Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

আঞ্চলিক ভূগোলের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা ও কৃষিজ ফসল, সেট-২

ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা ও কৃষিজ ফসল


প্রশ্ন:১
প্লাবন খাল কাকে বলে ?

উত্তর: 
বর্ষার সময় যে খাল প্লাবনের জলে পুষ্ট হয় তাকে প্লাবন খাল বলে। বর্ষাঋতুতে নদীতে জলস্ফীতি ঘটলে অতিরিক্ত জল খালের মাধ্যমে প্রবাহিত হয় যা সেচের কাজে ব্যবহৃত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের হিজলী খাল, তামিলনাড়ুর কাবেরী বদ্বীপ খাল প্রভৃতি হল ভারতের কয়েকটি প্লাবন খালের উদাহরণ।


প্রশ্ন:২
দামােদর উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী কী ?

উত্তর: 
দামােদর উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল—
(i) বন্যা নিয়ন্ত্রণ, 
(ii) জলসেচ ব্যবস্থার উন্নতি, 
(iii) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টন, 
(iv) নৌপরিবহণ, 
(v) উপত্যকার পার্শ্ববর্তী ভূমিক্ষয় রােধ ও বনভূমি সংরক্ষণ, 
(vi) মৎস্যচাষ, 
(vii) জলক্রীড়া ও আমােদ-প্রমােদ।


প্রশ্ন:৩
বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা কাকে বলে ? 

উত্তর: 
যে পরিকল্পনার মাধ্যমে নদীতে বাঁধ দিয়ে, নদীর জলকে কাজে লাগিয়ে জলসেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জল পরিবহণ, ভূমিক্ষয় রােধ, মৎস্যচাষ প্রভৃতি একাধিক উদ্দেশ্য একই সঙ্গে সিদ্ধ হয় এবং নদী উপত্যকা অঞ্চলের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধিত হয় তাকে বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা বলে। 
যেমন—দামােদর উপত্যকা পরিকল্পনা, ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা প্রভৃতি।


প্রশ্ন:৪
ভারতের কোথায় কোথায় খাল পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয় ?

উত্তর: 
উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, বিহার, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কেরল, তামিলনাড়ু প্রভৃতি রাজ্যে খাল পদ্ধতির মাধ্যমে জলসেচ করা হয়।


প্রশ্ন:৫
জলসেচ কী ?

উত্তর: 
কোনাে নির্দিষ্ট জমিতে সুষ্ঠুভাবে অধিক পরিমাণে ফসল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রয়ােজনমতাে জল সরবরাহকে জলসেচ বলা হয়।


প্রশ্ন:৬
খালের মাধ্যমে জলসেচের দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করাে।

উত্তর: 
👉খালের মাধ্যমে জলসেচের দুটি সুবিধা হল—
(i) খালের সাহায্যে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলসেচ করা সম্ভব। 
(ii) খালের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ পলি কৃষিজমিতে জমা হয়। ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
👉খালের মাধ্যমে জলসেচের দুটি অসুবিধা হল—
(i) বর্ষার সময় খালে জলস্ফীতি ঘটলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল প্লাবিত হয়। 
(ii) খালের মাধ্যমে জমিতে অতিরিক্ত জল ব্যবহারের ফলে মাটিতে লবণতার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।


প্রশ্ন:৭
নিত্যবহ খাল কাকে বলে ?

উত্তর: 
বরফগলা জলে পুষ্ট নদী থেকে বা কৃত্রিম জলাশয় থেকে কাটা খালকে নিত্যবহ খাল বলে। এই খালগুলিতে সারা বছর জল থাকে বলে বছরের সবসময় এই খালের মাধ্যমে জলসেচ করা যায়। উত্তরপ্রদেশের উচ্চগঙ্গা খাল, আগ্রা খাল, পশ্চিমবঙ্গের ইডেন খাল প্রভৃতি হল ভারতের কয়েকটি নিত্যবহ খালের উদাহরণ।


প্রশ্ন:৮
পুকুর বা জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচের প্রধান দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করাে।

