নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
বায়ুমণ্ডল অদৃশ্য, বর্ণহীন, গন্ধহীন হলেও বায়ুমণ্ডলের কার্যকারিতা অপরিসীম ও বহুমুখী।
🟐 বায়ুপ্রবাহ পৃথিবীর সর্বত্র ঝড়-বৃষ্টি ঘটিয়ে উদ্ভিদ জন্মাতে সাহায্য করে। উদ্ভিদই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবকুলকে খাদ্যের জোগান দেয়।
🟐 প্রাণীজগতের শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজন মেটাতে বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব অপরিসীম।
🟐 বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে পৃথিবীব্যাপী তাপের সমতা রক্ষিত হয়। বায়ুপ্রবাহের অভাবে বিভিন্ন তাপবলয়ের মধ্যে তাপের বিনিময় ঘটত না, ফলে উষ্ণমণ্ডল আরও উষ্ণতর এবং হিমমণ্ডল আরও শীতলতর হতে পারত।
🟐 বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন শ্বাসকার্যে সাহায্য করে ও প্রাণীদেহে শক্তি ও তাপ জোগায়, দহনে সাহায্য করে। কার্বন ডাইঅক্সাইড তাপ শোষণ করে। নাইট্রোজেন প্রোটিনজাত খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে।
🟐 বায়ুপ্রবাহ উপযুক্ত পরিবেশে মানুষের শ্রম লাঘব করে। বায়ুশক্তির সাহায্যে জলসেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, দানাশস্য পেষাই প্রভৃতি কাজ করা হয়। প্রবহমান বা অফুরন্ত শক্তির উৎস হিসেবে বায়ুশক্তি চিরাচরিত অপুনর্ভব শক্তির উত্তম বিকল্প।
🟐 বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধ্বস্তরে আয়নমণ্ডলের উপস্থিতির জন্যই দীর্ঘ ছয়মাস রাত্রিকালীন সময়ে মেরু অঞ্চলের আকাশে মেরুপ্রভা বা মেরুজ্যোতির আলো দেখা যায়।
🟐 বায়ুমণ্ডল দিনের প্রখর সৌরতাপ অনেকটাই আটকে দেয়, আবার রাত্রে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপেরও কিছু অংশ ধরে রাখে। আকাশের মেঘ এবং বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড, জলীয়বাষ্প এই কাজে সাহায্য করে। তাই দিনেরবেলা অসহ্য গরম ও রাত্রে হিমশীতল ঠান্ডা হতে পারে না পৃথিবী। সুতরাং, দিনে ও রাতে পরিমিত তাপ বজায় রেখে পৃথিবীতে জীবন রক্ষা করে।
🟐 বায়ুমণ্ডল না থাকলে আকাশে বেলুন বা বিমান বা পাখি আকাশে উড়তে পারত না। বায়ুতে ভর দিয়ে এরা ভেসে থাকে অথবা বায়ুকে পিছনে ঠেলে এরা অগ্রসর হয়।
🟐 বায়ুমণ্ডল ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকে জীবকোশকে রক্ষা করে, তাছাড়া বায়ুর আবরণ, মহাজাগতিক কণাস্রোত শোষণ করে জীবন রক্ষা করে।
🟐 বায়ুমণ্ডলীয় ধূলিকণা তাপ শোষণে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ধূলিকণা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি তাপ বৃদ্ধি করে। ধূলিকণা জলীয়বাষ্পের ঘনীভবনে সাহায্য করে।
🟐 বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে, মহাজাগতিক কঠিন ধূলিকণা, ছোটো-বড়ো উল্কাপিণ্ড জ্বলে ছাই হয়ে যায়। বায়ুমণ্ডলের অভাবে প্রতিদিন পৃথিবীপৃষ্ঠ উল্কাপাতে ক্ষতবিক্ষত হত। বায়ুমণ্ডলীয় আবরণহীন চাঁদ এবং বুধ গ্রহ যথেষ্ট ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
Comments
Post a Comment