Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

জীববিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-মানব শারীরবিদ্যা, সেট-১৩

মানব শারীরবিদ্যা


প্রশ্ন:১
রক্তের শ্রেণি কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?

উত্তর: 
রক্তকে প্রথমে 0.7 শতাংশ সােডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) দ্রবণে তরলীকৃত করে লােহিতকণিকার 5% অবলম্ব তৈরি করা হয়। এর এক ফোঁটা একটি স্লাইডে এবং আর এক ফোঁটা অন্য একটি স্লাইডে রেখে তার সঙ্গে যথাক্রমে অ্যান্টি-A ও অ্যান্টি-B সিরাম মেশানাে হয়। লােহিতকণিকা যদি শুধুমাত্র অ্যান্টি-A-এর সংস্পর্শে জমাট বাঁধে তবে তা ‘A’ শ্রেণির রক্ত। যদি শুধুমাত্র অ্যান্টি-B-এর সংস্পর্শে জমাট বাঁধে তবে তা ‘B’ শ্রেণির রক্ত। অ্যান্টি-A এবং অ্যান্টি-B উভয় সিরামের দ্বারা রক্তকণিকা জমাট বাঁধলে রক্তের শ্রেণি হবে ‘AB’। উভয় অ্যান্টি সিরামের দ্বারা রক্তকণিকা জমাট না বাঁধলে রক্তের শ্রেণি হবে ‘O’।


প্রশ্ন:২
এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস কী ?

উত্তর: 
যদি Rh (–) মাতার দেহে Rh (+) ভ্রূণ সৃষ্টি হয় তবে ভ্রূণের দেহ থেকে Rh (+) অ্যাগ্লুটিনােজেন মাতার রক্তে প্রবেশ করে এবং Rh-বিরােধী পদার্থের গঠন উদ্দীপিত করে। এরপর মাতার দেহ থেকে Rh-বিরােধী পদার্থ ভ্রূণের রক্তে প্রবেশ করে এবং ভ্রূণের লােহিতকণিকাগুলিকে ধ্বংস করে। এর ফলে ভ্রূণের মৃত্যু হয় কিংবা যদিও জীবন্ত ভূমিষ্ঠ হয় মারাত্মক—রক্তাল্পতায় ভােগে। এই ধরনের রক্তাল্পতাকে বলা হয় এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস।


প্রশ্ন:৩
বাফার কাকে বলে ?

উত্তর: 
দুর্বল অম্লের (অ্যাসিটিক অ্যাসিড) সঙ্গে তীব্র ক্ষারের (NaOH) বিক্রিয়ায় উৎপন্ন লবণ (সােডিয়াম অ্যাসিটেট) মিশ্রণকে বাফার বলে। 
রক্তের উল্লেখযােগ্য কয়েকটি বাফার হল—হিমােগ্লোবিন, NaH2PO4, Na2HPO4, কার্বনেট বাফার ইত্যাদি।


প্রশ্ন:৪
Rh-উপাদানের গুরুত্ব কী ?

উত্তর: 
Rh-উপাদানের গুরুত্ব— Rh (+) রক্ত কোনাে Rh (–) ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করানো হলে 12 দিনের মাথায় গ্রহীতার রক্তে Rh-বিরােধী পদার্থের (Anti Rh-factor) সৃষ্টি হয়। তাই দ্বিতীয়বার পূর্বোক্ত ব্যক্তির দেহে Rh (+) রক্ত সঞ্চালন করলে গ্রহীতার দেহে দাতার রক্তের লােহিতকণিকাগুলি পুঞ্জীভূত হয়ে জমাট বাঁধে। তাই রক্ত । সঞ্চালনের পূর্বে Rh-উপাদানের সঠিক অস্তিত্ব নির্ণয় করা বাঞ্চনীয়। এই ধরনের জটিলতা এড়ানাের জন্য দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের রক্তই Rh (+) কিংবা Rh (–) হওয়া উচিত।


প্রশ্ন:৫
দাতা ও গ্রহীতার রক্তের শ্রেণি বিবেচনা না করে রক্ত সঞ্চালন করলে কী ঘটতে পারে ?

