Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য

বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারত-ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এক মহাদেশের সারাংশ (Epitome of the World)                        ভারতবর্ষ শুধুমাত্র একটি দেশ নয়, এটি একটি উপ-মহাদেশের সমতুল্য। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, নৃতাত্ত্বিক ভিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক বিপুলতা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাসে যে "অন্তর্নিহিত মৌলিক ঐক্য" ( Fundamental Unity ) বারবার প্রকাশিত হয়েছে, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে যথার্থই " India offers unity in diversity " বা "বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য" বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের মিলনকেন্দ্র হওয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষকে "মহামানবের সাগরতীর" নামে অভিহিত করেছেন। ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যের স্বরূপ (The Nature of Diversity)                  ভারতের বৈচিত্র্যকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক বৈচিত্র্য: ভূ-প্রকৃতি:                     উত্...

জীববিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-মানব শারীরবিদ্যা, সেট-৩৮

মানব শারীরবিদ্যা


প্রশ্ন:১
বয়ঃসন্ধিকালের পরে অতিরিক্ত বৃদ্ধি হরমােন ক্ষরিত হলে কী কী লক্ষণ দেখা যায় ?

উত্তর: 
বয়ঃসন্ধিকালের পরে অর্থাৎ দেহের লম্বা অস্থিগুলির এপিফাইসিস তাদের স্যাফট-এর সঙ্গে মিশে যাওয়ার পরে যদি বৃদ্ধি হরমােন বেশি পরিমাণে ক্ষরিত হয় তবে অস্থিগুলি প্রস্থে বেড়ে যায় কিন্তু দৈর্ঘ্যে বাড়ে না। এই অবস্থাকে বলা হয় অ্যাক্রোমেগালি।
এই রােগের লক্ষণগুলি হল—
(i) হাত ও পায়ের অস্থিগুলির স্থূলতা বেড়ে যায়। 
(ii) করােটি, নাক, মাথার অগ্রভাগ (forehead) ইত্যাদি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। 
(iii) নীচের চোয়াল সামনের দিকে বেড়ে যায়। 
(iv) হাতের আঙুলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য হাতের আকার প্রায় দ্বিগুণ হয়। 
(v) পায়ের আকার এমন বেড়ে যায় যে 14 নম্বর সাইজের জুতা পরতে হয়। 
(vi) সুপ্রাঅরবিটাল (Supraorbital) খাঁজের বৃদ্ধির জন্য মাথার অগ্রভাগ 1.5 ইঞ্চি বেড়ে যায়। 
(vii) কশেরুকার পরিবর্তন হয়, এর ফলে পিঠ সামনের দিকে সামান্য হলে যায়, একে বলা হয় কাইফোসিস (Kyphosis)।


প্রশ্ন:২
ক্রেটিনিজমের প্রধান লক্ষণগুলি উল্লেখ করাে।

উত্তর: 
ক্রেটিনিজমের উল্লেখযােগ্য লক্ষণগুলি হল—
(i) শিশুর মাথা তুলে রাখা, কথা বলা, দাঁড়ানাে, দন্তোদগম ইত্যাদি সবই বিলম্বিত হয়। 
(ii) ত্বক খসখসে, কর্কশ, স্থূল ও কোঁচকানাে হয় এবং ত্বকে লােম কম থাকে। 
(iii) মুখ থেকে অনবরত লালা নিঃসরণ হয় (dribbling of saliva) এবং পেট বড়ো হয়ে যায় (pot-bellied)। 
(iv) খিদে কমে যায় এবং পাক-অন্ত্ৰীয় নালির সঞ্চালন (gastro-intestinal motility) হ্রাস পায়। 
(v) মানসিক বিকাশ (mental development) সঠিক না হওয়ায় শিশু জড়বুদ্ধিসম্পন্ন হয় এবং মুখমণ্ডলে বােকা ভাব (idiotic appearance) লক্ষ করা যায়।


প্রশ্ন:৩
রক্তে ক্যালশিয়ামের মাত্রা হ্রাস পেলে কী ঘটে ?

