ভারতীয় ইতিহাসে এবং জনজীবনে নদনদীর প্রভাব ভারত-একটি নদীমাতৃক দেশ। ভারতীয় সভ্যতার সূচনা ঘটে নদী-অববাহিকা অঞ্চল থেকে। ভারতীয় ইতিহাসের ওপরও সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, গোদাবরী, যমুনা প্রভৃতি নদনদীর যথেষ্ট প্রভাব বর্তমান। নদনদীগুলি ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিকে সিক্ত করেছে, পলি মৃত্তিকায় উর্বর করেছে, আর শস্য-শ্যামলা করে ভারতীয় কৃষি-অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। অন্য দিকে নদী-উপকূলবর্তী অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে জনপদ, নগর, বাণিজ্যকেন্দ্র বা তীর্থস্থান। (১) সভ্যতার বিকাশ: সিন্ধুনদের অববাহিকাতেই জন্ম নেয় পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা। পঞ্চনদীর তীরে বিকাশ ঘটে বৈদিক সভ্যতার। পরবর্তীকালে গঙ্গা-অববাহিকা ধরে বৈদিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে। সিন্ধু সভ্যতা: ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং অন্যতম উন্নত সভ্যতা সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলির তীরে গড়ে উঠেছিল। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর মতো শহরগুলি নদীর উর্বর পলিমাটি এবং জল সরবরাহকে কাজে লাগিয়ে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল। গঙ্গা সভ্যতা: গঙ্গা নদী এবং তার অববাহিকা বরাবর পরবর্তীকালে বৈদিক সভ্যতা, মহাজনপদ এ...
যান্ত্রিক আবহবিকার ও রাসায়নিক আবহবিকারের মধ্যে পার্থক্য
| Sl. No. | যান্ত্রিক আবহবিকার | রাসায়নিক আবহবিকার |
|---|---|---|
| 1 | বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলাস্তর যখন ফেটে ছোটো ছোটো খন্ড বা চূর্ণে পরিণত হয় মূল শিলার ওপরে অবস্থান করে তখন তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। | নানান রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলা বিয়োজিত হওয়ার ঘটনাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে। |
| 2 | যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলার শুধুমাত্র ভৌত পরিবর্তন ঘটে। শিলা গঠনকারী খনিজের রাসায়নিক ধর্মের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। | রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে শিলার মধ্যে অবস্থিত খনিজগুলি বিয়োজিত হয়। ফলে শিলার ভৌত ও রাসায়নিক উভয় ধর্মেরই পরিবর্তন ঘটে। |
| 3 | উষ্ণ, মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চল এবং শীতল পার্বত্য অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার বেশি মাত্রায় সংঘটিত হয়। | আর্দ্র ক্রান্তীয় ও নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার বেশি পরিমাণে সংঘটিত হয়। |
| 4 | যান্ত্রিক আবহবিকার অনেক সময় সশব্দে ঘটে থাকে। | রাসায়নিক আবহবিকার নিঃশব্দে ঘটে থাকে। |
| 5 | ভূমিরূপ গঠন ও পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক আবহবিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। | রাসায়নিক আবহবিকার ভূমিরূপ গঠন ও পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। |
| 6 | যান্ত্রিক আবহবিকারের কয়েকটি প্রক্রিয়া হল— ভারহ্রাসের ফলে প্রসারণ, উষ্ণতার হ্রাসবৃদ্ধির ফলে সংকোচন ও প্রসারণ, কেলাস গঠন প্রভৃতি। | রাসায়নিক আবহবিকারের কয়েকটি প্রক্রিয়া হল—জলযোজন, আর্দ্র বিশ্লেষণ, জারণ, দ্রবণ প্রভৃতি। |
| 7 | মানব জীবনে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রভাব সীমিত। | মানব জীবনের ওপর রাসায়নিক আবহবিকারের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। |
| 8 | উদ্ভিদ ও প্রাণী যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আবহবিকার ঘটায়। | মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে সৃষ্ট আম্লিক পদার্থ রাসায়নিক আবহবিকার ঘটাতে সাহায্য করে। |
| 9 | যান্ত্রিক আবহবিকারপ্রাপ্ত চূর্ণবিচূর্ণ শিলাখণ্ড দেখে মূল শিলাকে চিহ্নিত করা যায়। | রাসায়নিক বিশ্লেষণ ছাড়া রাসায়নিক আবহবিকারের মূল শিলাকে চিহ্নিত করা যায় না। |
| 10 | প্রধানত উষ্ণতা, আর্দ্রতা, ও চাপের তারতম্যজনিত কারণে যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে। | শিলার মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে অ্যাসিড মিশ্রিত জলের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে আবহবিকার ঘটে। |
| 11 | যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া খালি চোখে চিহ্নিত করা যায় এবং তার অগ্রগতিও সহজে চোখে পড়ে। | রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া খালি চোখে সহজে চিহ্নিত করা যায় না এবং তার অগ্রগতি বোঝাও সহজ নয়। |
Comments
Post a Comment