ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝো? ইতিহাসের উপাদানগুলির শ্রেণিবিভাগ করো। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় মুদ্রার গুরুত্ব বিস্তারিত আলোচনা করো। ১. ইতিহাসের উপাদান ইতিহাস হলো মানব সভ্যতার অগ্রগতির ধারাবাহিক বিবরণ। কিন্তু এই বিবরণ কল্পনাপ্রসূত নয়; এটি নির্ভর করে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণের ওপর। যে সমস্ত উৎস, সাক্ষ্য বা প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ঐতিহাসিকরা অতীত দিনের ঘটনাবলী পুনর্গঠন করেন, তাকেই 'ইতিহাসের উপাদান' (Sources of History) বলা হয়। উপাদান ছাড়া ইতিহাস রচনা করা অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার শামিল। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বা আর. সি. মজুমদার সকলেই একমত যে, প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের ক্ষেত্রে উপাদানের গুরুত্ব অপরিসীম। ২. ইতিহাসের উপাদানের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Historical Sources) ইতিহাসের উপাদানগুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়— (ক) সাহিত্যিক উপাদান এবং (খ) প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান। তবে আধুনিক যুগে এর সাথে আরও কিছু বিষয় যুক্ত হয়েছে। নিচে এর বিস্তারিত দেওয়া হলো: ক) সাহিত্যিক উপাদান (Literary Sources):...
ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন
প্রশ্ন:১
হরপ্পা সভ্যতার কয়েকটি প্রধান কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার কয়েকটি প্রধান কেন্দ্র হল—(i) হরপ্পা, (ii) মহেন-জো-দারো, (iii) আলমগীরপুর (উত্তরপ্রদেশ), (iv) কালিবঙ্গান (রাজস্থান), (v) লোথাল (গুজরাট), (vi) রূপার (হরিয়ানা), (vii) সুতকাজেন-দোর ইত্যাদি।
প্রশ্ন:২
হরপ্পা ও মহেন-জো-দারো কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর:
হরপ্পা বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের পশ্চিম পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলায় অবস্থিত। মহেন-জো-দারো বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন:৩
মেহেরগড় কোথায় অবস্থিত ?
উত্তর:
মেহেরগড় বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের বালুচিস্তানের বোলান নদীর তীরে (বোলান গিরিপথের কাছে এবং কোয়েটা শহর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে ৫০০ একর এলাকা জুড়ে) অবস্থিত।
প্রশ্ন:৪
হরপ্পা সভ্যতার নগরপরিকল্পনার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার নগরপরিকল্পনার দুটি বৈশিষ্ট্—
(i) রাস্তা—হরপ্পা সভ্যতার প্রধান রাস্তা দুটি ছিল উত্তর থেকে দক্ষিণ ও পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত। এগুলি ছিল ৯ থেকে ৩৪ ফুট পর্যন্ত চওড়া।
(ii) পয়ঃপ্রণালী—হরপ্পা সভ্যতার বাড়িগুলির নোংরা জল বড়ো রাস্তার আচ্ছাদিত নর্দমায় এসে পড়ত এবং শহরের বাইরে বেরিয়ে যেত।
প্রশ্ন:৫
সিন্ধু সভ্যতা নামকরণের তাৎপর্য কী ?
উত্তর:
সিন্ধু সভ্যতা সিন্ধু নদ ও তাঁর পাঁচটি উপনদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। খননকার্যের দ্বারা এই সভ্যতার প্রথম দুটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হরপ্পা ও মহেন-জো-দারো সিন্ধু নদের তীরে আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই এই সুপ্রাচীন অনার্য সভ্যতার নামকরণ হয়েছে সিন্ধু সভ্যতা।
প্রশ্ন:৬
হরপ্পা সভ্যতার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার দুটি বৈশিষ্ট্য হল—(i) হরপ্পা সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক। (ii) হরপ্পা সভ্যতা ছিল তাম্র-প্রস্তর যুগের (Chalcolithic age)।
প্রশ্ন:৭
হরপ্পা সভ্যতা কত খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত হয় ? হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কারক কারা ?
উত্তর:
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়। হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কারক হলেন রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, দয়ারাম সাহানি প্রমুখ।
প্রশ্ন:৮
হরপ্পা সভ্যতার পতনের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর:
হরপ্পা সভ্যতার পতনের সম্ভাব্য বিভিন্ন কারণের মধ্যে দুটি কারণ হল—
(i) প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যথা—ভূমিকম্প, বন্যা, অনাবৃষ্টি প্রভৃতি।
(ii) বৈদেশিক আক্রমণ—অনেক ঐতিহাসিক আর্যদের হরপ্পা সভ্যতার আক্রমণকারী বলে চিহ্নিত করেন।
প্রশ্ন:৯
হরপ্পা ও মহেন-জোদারোতে কোন্ যুগের সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়েছে ?
উত্তর:
হরপ্পা ও মহেন-জো-দারোতে তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানকার অধিবাসীরা পাথরের পাশাপাশি তামা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে তাদের হাতিয়ার ও সরঞ্জাম তৈরি করত বলে এই সভ্যতাকে তাম্র-প্রস্তর যুগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রশ্ন:১০
সিন্ধু সভ্যতাকে এখন হরপ্পা সভ্যতা বলা হয় কেন ?
উত্তর:
সিন্ধু অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে খননকার্য চালিয়ে যেসব নিদর্শন পাওয়া গেছে, তার মধ্যে হরপ্পায় পাওয়া নিদর্শনগুলি সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া এই সভ্যতার অধিকাংশ কেন্দ্রের নিদর্শনগুলির সঙ্গে হরপ্পায় পাওয়া নিদর্শনগুলির অদ্ভুত মিল রয়েছে। তাই সিন্ধু সভ্যতাকে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়।
Comments
Post a Comment