উত্তর: 
রক্তে ক্যালশিয়ামের মাত্রা হ্রাস পেলে (স্বাভাবিক 9.4 মি গ্রাম/ডেসিলি থেকে 6 বা 7 মিগ্রাম/ডেসিলিটারে পৌঁছােলে) ধনুষ্টংকার বা টিটেনি রােগের লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়।


প্রশ্ন:৪
ক্যালশিটোনিনের উৎস ও শারীরবৃত্তীয় কাজ লেখাে।

উত্তর: 
ক্যালশিটোনিন বা থাইরােক্যালশিটোনিন থাইরয়েড গ্রন্থির মাইটোকন্ড্রিয়া সমৃদ্ধ প্যারাফলিকুলার কোশ (C কোশ) দ্বারা ক্ষরিত হয়।
শারীরবৃত্তীয় কাজ—ক্যালশিটোনিন-এর প্রধান কাজ প্লাজমা ক্যালশিয়াম ও ফসফেটের মাত্রা হ্রাস করা। ক্যালশিটোনিন-এর প্রধান ক্রিয়াস্থল হল অস্থি এবং এটি অস্থি থেকে ক্যালশিয়াম নির্গমন প্রতিরােধ করে। এইভাবে এটি রক্তে ক্যালশিয়াম-এর মাত্রা হ্রাস করে। তা ছাড়া ক্যালশিটোনিন মূত্রের মাধ্যমে ক্যালশিয়াম-এর রেচন বৃদ্ধি করে এবং রক্তের ফসফেটের মাত্রাও হ্রাস করে থাকে।


প্রশ্ন:৫
দেহে আয়ােডিন বিপাকে থাইরক্সিনের ভূমিকা কী ?

উত্তর: 
থাইরক্সিন প্লাজমা থেকে অজৈব আয়ােডিনের শােষণে, আয়ােডাইডের আয়ােডিনে জারিত হতে এবং মনােআয়ােডােটাইরােসিন (MIT) ও ডাইআয়ােডােটাইরােসিন (DIT) গঠনে সাহায্য করে।


প্রশ্ন:৬
খাদ্যে আয়ােডিনের অভাবজনিত লক্ষণ কী ?

উত্তর: 
পৃথিবীর কোনাে কোনাে অঞ্চলের (যেমন—আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হ্রদ অঞ্চল) মাটিতে আয়ােডিন অপর্যাপ্ত থাকায় সেইসব অঞ্চলের খাদ্যসামগ্রীতে আয়ােডিন কম থাকে। তাই সেখানকার লােকদের থাইরয়েড গ্রন্থি মারাত্মকভাবে বড়াে হয়ে যায়। আয়ােডিনের অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থির বৃদ্ধিজনিত এই অবস্থাকে বলা হয় আঞ্চলিক গলগণ্ড (endemic goitre)।


প্রশ্ন:৭
গ্রেভস রােগ (Grave's disease) বা স্ফীতনেত্র গলগন্ড (exophthalmic goitre) কেন হয় ?

উত্তর: 
থাইরয়েড স্টিমুলেটিং ইমিউনােগ্লোবিউলিন (TSI)-এর ক্রিয়ায় থাইরয়েড গ্রন্থির অতি সক্রিয়তায় এবং থাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার সৃষ্টি হলে থাইরয়েড হরমােনের ক্ষরণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। এর ফলে থাইরয়েড গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি পায় (নােডিউলার প্রকৃতির বৃদ্ধি)। তা ছাড়া অক্ষিগােলকের বহিঃস্ফীতি লক্ষ করা যায়। এই অবস্থাকে বলা হয় গ্রেভস রােগ বা স্ফীতনেত্র গলগণ্ড (exophthalmic goitre)।


প্রশ্ন:৮
মিক্সিডিমার প্রধান কয়েকটি লক্ষণ উল্লেখ করাে।

উত্তর: 
মিক্সিডিমার লক্ষণগুলি হল—
(i) অবসাদ এবং তন্দ্রাচ্ছন্নভাব, দিনে 12 থেকে 14 ঘণ্টা ঘুম। 
(ii) BMR মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। 
(iii) চূড়ান্ত পেশি নিষ্ক্রিয়তা দেখা যায়। 
(iv) হৃৎস্পন্দন হার ও হার্দ-উৎপাদ হ্রাস পায়। 
(v) রক্তের আয়তন হ্রাস পায় এবং কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে দেহের ওজন বেড়ে যায়। 
(vi) চুলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ত্বক খসখসে হয়। 
(vii) মানসিক অবসাদ ও কোষ্ঠকাঠিন্য পরিলক্ষিত হয়। 
(viii) মুখমণ্ডল ফুলে যায়। 
(ix) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়; এর ফলে অ্যাথেরােস্ক্লেরােসিস (atherosclerosis) ও আর্টারিওস্ক্লেরােসিস (arteriosclerosis) হয়।


প্রশ্ন:৯
থাইরয়েড গ্রন্থির স্বল্প সক্রিয়তা (Hypothyroidism) জনিত অস্বাভাবিক অবস্থা কী ?