উত্তর: 
👉পুকুর বা জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচের প্রধান দুটি সুবিধা হল—
(i) যেসব স্থানে মাটি খুঁড়ে কূপ বা নলকূপ খনন করা সম্ভব নয় সেসব স্থানে পুকুর বা জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা সুবিধাজনক, 
(ii) ভূভাগ অপ্রবেশ্য শিলা দ্বারা গঠিত হলে বৃষ্টির জল ভূগর্ভে প্রবেশ করতে পারে না ফলে পুকুর বা জলাশয়ে সারাবছর জল ধরে রাখা সম্ভব হয়।
👉পুকুর বা জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচের প্রধান দুটি অসুবিধা হল—
(i) পুকুর বা জলাশয় নির্মাণ করতে প্রচুর চাষযােগ্য জমি নষ্ট হয়। 
(ii) গ্রীষ্মকালে অনাবৃষ্টির সময় জলাশয়ে জলের পরিমাণ খুব কমে যায় এবং বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে জলাশয়ের বাঁধ ভেঙে যাবার আশঙ্কা থাকে।


প্রশ্ন:৯
ভারতের কোথায় কোথায় কূপ পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয় ?

উত্তর: 
উত্তর-পূর্ব ভারতের পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটকের নদী উপত্যকার পলিগঠিত অঞ্চলে কূপ পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়।


প্রশ্ন:১০
কূপ ও নলকূপের সাহায্যে জলসেচের প্রধান দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তর: 
👉কূপ ও নলকূপের সাহায্যে জলসেচের প্রধান দুটি সুবিধা হল—
(i) সারা বছর ধরে সবসময় সেচের জল পাওয়া যেতে পারে। 
(ii) অল্প মূলধন বিনিয়ােগ করে জলসেচ করা যায় যা ক্ষুদ্র ও ছােটো চাষিদের পক্ষে সুবিধাজনক।
👉কূপ ও নলকূপের সাহায্যে জলসেচের প্রধান দুটি অসুবিধা হল—
(i) অত্যধিক জল তােলার জন্য ভৌম জলস্তর নীচে নেমে যায়। 
(ii) কূপের জলে লবণের ভাগ বেশি থাকে বলে মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায়।


Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

  স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর মধ্যে পার্থক্য Sl. No. স্থলবায়ু সমুদ্রবায়ু 1 স্থলবায়ু মূলত শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। সমুদ্রবায়ু মূলত উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির হয়। 2 স্থলবায়ু প্রধানত রাত্রিবেলায় প্রবাহিত হয়। সমুদ্রবায়ু প্রধানত দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়। 3 সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুর প্রবাহ শুরু হয় ও রাত্রির শেষদিকে বায়ুপ্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়। সূর্যোদয়ের পরবর্তী সময়ে এই বায়ুরপ্রবাহ শুরু হয় ও অপরাহ্নে বায়ুপ্রবাহে বেগ বৃদ্ধি পায়। 4 স্থলবায়ু উচ্চচাযুক্ত স্থলভাগ থেকে নিম্নচাপযুক্ত জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে স্থলবায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমুদ্রবায়ু উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে নিম্নচাপযুক্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই কারণে সমুদ্রবায়ুকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে তুলনা করা হয়। 5 স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবার দরুন বেগ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ প্রবাহিত হ...

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

গ্রস্ত উপত্যকা

গ্রস্ত উপত্যকা দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ বসে গেলে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে। এছাড়া, মহীভাবক আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠে সংকোচন ও প্রসারণ বলের সৃষ্টি হয়। যার ফলে ভূপৃষ্ঠের কঠিন শিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে পুনরায় ভূ-আন্দোলন ঘটলে বা ভূ-আলোড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ফাটল রেখা বরাবর শিলার একটি অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, একে চ্যুতি বলে। সংনমন বল বৃদ্ধি পেলে দুটি চ্যুতির মাঝের অংশ খাড়াভাবে নীচে বসে যায়। অবনমিত, ওই অংশকে বলে গ্রস্ত উপত্যকা। 

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন প্রবর্তন সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর–জেনারেল লর্ড লিটন দেশীয় পত্রপত্রিকার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (Vernacular Press Act, 1878) জারি করেন। পটভূমি ঊনবিংশ শতকে দেশীয় সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, দেশীয় সম্পদের বহির্গমন, দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ এ.আর.দেশাইয়ের মতে, “ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে সংবাদপত্র হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম”।

