দশম শ্রেণী - জীবনবিজ্ঞান - জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় - উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান - 'সদৃশ জোড়' (Analogous Pair) 'সদৃশ জোড়' (Analogous Pair) বা প্রথম জোড়ার সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়াটি পূরণ : ১. জগদীশচন্দ্র বসু : ক্রেস্কোগ্রাফ :: উদ্ভিদের কাণ্ডের আলোকবৃত্তি : ❓ অক্সিন ২. তীব্র আলোক : ফটোন্যাস্টিক :: আলোক উৎসের গতিপথ : ❓ ফটোট্রপিক ৩. সিসমোন্যাস্টিক : লজ্জাবতী :: প্রকরণ চলন : ❓ বনচাঁড়াল ৪. অনুকূল জিওট্রপিক : উদ্ভিদের মূল :: প্রতিকূল জিওট্রপিক : ❓ সুন্দরী গাছের শ্বাসমূল ৫. সূর্যমুখী : ফটোন্যাস্টিক :: টিউলিপ : ❓ থার্মোন্যাস্টিক
কীভাবে মাটির উৎপত্তি হয়? মাটির উৎপত্তি কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে? উৎপত্তি অনুসারে মাটির শ্রেণিবিভাগ
মাটি
ভূতত্ত্ববিদরা মনে করেন যে, সূর্য থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর পৃথিবী প্রথমে গ্যাসীয় বা বায়বীয় অবস্থায় ছিল। পরে তাপ বিকিরণের ফলে পৃথিবী তরল অবস্থায় আসে এবং ক্রমাগত তাপ বিকিরণের ফলে ঠাণ্ডা হয়ে শক্ত পিণ্ডে পরিণত হয়। এই শক্ত পিণ্ডকে শিলা বলে।
প্রাকৃতিক, রাসায়নিক ও জৈবিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার দ্বারা কঠিন শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অবশেষে মাটিতে পরিণত হয়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা উৎপন্ন শিলাচূর্ণ, খনিজ পদার্থ, জৈব পদার্থের মিশ্রণে সৃষ্ট যে শিথিল ও নরম স্তর ভূত্বকের ওপর অবস্থান করে, তাকে মাটি বলে।আসলে চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া শিলার সঙ্গে জৈব পদার্থ মিশ্রিত হয়েই প্রকৃত মাটি সৃষ্টি হয়। ভূপৃষ্ঠে মাটি সৃষ্টির পদ্ধতিগুলিকে প্রধানত দু ভাগে ভাগ করা যেতে পারে,
যেমন— মাটির উৎপত্তির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া এবং মাটির উৎপত্তির জৈব প্রক্রিয়া (উদ্ভিদ ও প্রাণীর দ্বারা)
শিলাচূর্ণ এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের অবশেষ থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণের আহরণ, সমাবেশ ও সংযোগ ছাড়াও মাটি তৈরিতে আরও কিছু অনুকূল বিষয়ের প্রয়োজন।
এগুলি হল—
(ক) আবহাওয়া
মাটি তৈরির জন্য বৃষ্টিযুক্ত আবহাওয়ার প্রয়োজন।
(খ) ভূপ্রকৃতি
মৃদু ঢালযুক্ত সমভূমি ও উপত্যকা মাটির গভীর স্তর সৃষ্টির অনুকূল।
(গ) সময়
মাটির উৎপত্তি, প্রকৃতি ও গুণাগুণ নির্ভর করে মাটি তৈরির উপাদানগুলি কত সময় ধরে সঞ্চিত হয়ে পরস্পরের সঙ্গে মিশেছে তার ওপর।
(ঘ) মূল শিলাস্তরের প্রভাব
মূল শিলার প্রকৃতি ও উপাদানের ওপর নির্ভর করে মাটির ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম।
(ঙ) জীবজগতের প্রভাব
গাছ শিকড়ের সাহায্যে শিলাস্তরকে চূর্ণবিচূর্ণ করে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ জারিত হয়ে হিউমাস হিসেবে শিলাচূর্ণের সঙ্গে মিশে মাটি তৈরিতে সাহায্য করে।
উৎপত্তি অনুসারে মাটিকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন—
(১) স্থানীয় মাটি ও
(২) অপসৃত মাটি
স্থানীয় মাটি
প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে মাতৃশিলা থেকে উৎপন্ন মাটি যখন উৎপত্তিস্থলেই স্থিতিলাভ করে তখন তাকে স্থানীয় মাটি বা স্থিতিশীল মাটি বলে। এই ধরনের মাটির ওপরের স্তরের কণাগুলো সূক্ষ্ম হয় কিন্তু নীচের স্তরগুলিতে মাটির কণাগুলো ক্রমশ মোটা হতে শুরু করলেও মাটির বিভিন্ন স্তরের মূল উপাদান একই থাকে।
অপসৃত মাটি
যেসব মাটি বায়ুপ্রবাহ, তুষারপ্রবাহ, জলপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা পরিবাহিত হয়ে তাদের উৎস থেকে দূরবর্তী স্থানে সঞ্চিত হয়, তাদের পরিবাহিত বা অপসৃত মাটি বলে। অপসৃত মাটি সাধারণত উর্বর হয় এবং দূরবর্তী অন্য স্থান থেকে আসার জন্য অপসৃত মাটির মূল ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম তাদের নীচে থাকা শিলাস্তর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়।
মাটির প্রকারভেদ
অপসৃত মাটি নানা ধরনের হতে পারে, যেমন–কোনো স্থানের মাটি বায়ুপ্রবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে দূরবর্তী স্থানে সঞ্চিত হলে তাকে লোয়েস মাটি এবং জলপ্রবাহ দ্বারা পরিবাহিত হলে তাকে পলিমাটি বলে।
গঠন অনুসারে মাটির শ্রেণিবিভাগ—গঠন অনুসারে মাটিকে নুড়ি, বালি, পলি এবং কাদা—এই চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।
পলি মাটিকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—
(১) দোঁয়াশ মাটি (এই মাটিতে বালি ও কাদা প্রায় সমপরিমাণে থাকে),
(২) এঁটেল মাটি (এই মাটিতে কাদার ভাগ বেশি) এবং
(৩) বেলেমাটি (এই মাটিতে বালির ভাগ বেশি)।
আরও পড়ুন::
Comments
Post a Comment