উত্তর: 
রক্ত সঞ্চালনের সময় দাতার লােহিতকণিকা ও গ্রহীতার প্লাজমা এবং গ্রহীতার লােহিতকণিকা ও দাতার প্লাজমার মধ্যে বিক্রিয়া বিবেচনা করা অবশ্যই প্রয়ােজন। এর কারণ আ্যাগ্লুটিনােজেন-A সমন্বিত লােহিতকণিকা আ্যাগ্লুটিনিন আলফা (α)-এর সংস্পর্শে এবং অ্যাগ্লুটিনােজেন-B যুক্ত লােহিতকণিকা β (বিটা) আ্যাগ্লুটিনিন-এর সংস্পর্শে পুঞ্জীভূত হয়ে যায়। এইজন্য দাতার রক্তের শ্রেণি ‘A’ এবং গ্রহীতার রক্তের শ্রেণি ‘B’ হলে গ্রহীতার দেহে দাতার লােহিতকণিকাগুলি পুঞ্জীভূত হয়ে যায়। এর ফলে গ্রহীতার মৃত্যুও হতে পারে। তবে দাতার প্লাজমা গ্রহীতার দেহে প্রচণ্ডভাবে লঘু হয়ে পড়ে, ফলে গ্রহীতার লােহিতকণিকাকে পুঞ্জীভূত করতে পারে না। অতএব, রক্ত সঞ্চালনের সময় দাতা ও গ্রহীতার রক্তের শ্রেণি বিবেচনা করা অবশ্যই প্রয়ােজন।


প্রশ্ন:৬
হিমােলাইসিস কী ?

উত্তর: 
লােহিত রক্তকণিকাকে লঘুসারক দ্রবণে রাখলে অন্তঃঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় লােহিত কণিকার মধ্যে জল প্রবেশ করে লােহিতকণিকাটি ফুলে-ফেঁপে ওঠে এবং বিদীর্ণ হয়ে হিমােগ্লোবিন বেরিয়ে আসে। লােহিতকণিকার এই অবস্থাকে হিমােলাইসিস বলে। সাপের বিষ, ব্যাকটেরিয়া নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ হিমােলাইসিস ঘটায়। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ রক্ত সঞ্চালনের ফলে লােহিতকণিকার হিমােলাইসিস ঘটে।


প্রশ্ন:৭
পারপিউরা কী ?

উত্তর: 
রক্তে অণুচক্রিকার সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তজালকের প্রাচীরের মেরামতি সঠিকভাবে হয় না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তজালকের প্রাচীর ভেদ করে রক্ত বাইরে চলে আসে এবং চামড়া ও মিউকাস পর্দার নীচে বিভিন্ন স্থানে কতকগুলি রক্তবিন্দু দেখা যায়। সেগুলি পরে গাঢ় কালচে-লাল বর্ণ ধারণ করে। এই অবস্থাকে পারপিউরা বলে।


প্রশ্ন:৮
Rh-ফ্যাক্টর বা Rh-উপাদান কী ?

উত্তর: 
Rh-উপাদানটি ভারতীয় রেসাস (Rhesus) বানরের লােহিতকণিকার অ্যাগ্লুটিনােজেন। 1940 খ্রিস্টাব্দে মানুষের লােহিতকণিকায় এই উপাদানের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে। ইংল্যান্ড, আমেরিকার সাদা চর্মবিশিষ্ট মানুষের শতকরা প্রায় 85 জন এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কার মানুষের শতকরা প্রায় 95 জনের লােহিতকণিকায় এই জাতীয় অ্যাগ্লুটিনােজেন থাকে। Rh-অ্যাগ্লুটিনােজেনের উপস্থিতির ভিত্তিতে মানুষের রক্তকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা–(i) Rh-ধনাত্মক (Rh-positive) এবং (ii) Rh-ঋণাত্মক (Rh-negative)।


প্রশ্ন:৯
লিউকেমিয়া কী ?