উত্তর: 
থাইরয়েড গ্রন্থির স্বল্প সক্রিয়তায় শিশুদের ক্রেটিনিজম (Cretinism) ও বয়স্কদের মিক্সিডিমা (Myxoedema) রােগ হয়।
ক্রেটিনিজম জন্মগত থাইরয়েড গ্রন্থির অনুপস্থিতি (Congenital lack of thyroid gland), থাইরয়েড গ্রন্থির হরমােন ক্ষরণে ব্যর্থতা অথবা খাদ্যে আয়ােডিনের অভাবের ফলে হয়ে থাকে। অপরপক্ষে, মিক্সিডিমা বয়স্কদের থাইরয়েড গ্রন্থির স্বল্প সক্রিয়তার জন্য হয়ে থাকে।


প্রশ্ন:১০
যৌনক্রিয়ায় থাইরয়েড হরমােনের প্রভাব কী ?

উত্তর: 
স্বাভাবিক যৌনক্রিয়ার জন্য দেহে থাইরয়েড হরমােনের স্বাভাবিক মাত্রা থাকা প্রয়ােজন। পুরুষের দেহে থাইরয়েড হরমােনের স্বল্পতা কাম (libido) হ্রাস করে এবং স্বল্প থাইরয়েড ক্রিয়াসম্পন্ন মহিলাদেরও কাম প্রবণতা কম থাকে।

Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—

গ্রস্ত উপত্যকা

গ্রস্ত উপত্যকা দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ বসে গেলে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে। এছাড়া, মহীভাবক আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠে সংকোচন ও প্রসারণ বলের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ভূপৃষ্ঠের কঠিন শিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে পুনরায় ভূ-আন্দোলন ঘটলে বা ভূ-আলোড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ফাটল রেখা বরাবর শিলার একটি অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, একে চ্যুতি বলে। সংনমন বল বৃদ্ধি পেলে দুটি চ্যুতির মাঝের অংশ খাড়াভাবে নীচে বসে যায়। অবনমিত, ওই অংশকে বলে গ্রস্ত উপত্যকা। 

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

  স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য Sl. No. স্থলবায়ু সমুদ্রবায়ু 1 স্থলবায়ু মূলত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবায়ু মূলত উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির হয়। 2 স্থলবায়ু প্রধানত রাত্রিবেলায় প্রবাহিত হয়। সমুদ্রবায়ু প্রধানত দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়। 3 সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুর প্রবাহ শুরু হয় ও রাত্রির শেষদিকে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়। সূর্যোদয়ের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুরপ্রবাহ শুরু হয় ও অপরাহ্নে বায়ুপ্রবাহে বেগ বৃদ্ধি পায়। 4 স্থলবায়ু উচ্চচাযুক্ত স্থলভাগ থেকে নিম্নচাপযুক্ত জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে স্থলবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমুদ্রবায়ু উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে নিম্নচাপযুক্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে সমুদ্রবায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। 5 স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবার দরুন বেগ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ প্রবাহিত হ...

আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য

  আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন মধ্যে পার্থক্য Sl. No. আবহবিকার ক্ষয়ীভবন 1 আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যেমন—উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, জলীয় বাষ্প, তুষারপাত ও বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান দ্বার শিলাসমূহের চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া বা বিয়োজনকে আবহবিকার বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি, যেমন—নদী, বায়ু, হিমবাহ, ইত্যাদি দ্বারা আবহবিকারপ্রাপ্ত চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহের অপসারণকে ক্ষয়ীভবন বলে। 2 আবহবিকারের ফলে মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের (গঠন, আকৃতি, খনিজের আণবিক সজ্জা প্রভৃতি) পরিবর্তন ঘটে । ক্ষয়ীভবনের ফলে ভূমিরূপের পরিবর্তন সাধিত হয়। কিন্তু মূল শিলার বৈশিষ্ট্যের কোনো পরিবর্তন সাধন হয় না। 3 আবহবিকার কোনোভাবে ক্ষয়ীভবনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ক্ষয়ীভবন সম্পূর্ণরূপে আবহবিকারের ওপর নির্ভরশীল। আবহবিকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে না। 4 আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ শিলাসমূহ শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মূল শিলাস্তরের ওপরেই অবস্থান করে। ক্ষয়ীভবনের ফলে আবহবিকার প্রাপ্ত শিলাচূর্ণ স্থানান্তরি...

