ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুদূরপ্রসারী। সমুদ্র ভারতের কেবল ভৌগোলিক সীমানাই নির্ধারণ করেনি, বরং এর সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং বিশ্ব-সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। ভারতবর্ষের তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত। তাই, ভারত-ইতিহাসে সমুদ্রের প্রভাব থাকাটাই স্বাভাবিক ঘটনা। (১) তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় তিন দিকের সীমান্ত বেশ সুরক্ষিত। (২) আবার এই সমুদ্রপথ ধরেই আমাদের দেশের সঙ্গে চিন, রোম, মালয়, সুমাত্রা, জাভা, সিংহল ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। (৩) এমনকি এই জলপথের মাধ্যমেই রাজনৈতিক প্রাধান্য স্থাপিত হয়েছে।
অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ
মধ্য ও নিম্ন প্রবাহে নদীপথের ঢাল হ্রাস পায়। ফলে নদীর ক্ষমতাও কমে যায়। এইসময় নদী বাধার সম্মুখীন হলে সোজা পথে অগ্রসর না হয়ে আঁকাবাঁকা পথে অগ্রসর হয়। আঁকাবাঁকা পথে চলতে গিয়ে নদী প্রবাহের বাইরের দিকে অবতল পাড়টিকে ক্ষয় করে। আর ক্ষয়িত পদার্থসমূহ বাঁকের ভিতরে উত্তল পাড়ে জমা হতে থাকে। ফলে নদীর বাঁক ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। নদীর বাঁক যত বৃদ্ধি পায় ততই পরস্পরের নিকট এগিয়ে আসে। ক্ষয়কার্য আরও বৃদ্ধি পেলে দুটি বাঁক পৃথককারী বাঁক গ্রীবা (দুটি নদী বাঁকের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ ভূমি) অংশটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এর ফলে নদী আর বাঁকা পথে প্রবাহিত না হয়ে সোজা সরল পথে প্রবাহিত হয়। মধ্যবর্তী নদীবাঁকটি মূল নদী হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে হ্রদের আকার ধারণ করে। এই হ্রদগুলি দেখতে অনেকটা ঘোড়ার ক্ষুরের মতো হয় বলে একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বা Oxbow Lake বলে।
এছাড়া নদীর নিম্নগতিতে নদীর বাঁক অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে, অনেক সময় দুটি নদী-বাঁক নিজেদের কাছাকাছি এসে পড়ে। এই অবস্থায় ওই বাঁক দুটির মধ্যবর্তী অংশ ক্রমাগত ক্ষয় পেতে থাকলে বাঁক দুটি জুড়ে যায় এবং নদীটি সোজা পথে বয়ে চলে। ক্ষয়প্রাপ্ত বাঁকা অংশটি তখন নদী থেকে ঘোড়ার ক্ষুরের আকারে বিচ্ছিন্ন হয়ে হ্রদের আকার ধারণ করে—এভাবেও অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি হয়।
পশ্চিমবঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাগীরথী নদীর দু-পাশে এই ধরনের হ্রদ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও সাগরের কাছাকাছি গঙ্গার নিম্নগতিতে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ দেখা যায়।
Comments
Post a Comment