উত্তর: 
রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াকে লিউকেমিয়া বলে।


প্রশ্ন:১০
ডায়াপেডােসিস কী ?

উত্তর: 
দেহের কোনাে অংশে সংক্রমণ ঘটলে রক্তস্থিত নিউট্রোফিল ও মনােসাইট শ্বেতকণিকা রক্তজালকের প্রাচীর ভেদ করে সংক্রমণস্থলে এসে জড়াে হয় এবং ফ্যাগােসাইটোসিস পদ্ধতিতে রােগজীবাণু ধ্বংস করে। শ্বেতকণিকাদের রক্তজালকের প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসাকে ডায়াপেডােসিস (Diapedosis) বলে।

Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

  স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য Sl. No. স্থলবায়ু সমুদ্রবায়ু 1 স্থলবায়ু মূলত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবায়ু মূলত উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির হয়। 2 স্থলবায়ু প্রধানত রাত্রিবেলায় প্রবাহিত হয়। সমুদ্রবায়ু প্রধানত দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়। 3 সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুর প্রবাহ শুরু হয় ও রাত্রির শেষদিকে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়। সূর্যোদয়ের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুরপ্রবাহ শুরু হয় ও অপরাহ্নে বায়ুপ্রবাহে বেগ বৃদ্ধি পায়। 4 স্থলবায়ু উচ্চচাযুক্ত স্থলভাগ থেকে নিম্নচাপযুক্ত জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে স্থলবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমুদ্রবায়ু উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে নিম্নচাপযুক্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে সমুদ্রবায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। 5 স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবার দরুন বেগ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ প্রবাহিত হ...

স্তূপ পর্বত

স্তূপ পর্বত             ভূ-আলোড়নজনিত প্রসারণ বলের প্রভাবে পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ফাটলের মধ্যবর্তী অংশ চাপের ফলে বিচ্যুত হয়ে ওপরে উঠে যায় বা দুটি ফাটলের মধ্যবর্তী অংশ চাপের ফলে নীচে বসে যায় তখন অপেক্ষাকৃত উঁচু অংশকে স্তূপ পর্বত বলে। প্রবল ভূ-আলোড়নের ফলে ভূত্বকের বিভিন্ন অংশে চাপের পার্থক্য ঘটে। ফলে শিলায় টান ও সংনমনের সৃষ্টি হয়। টান ও সংনমনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে শিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং ফাটলরেখা বরাবর শিলার এক অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একে চ্যুতি বলে। সংনমন বল বৃদ্ধি পেলে দুটি উল্লম্ব চ্যুতির মাঝের অংশটি নীচে বসে গেলে দু-পাশ ওপরে উঠে আসে। আবার মাঝের অংশটি ওপরে উঠে গেলে দু-পাশ নীচে বসে যায়। তখন ওপরে উঠে আসা অংশকে স্তূপ পর্বত বলে।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

গ্রস্ত উপত্যকা

গ্রস্ত উপত্যকা দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ বসে গেলে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে। এছাড়া, মহীভাবক আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠে সংকোচন ও প্রসারণ বলের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ভূপৃষ্ঠের কঠিন শিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে পুনরায় ভূ-আন্দোলন ঘটলে বা ভূ-আলোড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ফাটল রেখা বরাবর শিলার একটি অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, একে চ্যুতি বলে। সংনমন বল বৃদ্ধি পেলে দুটি চ্যুতির মাঝের অংশ খাড়াভাবে নীচে বসে যায়। অবনমিত, ওই অংশকে বলে গ্রস্ত উপত্যকা। 