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা ‘মেখলা’ শব্দের মানে হল ‘কোমর বন্ধনী’। অসংখ্য আগ্নেয়গিরি মেখলা বা কোমর বন্ধনীর আকারে কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যখন অবস্থান করে, তখন তাকে ‘আগ্নেয় মেখলা’ বলা হয়। ভূবিজ্ঞানীর মতে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে ও এশীয় মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে পাত সীমায় ফাটল বরাবর অগ্ন্যুৎপাত ঘটে থাকে এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। 

ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য

  ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য Sl. No. ভরা কোটাল মরা কোটাল 1 চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ পৃথিবীর একই স্থানের উপর কার্যকরী হয়, ফলে ভরা কোটালের সৃষ্টি হয়। চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য সমকোণী অবস্থানে থাকলে পৃথিবীর উপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী হয়, ফলে মরা কোটালের সৃষ্টি হয়। 2 মানবজীবনের উপর ভরা কোটালে (নদী-মোহানা, নৌ-চলাচল, মাছ আহরণ ইত্যাদি)-র প্রভাব বেশি। মানবজীবনের উপর মরা কোটালের প্রভাব কম। 3 ভরা কোটাল হয় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে। মরা কোটাল হয় শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। 4 ভরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতল সবচেয়ে বেশী স্ফীত হয়। মরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতলের স্ফীতি সবচেয়ে কম হয়। 5 অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চাঁদ ও সূর্য অবস্থান করে। পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চাঁদের মাঝে পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমীত...

স্প্রিং তুলা ও সাধারণ তুলার মধ্যে পার্থক্য কী ?

স্প্রিং তুলা ও সাধারণ তুলার মধ্যে পার্থক্য - স্প্রিং তুলা সাধারণ তুলা 1. স্প্রিং তুলা দিয়ে বস্তুর ভার বা ওজন মাপা হয়। 1. সাধারণ তুলায় বস্তুর ভর মাপা হয়। 2. খুব ভারী বস্তুর ওজন মাপা যায় না। 2. ভারী বস্তুর ভর মাপা যায়। 3. স্প্রিং তুলায় একটি বস্তুর ওজনের পাঠ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়। 3. সাধারণ তুলায় একটি বস্তুর ভরের ক্ষেত্রে সব স্থানে একই পাঠ পাওয়া যায়। 4. স্প্রিং তুলা যে স্থানে অংশাঙ্কিত হয় শুধু সেই স্থানে সঠিক পাঠ দেয়। 4. সাধারণ তুলা সব স্থানে সঠিক পাঠ দেয়। 5. স্প্রিং তুলার কার্যনীতি পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের জন্য স্প্রিং-এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। 5. সাধারণ তুলা প্রথম শ্রেণির লিভারের নীতি অনুযায়ী কাজ করে।

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন প্রবর্তন সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর–জেনারেল লর্ড লিটন দেশীয় পত্রপত্রিকার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (Vernacular Press Act, 1878) জারি করেন। পটভূমি ঊনবিংশ শতকে দেশীয় সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, দেশীয় সম্পদের বহির্গমন, দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ এ.আর.দেশাইয়ের মতে, “ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে সংবাদপত্র হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম”।

হিমানী সম্প্ৰপাত

হিমানী সম্প্ৰপাত           পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পার্বত্য অঞ্চলে তুষারক্ষেত্রের জমাট বাঁধা বরফ অত্যন্ত ধীরগতিতে পর্বতের ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসতে থাকে। সময় সময় পাহাড়ের ঢালে চলমান এইরকম হিমবাহ থেকে বিশাল বরফের স্তূপ ভেঙে বিপুলবেগে নীচের দিকে পড়তে দেখা যায়, একে হিমানী সম্প্রপাত বলে।