ভারতবর্ষের ওপর হিমালয়ের প্রভাব ঐতিহাসিক K.M. Panikkar তাঁর A Survey of Indian History গ্রন্থে বলেছেন, মিশরীয় সভ্যতাকে যদি 'নীলনদের দান' বলা যেতে পারে, তবে ভারতীয় সভ্যতাকে অবশ্যই 'হিমালয়ের দান' বলা যেতে পারে। ভূগোলবিদ টলেমি হিমালয়কে 'ইমায়োস' বলে উল্লেখ করে বলেন যে, হিমালয় ভারতের উত্তরে বিশাল উঁচু প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থেকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছে। যেমন-
ভারতবর্ষের ওপর হিমালয়ের প্রভাব
ঐতিহাসিক K.M. Panikkar তাঁর A Survey of Indian History গ্রন্থে বলেছেন, মিশরীয় সভ্যতাকে যদি 'নীলনদের দান' বলা যেতে পারে, তবে ভারতীয় সভ্যতাকে অবশ্যই 'হিমালয়ের দান' বলা যেতে পারে। ভূগোলবিদ টলেমি হিমালয়কে 'ইমায়োস' বলে উল্লেখ করে বলেন যে, হিমালয় ভারতের উত্তরে বিশাল উঁচু প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থেকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছে। যেমন-
(১) মধ্য-এশিয়ার শৈত্যপ্রবাহ ও প্রচণ্ড ঠান্ডার হাত থেকে হিমালয় ভারতবর্ষকে রক্ষা করছে।
(২) হিমালয় থেকে নির্গত নদী যেমন-গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ভারতবর্ষকে ঊর্বরা ও শস্য-শ্যামলা করেছে।
(৩) আরবসাগর ও ভারত মহাসাগর থেকে আগত আর্দ্র মৌসুমি বায়ুকে বাধা দান করে হিমালয় বৃষ্টিপাতে সাহায্য করছে।
(৪) হিমালয়ের মনোরম পরিবেশে বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটছে; এতে ভারতবর্ষ অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া হিমালয় থেকে বনজ, খনিজ ও ভেষজ সম্পদ আহরিত হচ্ছে, যা ভারতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।
(৫) বৈদেশিক শত্রুর আক্রমণের হাত থেকে হিমালয় ভারতবর্ষকে যুগ যুগ ধরে রক্ষা করে চলেছে।
ঐতিহাসিক K.M. Panikkar এ-প্রসঙ্গে বলেছেন, হিমালয়ের তাৎপর্যপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান - ভারতবর্ষকে এশিয়ার অন্যান্য অংশ থেকে পৃথক করেছে। ফলে, ভারতবর্ষে বহিঃপ্রভাবযুক্ত একটা স্বতন্ত্র সভ্যতার সৃষ্টি হয়েছে (An area so walled off and isolated inevitably developed peculiarities and special characteristics which constitute differenciating marks of a civilisation)। দেবাত্মা হিমালয় ভারতীয় ধর্ম, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। তাই, সবদিক দিয়ে বিচার করে ভারতবর্ষকে 'হিমালয়ের দান' বললে অত্যুক্তি হবে না।

Comments
Post a Comment