মহীখাত

মহীখাত        জে.হল, জে.ডি.ডানা ও কোবার প্রথম মহীখাত বা Geosyncline ধারণার অবতারণা করেন। তাঁদের মতে, পৃথিবীর আদি ভূভাগ দ্বারা বেষ্টিত ভূপৃষ্ঠের সংকীর্ণ, অবনমিত ও অগভীর সমুদ্রখাত হল মহীখাত। অর্থাৎ, ভূতাত্ত্বিকদের মতে, এখন যেসব জায়গায় ভঙ্গিল পর্বতগুলো অবস্থান করছে, অতি প্রাচীনকালে সেখানে ছিল বিস্তীর্ণ অবনত অঞ্চল— ভূতাত্ত্বিকগণের ভাষায় যার নাম মহীখাত বা অগভীর সমুদ্র।

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন আইন প্রবর্তনের কারণ ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জাতীয়তাবাদী নাটক রচনা করে ব্রিটিশের শোষণ ও অপশাসনের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার কাজ শুরু হয়। অমৃতলাল বসুর ‘চা–কর দর্পণ’, দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকে অত্যাচারী শ্বেতাঙ্গ সাহেবদের মুখোশ খুলে দেওয়া হয়। অমৃতলাল বসু ও উপেন্দ্রনাথ দাস ‘হনুমান চরিত’ নামক প্রহসন নাটকে ইংরেজের প্রতি ব্যঙ্গবিদ্রুপ প্রকাশ করেন। গ্রামেগঞ্জে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব সৃষ্টির কাজে নাটকগুলি সাফল্য পায়। সরকার দমনমূলক আইন জারি করে দেশাত্মবোধক নাটকের প্রচার বন্ধ করে দিতে উদ্যত হয়।

আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য

  আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য Sl. No. আবহবিকার ক্ষয়ীভবন 1 আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যেমন—উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, জলীয় বাষ্প, তুষারপাত ও বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান দ্বার শিলাসমূহের চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া বা বিয়োজনকে আবহবিকার বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি, যেমন—নদী, বায়ু, হিমবাহ, ইত্যাদি দ্বারা আবহবিকারপ্রাপ্ত চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহের অপসারণকে ক্ষয়ীভবন বলে। 2 আবহবিকারের ফলে মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের (গঠন, আকৃতি, খনিজের আণবিক সজ্জা প্রভৃতি) পরিবর্তন ঘটে । ক্ষয়ীভবনের ফলে ভূমিরূপের পরিবর্তন সাধিত হয়। কিন্তু মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের কোনো পরিবর্তন সাধন হয় না। 3 আবহবিকার কোনোভাবে ক্ষয়ীভবনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ক্ষয়ীভবন সম্পূর্ণরূপে আবহবিকারের ওপর নির্ভরশীল। আবহবিকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে না। 4 আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহ শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মূল শিলাস্তরের ওপরেই অবস্থান করে। ক্ষয়ীভবনের ফলে আবহবিকার প্রাপ্ত শিলাচূর্ণ স্থানান্তরি...

ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য

  ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য Sl. No. ভরা কোটাল মরা কোটাল 1 চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ পৃথিবীর একই স্থানের উপর কার্যকরী হয়, ফলে ভরা কোটালের সৃষ্টি হয়। চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য সমকোণী অবস্থানে থাকলে পৃথিবীর উপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী হয়, ফলে মরা কোটালের সৃষ্টি হয়। 2 মানবজীবনের উপর ভরা কোটালে (নদী-মোহানা, নৌ-চলাচল, মাছ আহরণ ইত্যাদি)-র প্রভাব বেশি। মানবজীবনের উপর মরা কোটালের প্রভাব কম। 3 ভরা কোটাল হয় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে। মরা কোটাল হয় শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। 4 ভরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতল সবচেয়ে বেশী স্ফীত হয়। মরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতলের স্ফীতি সবচেয়ে কম হয়। 5 অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চাঁদ ও সূর্য অবস্থান করে। পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চাঁদের মাঝে পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমীত...