বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এক মহাদেশের সারাংশ (Epitome of the World) ভারতবর্ষ শুধুমাত্র একটি দেশ নয়, এটি একটি উপ-মহাদেশের সমতুল্য। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, নৃতাত্ত্বিক ভিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক বিপুলতা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাসে যে "অন্তর্নিহিত মৌলিক ঐক্য" ( Fundamental Unity ) বারবার প্রকাশিত হয়েছে, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে যথার্থই " India offers unity in diversity " বা "বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য" বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের মিলনকেন্দ্র হওয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষকে "মহামানবের সাগরতীর" নামে অভিহিত করেছেন। ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যের স্বরূপ (The Nature of Diversity) ভারতের বৈচিত্র্যকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক বৈচিত্র্য: ভূ-প্রকৃতি: উত্...
মানব শারীরবিদ্যা
প্রশ্ন:১
হৃৎপিণ্ড প্রাচীরের স্তর তিনটি কী কী ?
উত্তর:
হৃৎপিণ্ড প্রাচীরের বাইরের স্তরটিকে পেরিকার্ডিয়াম, মধ্যস্তরটিকে মায়ােকার্ডিয়াম এবং ভিতরের স্তরটিকে এন্ডােকার্ডিয়াম বলে।
প্রশ্ন:২
হৃৎপিণ্ডের কপাটিকাগুলি কী কী ? তাদের অবস্থান লেখাে।
উত্তর:
হৃৎপিণ্ডে চার ধরনের কপাটিকা থাকে।
(i) ত্রিপত্র কপাটিকা বা ট্রাইকাসপিড ভালভ—ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মধ্যবর্তী ছিদ্রপথ এই কপাটিকা দ্বারা সুরক্ষিত থাকে।
(ii) দ্বিপত্র কপাটিকা বা বাইকাসপিড ভালভ বা মাইট্রাল ভালভ—বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের সংযােগস্থানে এই কপাটিকা থাকে।
(iii) পালমােনারি কপাটিকা বা অর্ধচন্দ্রাকৃতি কপাটিকা—ডান নিলয় ও ফুসফুসীয় ধমনি পথে তিনটি খণ্ডবিশিষ্ট অর্ধচন্দ্রাকৃতি বা পালমােনারি কপাটিকা থাকে।
(iv) অ্যাওর্টিক কপাটিকা বা অর্ধচন্দ্রাকৃতি কপাটিকা— বাম নিলয় ও মহাধমনির সংযােগস্থলে অ্যাওর্টিক কপাটিকা বা অর্ধচন্দ্রাকৃতি কপাটিকা থাকে।
প্রশ্ন:৩
নিলয় ছন্দবিচ্যুতি কাকে বলে ?
উত্তর:
নিলয়ের কোনাে অংশ থেকে অতিরিক্ত সিস্টোল উৎপন্ন হলে তাকে নিলয় ছন্দবিচ্যুতি বলা হয়।
প্রশ্ন:৪
এ.ভি.নােডীয় বিলম্ব কাকে বলে ? এর তাৎপর্য কী ?
উত্তর:
এ.ভি.নােড থেকে হৃৎস্পন্দন প্রবাহ হিজের বান্ডিল ও পারকিনজি তন্তুর মাধ্যমে নিলয় পেশিতে পৌঁছােয়। এ.ভি.নােডে স্পন্দনপ্রবাহের বিস্তার খুবই মন্থর (0.05 মিটার/সে)। তাই নিলয়ে স্পন্দনপ্রবাহ বিস্তৃত হতে 0.07 থেকে 0.1 সে. বিলম্ব (delay) হয়। এই বিলম্বকে এ.ভি.নােডীয় বিলম্ব (AV nodal delay) বলে।
তাৎপর্য— এ.ভি.নােডীয় বিলম্বের ফলে নিলয় পেশি উত্তেজিত হওয়ার পূর্বে অলিন্দ পেশি সম্পূর্ণরূপে সংকুচিত হওয়ার সুযােগ পায়।
প্রশ্ন:৫
মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের অবস্থান লেখাে।
উত্তর:
মানুষের হৃৎপিণ্ডটি বক্ষগহ্বরের মেডিয়াস্টিনাল স্থানে ফুসফুস দুটির মাঝখানে ডান দ্বিতীয় পঞ্জরাস্থি থেকে বাম পঞ্চম পঞ্জরাস্থি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং বামদিক ঘেঁষে তির্যকভাবে অবস্থিত।
প্রশ্ন:৬
পেসমেকার কাকে বলে এবং কেন ?
উত্তর:
এস.এ.নােড-কে পেসমেকার বা ছন্দ-নিয়ামক বলে। হৃৎপিণ্ডে সর্বপ্রথম এস.এ.নােডে স্পন্দনপ্রবাহ (cardiac impulse) উৎপন্ন হয় এবং এস.এ.নােডে উৎপন্ন স্পন্দনপ্রবাহ হৎপিণ্ডের অন্যান্য সংযােগী কলার দ্বারা অলিন্দ ও নিলয় পেশিতে পরিবাহিত হয়ে হৎপিণ্ডের সংকোচন প্রসারণের ছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই, এস.এ.নােডকে ছন্দ নিয়ামক বা পেসমেকার বলে।
প্রশ্ন:৭
পেরিকার্ডিয়াল তরল কোথায় থাকে ? এর কাজ কী ?
উত্তর:
হৃৎপিণ্ডের সেরাস পেরিকার্ডিয়ামের ভিসেরাল ও প্যারাইটাল স্তরের মধ্যবর্তী পেরিকার্ডিয়াল গহ্বরে পেরিকার্ডিয়াল তরল থাকে।
কাজ—
(i) হৃৎপিণ্ডকে বিনা বাধায় সংকুচিত-প্রসারিত হতে সাহায্য করে।
(ii) হৃৎপিণ্ডকে যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষা করে।
প্রশ্ন:৮
হৃৎপিণ্ডের বিশেষ সংযােগী কলাগুলি কী কী ?
উত্তর:
হৃৎপিণ্ডে পাঁচ ধরনের বিশেষ সংযােগী কলা থাকে।
যথা—
(i) সাইনােঅ্যাট্রিয়াল নােড বা এস.এ.নােড,
(ii) আন্তরনােডীয় তন্তুপথ,
(iii) এট্রিয়ােভেন্ট্রিকুলার নােড বা এ.ভি.নােড,
(iv) হিজের তন্তুগুচ্ছ এবং তার বাম ও দক্ষিণ শাখা,
(v) পারকিনজি তন্তু।
প্রশ্ন:৯
হৃৎপিণ্ডের কপাটিকার গুরুত্ব কী ?
উত্তর:
হৃৎপিণ্ডে দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্তের মিশ্রণ প্রতিহত করার জন্য এবং হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে রক্তপ্রবাহ একমুখী করার জন্য হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন ছিদ্রপথে কপাটিকা (valve) থাকে।
প্রশ্ন:১০
বাম নিলয় প্রাচীর ডান নিলয় প্রাচীর অপেক্ষা বেশি (প্রায় তিনগুণ) পুরু হয় কেন ?
উত্তর:
বাম নিলয়কে ধমনি রক্তচাপের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয় যা নিলয় রক্তচাপের চেয়ে বেশি এবং এর সংকোচনে সারাদেহে রক্ত প্রবাহিত হয়। অপরপক্ষে, ডান নিলয়ের সংকোচনে রক্ত কেবল হৃৎপিণ্ড থেকে ফুসফুসে পৌঁছােয়।

Comments
Post a Comment