বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এক মহাদেশের সারাংশ (Epitome of the World) ভারতবর্ষ শুধুমাত্র একটি দেশ নয়, এটি একটি উপ-মহাদেশের সমতুল্য। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, নৃতাত্ত্বিক ভিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক বিপুলতা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাসে যে "অন্তর্নিহিত মৌলিক ঐক্য" ( Fundamental Unity ) বারবার প্রকাশিত হয়েছে, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে যথার্থই " India offers unity in diversity " বা "বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য" বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের মিলনকেন্দ্র হওয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষকে "মহামানবের সাগরতীর" নামে অভিহিত করেছেন। ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যের স্বরূপ (The Nature of Diversity) ভারতের বৈচিত্র্যকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক বৈচিত্র্য: ভূ-প্রকৃতি: উত্...
বদ্বীপ
নদীর নিম্নপ্রবাহে, মোহানার কাছে যেখানে নদী সমুদ্রে এসে মেশে সেখানে নদীর গতিবেগ একেবারে কমে যায়। তাই নদীর সঙ্গে আগত ক্ষয়িত পদার্থসমূহ নদীবক্ষে সঞ্চিত হয়। এ ছাড়া নদীবাহিত পলিসমূহ সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে এসে দ্রুত থিতিয়ে পড়ে। এইভাবে সঞ্চয়ের ফলে নদী মোহানায় মাত্রাহীন বাংলা ‘ব’ অক্ষরের মতো বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টা (Δ)-র মতো দ্বীপের সৃষ্টি হয়। একে বদ্বীপ বলে।
বদ্বীপ গড়ে ওঠার জন্য কতকগুলি অনুকূল অবস্থার প্রয়োজন। যেমন—
(i) নদী মোহানায় সমুদ্রের গভীরতা কম থাকা প্রয়োজন।
(ii) নদী মোহানায় পলি সঞ্চয়ের হার সমুদ্রের অপসারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি হওয়া প্রয়োজন।
(iii) নদীবাহিত পলির পরিমাণ বেশি হওয়া প্রয়োজন।
(iv) নদীস্রোতের বিপরীত দিক থেকে বায়ুপ্রবাহ হওয়া প্রয়োজন৷
(v) নদী মোহানায় জোয়ারভাটার প্রকোপ কম হতে হবে।
(vi) ভগ্ন উপকূলভাগ।
(vii) মধ্যগতি বা নিম্নগতির দৈর্ঘ্য বেশি হলে বদ্বীপ গড়ে ওঠে।
সাধারণত তিন ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়, যেমন—
(১) ত্রিকোণ আকৃতির বদ্বীপ (যেমন–গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ)
(২) হ্রদ বদ্বীপ (হ্রদের ওপর গড়ে ওঠা বদ্বীপ–কাস্পিয়ান সাগরে এই ধরনের বদ্বীপ দেখা যায়)
(৩) সমুদ্র বদ্বীপ (সমুদ্রের ওপর যে বদ্বীপের সৃষ্টি হয়, যেমন–সুন্দরবন বদ্বীপ)।
আবার কোনো কোনো বদ্বীপ বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। আকৃতি অনুসারে বদ্বীপগুলি হলো:
(i) আকৃতি অনুসারে বদ্বীপ—
(ক) ধনুকাকৃতি (গঙ্গা),
(খ) কাসপেট (ইতালির টাইবার),
(গ) খাড়ীর বদ্বীপ (ফ্রান্সের সিন ও রাইন)।
(ii) গঠন অনুসারে বদ্বীপ—
(ক) গঠনমূলক জিহ্বার আকৃতি,
(খ) দীর্ঘায়ত পাখির পায়ের মতো (মিসিসিপি),
(গ) ধ্বংসাত্মক—
(a) তরঙ্গবাহিত (ব্রাজিলের সাওফ্লান্সোসিমকো,
(b) জোয়ারভাটা প্রভাবিত (নাইজার)।
আরও পড়ুন::
Comments
Post a Comment