নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের নীচের দিকে ক্ষয়কাজ বেশি করে বলে নদী-খাত প্রথমে '।'
ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন
প্রশ্ন:১
হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার দুটি পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার দুটি পার্থক্য হল—
(i) হরপ্পা সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক, কিন্তু বৈদিক সভ্যতা ছিল গ্রামীণ।
(ii) হরপ্পা সভ্যতায় সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক, কিন্তু বৈদিক সভ্যতায় সমাজ ছিল পিতৃতান্ত্রিক।
প্রশ্ন:২
বৈদিক যুগে স্তোত্র রচনা করেছেন এমন দুজন নারীর নাম করো।
উত্তর:
বৈদিক যুগে স্তোত্র রচনাকারী দুজন নারী হলেন—(i) ঘোষা এবং (ii) লোপামুদ্রা। বেদের মন্ত্র রচনা করতেন বলে তাঁদের ব্রহ্মবাদিনী বলা হত।
প্রশ্ন:৩
আর্যরা ভারতের কোথায় প্রথম বসতি স্থাপন করেছিল ?
উত্তর:
আর্যরা ভারতে প্রথম সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে তাদের বসতি স্থাপন করেছিল। সপ্তসিন্ধু বলতে আফগানিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের পশ্চিম সীমান্ত নিয়ে এক অখণ্ড অঞ্চলকে বোঝায়।
প্রশ্ন:৪
চতুরাশ্রম কী ?
উত্তর:
ঋগ্বৈদিক যুগে আর্যদের ব্যক্তিজীবন যে চারটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল, তাকে চতুরাশ্রম বলে। চতুরাশ্রম হল—(i) ব্রক্ষ্মচর্য, (ii) গার্হস্থ্য, (iii) বানপ্রস্থ এবং (iv) সন্ন্যাস।
প্রশ্ন:৫
হরপ্পা সভ্যতার কোথায় স্নানাগার ও শস্যাগার আবিষ্কৃত হয়েছে ?
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার মহেন-জো-দারোতে স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছে। শস্যাগার আবিষ্কৃত হয়েছে হরপ্পায়।
প্রশ্ন:৬
বৈদিক যুগের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
বৈদিক যুগের দুটি বৈশিষ্ট্য হল—(i) পরিবার ছিল পিতৃতান্ত্রিক। (ii) সমাজে চতুরাশ্রম প্রথা চালু ছিল।
প্রশ্ন:৭
বৈদিক যুগে বর্ণভেদ প্রথা কীরকম ছিল ?
উত্তর:
ঋগ্বৈদিক সমাজে কর্ম অনুযায়ী ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র এই চার বর্ণের মানুষের কথা জানা যায়। ব্রাহ্মণরা ছিলেন সমাজের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তারপর ছিল যথাক্রমে ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের আধিপত্য। শূদ্ররা এই তিন বর্ণের মানুষের সেবা করত।
প্রশ্ন:৮
আর্যদের আদি বাসস্থান কোথায় ছিল ?
উত্তর:
আর্যদের আদি বাসস্থান নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক আছে। অধিকাংশ পণ্ডিত এ সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ববিদ ব্র্যান্ডেনস্টাইনের মতকে মেনে নিয়েছেন। ব্র্যান্ডেনস্টাইনের মতে, বর্তমান রাশিয়ার অন্তর্গত কিরঘিজ স্তেপ বা তৃণভূমি অঞ্চলই ছিল আর্যদের আদি বাসভূমি।
প্রশ্ন:৯
আর্য সভ্যতাকে বৈদিক সভ্যতা বলা হয় কেন ? এই সভ্যতা কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী ?
উত্তর:
আর্য সভ্যতা বেদকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল বলে, এই সভ্যতাকে বৈদিক সভ্যতা বলা হয়। এই সভ্যতা দু-ভাগে বিভক্ত—ঋগ্বৈদিক সভ্যতা ও পরবর্তী বৈদিক সভ্যতা।
প্রশ্ন:১০
হরপ্পা সভ্যতার সমসাময়িক বিশ্বের দুটি নগরসভ্যতার নাম উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার সমসাময়িক বিশ্বের দুটি নগরসভ্যতার নাম হল—
(i) মেসোপটেমীয় সভ্যতা ও
(ii) মিশরীয় সভ্যতা। এই সভ্যতাগুলি ছিল তাম্র-প্রস্তর যুগের নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা।
Comments
Post a Comment