নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
কোশের গঠন এবং কাজ
প্রশ্ন:১
রাইবােজোমের ও ক্যারিওজোম-এর মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
কোশের সাইটোপ্লাজমে মুক্তভাবে বা এন্ডােপ্লাজমীয় জালিকার গায়ে ও নিউক্লীয় পর্দার গায়ে অবস্থিত প্রােটিন সংশ্লেষে অংশগ্রহণকারী রাইবােপ্রােটিন নির্মিত যে দানা বা কণিকা দেখা যায় তাদের রাইবােজোম (Ribosome) বলে। অপরপক্ষে, সহজে বর্ণযুক্ত করা যায় নিউক্লিয়াসমধ্যস্থ এমন গােলাকার ক্রোমাটিন বস্তুকে ক্যারিওজোম (Karyosome) বলে।
প্রশ্ন:২
কোন্ প্রকার কোশে অধিক সংখ্যক গলগি বডি এবং কোন্ প্রকার কোশে অধিক সংখ্যক লাইসােজোম পাওয়া যায় ?
উত্তর:
ক্ষরণকারী কোশে গলগি বডি অধিকসংখ্যায় থাকে। শ্বেতকণিকা ও ম্যাক্রোফ্যাজে অধিকসংখ্যায় লাইসােজোম থাকে।
প্রশ্ন:৩
প্রােক্যারিওট ও ইউক্যারিওট কাদের বলে ? প্রত্যেকের উদাহরণ দাও।
উত্তর:
আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত জীবকে প্রােক্যারিওট (Prokaryote) এবং আদর্শ নিউক্লিয়াসযুক্ত জীবকে ইউক্যারিওট (Eukaryote) বলে।
ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ-সবুজ শৈবাল, মাইকোপ্লাজমা ইত্যাদি প্রােক্যারিওট এবং উন্নত শ্রেণির উদ্ভিদ ও প্রাণী হল ইউক্যারিওট।
প্রশ্ন:৪
নিউক্লিওয়েড বা জেনােফোর কী ?
উত্তর:
ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লীয় পদার্থে অবস্থিত প্যাঁচালাে, গােলাকার দ্বিতন্ত্রী DNA-কে নিউক্লিওয়েড বা জেনােফোর (Nucleoid or genophore) বলা হয়।
প্রশ্ন:৫
ক্যারিওজোম ও ক্রোমােজোমের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
কোশের নিউক্লিয়াসের মধ্যে যেসব গােলাকার ক্রোমাটিন পদার্থ থাকে তাদের ক্যারিওজোম (Karyosome) বলে। পক্ষান্তরে, কোশ বিভাজনের সময় ক্রোমাটিন সূত্র থেকে যে দণ্ডকার বা সূত্রাকার অংশগুলি সৃষ্টি হয় তাদের ক্রোমােজোম (Chromosome) বলে।
প্রশ্ন:৬
মাইক্রোটিউবিউল ও মাইক্রোফিলামেন্টের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
কোশের সাইটোপ্লাজমে দীর্ঘ ও ফাঁপা প্রায় 25 nm ব্যাসসম্পন্ন যেসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নলাকার অংশগুলি থাকে তাদের মাইক্রোটিউবিউল (Microtubule) বলে। অপরপক্ষে, কোশে 4-6 nm ব্যাসসম্পন্ন যেসব অতি সূক্ষ্ম তন্তু থাকে তাদের মাইক্রোফিলামেন্ট (Microfillament) বলে। এরা প্রধানত অ্যাকটিন ও মায়ােসিন নামক প্রােটিন দিয়ে গঠিত। মাইক্রোটিউবিউল কোশ বিভাজনের সময় বেমতন্তু হিসেবে উপস্থিত হয় এবং ক্রোমােজোমের চলনে সহায়তা করে। মাইক্রোফিলামেন্ট পেশির সংকোচন-প্রসারণে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে।
প্রশ্ন:৭
মাইটোকন্ড্রিয়া ও মাইক্রোজোমের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা দ্বি-একক পর্দাবেষ্টিত দণ্ডাকার বা সূত্রাকার যেসব অঙ্গাণু কোশের প্রয়ােজনীয় শক্তি উৎপাদন করে, তাদের মাইটোকন্ড্রিয়া (Mitochondria) বলে।
অপরপক্ষে, কোশীয় উপাদানকে কেন্দ্রাতিগ যন্ত্রের সাহায্য তীব্র বেগে ঘােরালে যেসব আণুবীক্ষণিক কণা পৃথক হয়ে পড়ে, তাদের মাইক্রোজোম (Microsome) বলে।
প্রশ্ন:৮
গলগি বডি ও নিজল্ বডির মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
কোশের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের কাছে একক পদাবেষ্টিত চ্যাপটা থলির মতাে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গহ্বরের মতাে যেসব অঙ্গাণু দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে কোশের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের গলগি বডি (Golgi body) বলে।
অপরপক্ষে, স্নায়ুকোশের অ্যাক্সন হিলক (axon hillock) ও অ্যাক্সন ছাড়া কোশের সর্বত্র যে ক্ষারযুক্ত নিউক্লিওপ্রােটিন দানা ছড়িয়ে থাকে তাদের নিজল্ বডি (Nissle body) বলে। এগুলি স্নায়ুপ্রবাহে অংশগ্রহণ করে।
প্রশ্ন:৯
এন্ডােপ্লাজমিক রেটিকিউলাম ও সারকোপ্লাজমিক রেটিকিউলাম বলতে কী বােঝাে ?
উত্তর:
আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে ছড়িয়ে থাকা একক পদাবেষ্টিত যে নালিকাগুলি কোশকে অনেকগুলি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত করে তাদের এন্ডােপ্লাজমিক রেটিকিউলাম (Endoplasmic reticulum) বলে। অপরপক্ষে, পেশিকোশের সাইটোপ্লাজমে (সারকোপ্লাজম) অবস্থিত নালিকাগুলিকে সারকোপ্লাজমিক রেটিকিউলাম (Sarcoplasmic reticulum) বলে।
প্রশ্ন:১০
সেন্ট্রোজোম ও লাইসােজোমের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করাে।
উত্তর:
প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের কাছে সেন্ট্রোস্ফিয়ার ও সেন্ট্রিওল নিয়ে গঠিত যে অঙ্গাণু কোশ বিভাজনকালে বেমতন্তু গঠন করে, তাকে সেন্ট্রোজোম (Centrosome) বলে।
অপরপক্ষে, প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজমে একক পর্দাবেষ্টিত উৎসেচকপূর্ণ যে অঙ্গাণু সমস্ত কোশাভ্যন্তরীয় পাচনে অংশগ্রহণ করে, তাদের লাইসােজোম (Lysosome) বলে।
Comments
Post a Comment