংশ 'পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি' (পশ্চিমবঙ্গ থেকে তামিলনাড়ু) নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি কৃষি, মৎস্য শিকার ও বন্দর বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

উদাহরণ: 
কোঙ্কণ উপকূল, মালাবার উপকূল (পশ্চিমে) এবং উৎকল উপকূল, করমণ্ডল উপকূল (পূর্বে)।

৬. দ্বীপপুঞ্জ (The Islands):

বিস্তার: 
ভারতের মূল ভূখণ্ড ছাড়াও দুটি প্রধান দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে।

বৈশিষ্ট্য: 
বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং আরব সাগরে অবস্থিত লাক্ষাদ্বীপ। এগুলি ভূপ্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উদাহরণ:
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ: 
এটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। এটি অসংখ্য ছোট-বড় দ্বীপের সমষ্টি এবং এর রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার। এখানকার সৈকত, প্রবাল প্রাচীর এবং ঘন জঙ্গল অত্যন্ত জনপ্রিয়।

লাক্ষাদ্বীপ: 
এটি আরব সাগরে অবস্থিত। এটিও একাধিক প্রবাল দ্বীপের সমষ্টি। এর রাজধানী কাভারাত্তি। এটি তার স্ফটিক স্বচ্ছ জল এবং সামুদ্রিক জীবনের জন্য পরিচিত।



Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য

  ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য Sl. No. ভরা কোটাল মরা কোটাল 1 চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ পৃথিবীর একই স্থানের উপর কার্যকরী হয়, ফলে ভরা কোটালের সৃষ্টি হয়। চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য সমকোণী অবস্থানে থাকলে পৃথিবীর উপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী হয়, ফলে মরা কোটালের সৃষ্টি হয়। 2 মানবজীবনের উপর ভরা কোটালে (নদী-মোহানা, নৌ-চলাচল, মাছ আহরণ ইত্যাদি)-র প্রভাব বেশি। মানবজীবনের উপর মরা কোটালের প্রভাব কম। 3 ভরা কোটাল হয় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে। মরা কোটাল হয় শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। 4 ভরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতল সবচেয়ে বেশী স্ফীত হয়। মরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতলের স্ফীতি সবচেয়ে কম হয়। 5 অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চাঁদ ও সূর্য অবস্থান করে। পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চাঁদের মাঝে পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমীত...

জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল ?

জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল      ভারতীয় জাতীয় রাজনীতিতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মূলত ভারতবাসীর আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও ব্রিটিশবিরোধী ক্ষোভের হাত থেকে ব্রিটিশ শাসনকে রক্ষা করার জন্যই।  জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য (১) কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন— উদ্দেশ্য ঘোষণা—বোম্বাইয়ের গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজ হল জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে (১৮৮৫ খ্রি., ২৮ ডিসেম্বর) সভাপতির ভাষণে উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে চারটি মূল উদ্দেশ্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এগুলি হল—   (i) ভাষাগত ও ধর্মীয় বৈচিত্রে ভরা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের দেশপ্রেমীদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও একাত্মতা গড়ে তোলা, (ii) সম্প্রীতির দ্বারা জাতি, ধর্ম, প্রাদেশিকতার তুচ্ছ সংকীর্ণতা দূর করে জাতীয় সংহতির পথ প্রশস্ত করা, (iii) শিক্ষিতদের সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করে সামাজিক ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানের উপায় নির্ণয় করা, (iv) ভারতের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য ভবিষ্যৎ কর্মসূচি গ্রহণ করা।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—

গ্রস্ত উপত্যকা

গ্রস্ত উপত্যকা দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ বসে গেলে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে। এছাড়া, মহীভাবক আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠে সংকোচন ও প্রসারণ বলের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ভূপৃষ্ঠের কঠিন শিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে পুনরায় ভূ-আন্দোলন ঘটলে বা ভূ-আলোড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ফাটল রেখা বরাবর শিলার একটি অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, একে চ্যুতি বলে। সংনমন বল বৃদ্ধি পেলে দুটি চ্যুতির মাঝের অংশ খাড়াভাবে নীচে বসে যায়। অবনমিত, ওই অংশকে বলে গ্রস্ত উপত্যকা। 

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন প্রবর্তন সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর–জেনারেল লর্ড লিটন দেশীয় পত্রপত্রিকার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (Vernacular Press Act, 1878) জারি করেন। পটভূমি ঊনবিংশ শতকে দেশীয় সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, দেশীয় সম্পদের বহির্গমন, দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ এ.আর.দেশাইয়ের মতে, “ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে সংবাদপত্র হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম”।

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

  স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য Sl. No. স্থলবায়ু সমুদ্রবায়ু 1 স্থলবায়ু মূলত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবায়ু মূলত উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির হয়। 2 স্থলবায়ু প্রধানত রাত্রিবেলায় প্রবাহিত হয়। সমুদ্রবায়ু প্রধানত দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়। 3 সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুর প্রবাহ শুরু হয় ও রাত্রির শেষদিকে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়। সূর্যোদয়ের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুরপ্রবাহ শুরু হয় ও অপরাহ্নে বায়ুপ্রবাহে বেগ বৃদ্ধি পায়। 4 স্থলবায়ু উচ্চচাযুক্ত স্থলভাগ থেকে নিম্নচাপযুক্ত জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে স্থলবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমুদ্রবায়ু উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে নিম্নচাপযুক্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে সমুদ্রবায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। 5 স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবার দরুন বেগ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ প্রবাহিত হ...

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা ‘মেখলা’ শব্দের মানে হল ‘কোমর বন্ধনী’। অসংখ্য আগ্নেয়গিরি মেখলা বা কোমর বন্ধনীর আকারে কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যখন অবস্থান করে, তখন তাকে ‘আগ্নেয় মেখলা’ বলা হয়। ভূবিজ্ঞানীর মতে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে ও এশীয় মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে পাত সীমায় ফাটল বরাবর অগ্ন্যুৎপাত ঘটে থাকে এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। 

আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য

  আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য Sl. No. আবহবিকার ক্ষয়ীভবন 1 আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যেমন—উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, জলীয় বাষ্প, তুষারপাত ও বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান দ্বার শিলাসমূহের চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া বা বিয়োজনকে আবহবিকার বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি, যেমন—নদী, বায়ু, হিমবাহ, ইত্যাদি দ্বারা আবহবিকারপ্রাপ্ত চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহের অপসারণকে ক্ষয়ীভবন বলে। 2 আবহবিকারের ফলে মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের (গঠন, আকৃতি, খনিজের আণবিক সজ্জা প্রভৃতি) পরিবর্তন ঘটে । ক্ষয়ীভবনের ফলে ভূমিরূপের পরিবর্তন সাধিত হয়। কিন্তু মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের কোনো পরিবর্তন সাধন হয় না। 3 আবহবিকার কোনোভাবে ক্ষয়ীভবনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ক্ষয়ীভবন সম্পূর্ণরূপে আবহবিকারের ওপর নির্ভরশীল। আবহবিকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে না। 4 আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহ শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মূল শিলাস্তরের ওপরেই অবস্থান করে। ক্ষয়ীভবনের ফলে আবহবিকার প্রাপ্ত শিলাচূর্ণ স্থানান্তরি...