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন আইন প্রবর্তনের কারণ ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জাতীয়তাবাদী নাটক রচনা করে ব্রিটিশের শোষণ ও অপশাসনের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার কাজ শুরু হয়। অমৃতলাল বসুর ‘চা–কর দর্পণ’, দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকে অত্যাচারী শ্বেতাঙ্গ সাহেবদের মুখোশ খুলে দেওয়া হয়। অমৃতলাল বসু ও উপেন্দ্রনাথ দাস ‘হনুমান চরিত’ নামক প্রহসন নাটকে ইংরেজের প্রতি ব্যঙ্গবিদ্রুপ প্রকাশ করেন। গ্রামেগঞ্জে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব সৃষ্টির কাজে নাটকগুলি সাফল্য পায়। সরকার দমনমূলক আইন জারি করে দেশাত্মবোধক নাটকের প্রচার বন্ধ করে দিতে উদ্যত হয়।

ক্ষুদ্রকণা বিশরণ

ক্ষুদ্রকণা বিশরণ                    যেসব শিলা বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থে গঠিত, সেইসব বিষম গুণসম্পন্ন ও বড়ো দানাযুক্ত শিলাগুলো ঠাণ্ডায় বা গরমে সমানভাবে সংকুচিত বা প্রসারিত হতে পারে না। এর ফলে শিলাস্তরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন টানের সৃষ্টি হয়, শিলার গঠন আলগা হয়ে যায় এবং তাতে শিলা হঠাৎ সশব্দে ফেটে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়—মনে হয় যেন বন্দুক থেকে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে।                          শিলাগুলো ক্ষুদ্রক্ষুদ্র কণা আকারে ভেঙে পড়ে। মরু অঞ্চলে সাধারণত বিকেলের দিকে সূর্যাস্তের পরে এই শিলা ফাটার আওয়াজ পাওয়া যায়। উষ্ণতার তারতম্যের ফলে এইভাবে বিষম গুণসম্পন্ন শিলার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়াকে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বা প্রস্তর চূর্ণীকরণ বলে। এই প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হওয়া পাথরচূর্ণগুলো আয়তনে ছোটো হয়। পেরু ও মধ্য অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে এইরূপ আবহবিকার দেখা যায়। আরও পড়ুন:: ⚡ আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন - সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ ⚡ যান্ত্রিক আবহবিকার ⚡ রাসায়নিক আবহবিকার ⚡ জৈবিক আবহবিকার ⚡ জারণ...

জাতীয়তাবাদের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান কী ?

          বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–৯৪ খ্রি.) ছিলেন ঊনবিংশ শতকের অগ্রণী ঔপন্যাসিক ও প্রবন্ধকার। বঙ্কিমচন্দ্রের অধিকাংশ উপন্যাসের বিষয়বস্তু ছিল স্বদেশ ও দেশপ্রেম। বঙ্কিমচন্দ্রের সৃষ্টি ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। তাঁর ‘বন্দেমাতরম্’–মন্ত্র ছিল বিপ্লবীদের বীজমন্ত্র। অরবিন্দ ঘোষ তাই বঙ্কিমকে ‘জাতীয়তাবোধের ঋত্বিক’ বলেছেন।

মানব জীবনের ওপর মালভূমির প্রভাব আলোচনা করো

মানুষের জীবনধারণ ও জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রে মালভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন—  (১) মালভূমি সাধারণত স্বাভাবিক উদ্ভিদে সমৃদ্ধ হয়। যেমন—ছোটোনাগপুর মালভূমিতে প্রচুর শাল ও সেগুন গাছ জন্মে থাকে। (২) কোনোকোনো মালভূমির কঠিন শিলার ওপর উর্বর মৃত্তিকার আবরণ থাকলে সেই অঞ্চল কৃষিকার্যে উন্নতি লাভ করে। যেমন—ভারতের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল। (৩) মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর এবং ভূভাগ কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত বলে চাষ-আবাদ, রাস্তাঘাট ও শিল্পস্থাপনে প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে।