Skip to main content

সাম্প্রতিক পোস্ট

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

আঞ্চলিক ভূগোলের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-ভারতের ভূপ্রকৃতি, নদনদী, জলবায়ু, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও মৃত্তিকা সেট-৭

ভারতের ভূপ্রকৃতি, নদনদী, জলবায়ু, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও মৃত্তিকা


প্রশ্ন:১
পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে আরবসাগরে পতিত হয়েছে এরকম চারটি নদীর নাম লেখাে।

উত্তর: 
পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে আরবসাগরে পতিত হয়েছে এ রকম চারটি নদী হল—
(i) গুজরাট উপকূলের ভাদর, 
(ii) কোঙ্কন উপকূলের উলহাস, 
(iii) কর্ণাটক উপকূলের সরস্বতী এবং 
(iv) মালাবার উপকূলের পেরিয়ার।


প্রশ্ন:২
পশ্চিমবাহিনী নদীর মােহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি কেন ? অথবা, নর্মদা ও তাপ্তী নদীর মােহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন ?

উত্তর: 
পশ্চিম ভারতের কয়েকটি নদী হল—সবরমতী, মাহী, নর্মদা, তাপ্তী প্রভৃতি। 
এই সব নদীগুলির মােহনায় বদ্বীপ গড়ে না ওঠার কারণগুলি হল— 
(i) পশ্চিমবাহিনী নদীগুলি পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে উৎপন্ন হওয়ায় এদের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ তুলনামূলকভাবে পূর্ববাহিনী নদী অপেক্ষা কম। ফলে নদীর জলে পলির পরিমাণও কম থাকে। 
(ii) নর্মদা ও তাপ্তী নদীদ্বয় দৈর্ঘ্যে বৃহৎ হলেও এরা গ্রস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, ফলে স্রোতের বেগ বেশি থাকে। মােহানায় পলি সঞ্চয়ের অবকাশ থাকে না। 
(iii) পশ্চিমবাহিনী নদীগুলির উপনদীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় মােট জলের পরিমাণ ও সঞ্চয়যােগ্য পলির পরিমাণ কম হয়। 
(iv) খাম্বাত উপসাগর গভীর হওয়ায় (সমুদ্রতলের ঢাল) পলি সঞ্চিত হতে পারে না।


প্রশ্ন:৩
লুনি নদীর গতিপথ উল্লেখ করো।

উত্তর: 
ভারতের একটি অন্তর্বাহিনী নদী হল লুনি। লুনি নদী (দৈর্ঘ্য ৪৫০ কিমি) রাজস্থানের আজমীরের দক্ষিণ-পশ্চিমে আরাবল্লি পর্বতের উত্তরাংশে নাগপাহাড়ের আনাসাগর হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। উৎপত্তির পর এই নদী রাজস্থানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে কচ্ছের রানে মিলিত হয়েছে। বর্ষাকাল ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় লুনি নদীতে জল থাকে না। এই নদীর দুটি প্রধান উপনদী হল— জওয়াই ও সুকরী।


প্রশ্ন:৪
দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ পূর্ববাহিনী নদীর মােহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে কেন ?

উত্তর: 
দক্ষিণ ভারতের প্রধান পূর্ববাহিনী নদীগুলি হল—মহানদী, গােদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি। প্রতিটি নদীর মােহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে। 
এর প্রধান কারণগুলি হল— 
(i) নদীগুলির দৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বেশি এবং উপনদীর সংখ্যাও বেশি হওয়ায় নদীর জলে পলির পরিমাণ বেশি থাকে। 
(ii) প্রতিটি নদীই বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। ভারতের পূর্ব উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপকূল সংলগ্ন মহীসােপান অঞ্চল অগভীর ও কম ঢালু। 
(iii) নদীগুলির নিম্নপ্রবাহে স্রোতের বেগ কম থাকায় মােহানায় সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। 
(iv) সমুদ্রস্রোতের প্রভাব কম থাকায় নদীর সঙ্গে আগত নুড়ি, কাঁকর, বালি সহজেই মােহনায় অধঃক্ষেপিত হয়। 
(v) বারবার ভূ-আলােড়নের ফলে পূর্ব উপকূল ক্রমাগত উঁচু হওয়ায় নদনদীর স্রোতের বেগ হ্রাস পেয়েছে ফলে মােহানায় সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 
(vi) সমুদ্র তরঙ্গের সঞ্চয়ধর্মী প্রবণতা বদ্বীপ সৃষ্টির একটি প্রধান কারণ।


প্রশ্ন:৫
গােদাবরী ও কৃষ্ণা নদীর উৎপত্তিস্থান ও মােহানা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তর: 
গােদাবরী নদী পশ্চিমঘাট পর্বতের এ্যম্বক শৃঙ্গা থেকে উৎপন্ন হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। কৃষ্ণা নদী পশ্চিমঘাট পর্বতের মহাবালেশ্বর পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে বিজয়ওয়াড়ার কাছে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে।


প্রশ্ন:৬
দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ববাহিনী কেন ?

উত্তর: 
আরবসাগরীয় সামুদ্রিক পাতের চাপ প্রতিরােধ করতে গিয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলসহ দাক্ষিণাত্য মালভূমি সামগ্রিকভাবে পূর্বদিকে ঢালু হয়ে গেছে। তাই দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদনদী দাক্ষিণাত্য মালভূমি-সংলগ্ন পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে ভূমির স্বাভাবিক ঢাল অনুসারে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। যেমন—মহানদী, গােদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি। এইজন্যই দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্বৰ্বাহিনী।


প্রশ্ন:৭
দক্ষিণ ভারতের নদনদীতে বন্যার প্রকোপ কম কেন ?

উত্তর: 
দক্ষিণ ভারতের প্রধান নদীগুলি হল—গােদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, মহানদী, নর্মদা, তাপ্তী প্রভৃতি। এই সব নদীগুলি বেশিরভাগই বৃষ্টির জলে পুষ্ট। ফলে বর্ষাকাল ব্যতীত বছরের অন্যান্য সময় নদীতে জল প্রবাহের পরিমাণ কমে যায়। এ ছাড়া দক্ষিণাত্য মালভূমি পশ্চিমঘাট পর্বতের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে বৃষ্টিপাতও কম হয়ে থাকে ফলে নদীতে জলের জোগান সেই পরিমাণ বৃদ্ধি পায় না। এইজন্য দক্ষিণ ভারতের নদনদীতে বন্যার প্রকোপ কম।


প্রশ্ন:৮
উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি নদীর নাম লেখাে।

উত্তর: 
উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি নদী হল—
(i) ত্রিপুরার গােমতী, 
(ii) মিজোরামের কালাদান, 
(iii) মণিপুরের বরাক এবং 
(iv) মেঘালয়ের সিমসাং।


প্রশ্ন:৯
ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যার কারণ উল্লেখ করো।

উত্তর: 
ব্রহ্মপুত্র নদ তিব্বত মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে দীর্ঘ পার্বত্য পথ অতিক্রম করে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ হয়ে অসমের সমভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পার্বত্য প্রবাহের ক্ষয়িত পদার্থসমূহ অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় ক্রমাগত সঞ্চিত হওয়ার ফলে নদীখাতের গভীরতা হ্রাস পেয়েছে। আবার বর্ষাকালে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান উপনদী সাংপাে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি ও বরফগলা জল বয়ে নিয়ে এসে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়। এ ছাড়া, বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। ফলে নদীতে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই অতিরিক্ত জল (বৃষ্টির জল ও বরফগলা জল) বহন করার ক্ষমতা ব্রহ্মপুত্রের থাকে না। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়।


প্রশ্ন:১০
পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম ও অবস্থান উল্লেখ করাে।

উত্তর: 
মাজুলি নদীদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপ। অসম রাজ্যে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহপথে মাজুলি নদীদ্বীপ অবস্থিত।

Comments

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য

  ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘর্ণবাত-এর পার্থক্য Sl. No. ঘূর্ণবাত প্রতীপ ঘূর্ণবাত 1 ঘূর্ণবাতের নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর উচ্চচাপ বলয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উচ্চচাপ কেন্দ্রের চারিদিকে থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বলয়। 2 নিম্নচাপ কেন্দ্রে বায়ু উষ্ণ, হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্রে বায়ু শীতল, ভারী ও নিম্নগামী হয়। 3 ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে, ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল অল্প সময়ে প্রভাবিত হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে না। 4 ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। বৃষ্টিপাত ও ঝড়-ঝঞ্ঝা ঘটে না। মাঝেমাঝে তুষারপাত ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়৷ 5 ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ বিরাজ করে। প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে। 6 চারিদিক থেকে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ কেন্দ্রমুখী। প্রতীপ ঘূর্ণবাতে কেন...

জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল ?

জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল      ভারতীয় জাতীয় রাজনীতিতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মূলত ভারতবাসীর আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও ব্রিটিশবিরোধী ক্ষোভের হাত থেকে ব্রিটিশ শাসনকে রক্ষা করার জন্যই।  জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য (১) কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন— উদ্দেশ্য ঘোষণা—বোম্বাইয়ের গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজ হল জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে (১৮৮৫ খ্রি., ২৮ ডিসেম্বর) সভাপতির ভাষণে উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে চারটি মূল উদ্দেশ্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এগুলি হল—   (i) ভাষাগত ও ধর্মীয় বৈচিত্রে ভরা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের দেশপ্রেমীদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও একাত্মতা গড়ে তোলা, (ii) সম্প্রীতির দ্বারা জাতি, ধর্ম, প্রাদেশিকতার তুচ্ছ সংকীর্ণতা দূর করে জাতীয় সংহতির পথ প্রশস্ত করা, (iii) শিক্ষিতদের সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করে সামাজিক ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানের উপায় নির্ণয় করা, (iv) ভারতের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য ভবিষ্যৎ কর্মসূচি গ্রহণ করা।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।

নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও।   অথবা,  একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।  অথবা,  নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও।             উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়।  এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়।  নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা:       পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি.)

দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন প্রবর্তন সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর–জেনারেল লর্ড লিটন দেশীয় পত্রপত্রিকার কণ্ঠরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন (Vernacular Press Act, 1878) জারি করেন। পটভূমি ঊনবিংশ শতকে দেশীয় সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, দেশীয় সম্পদের বহির্গমন, দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ এ.আর.দেশাইয়ের মতে, “ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে সংবাদপত্র হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম”।

পলল ব্যজনী বা পলল শঙ্কু

পলল ব্যজনী বা পলল শঙ্কু                     পর্বত্য অঞ্চল থেকে সমভূমিতে প্রবেশ করলে নদীর গতিপথের ঢাল হ্রাস পায়। ফলে নদীর ক্ষমতাও কমে যায়। উচ্চপ্রবাহের ক্ষয়িত পদার্থসমূহ (শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি) সমভূমিতে প্রবেশের মুখে পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে শঙ্কু আকৃতির ভূমিরূপ গঠন করে। একে পলিশঙ্কু বলে। দেখতে হাত পাখার মতো হয় বলে একে পলল পাখা বা পলল ব্যজনীও বলে। 

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা ‘মেখলা’ শব্দের মানে হল ‘কোমর বন্ধনী’। অসংখ্য আগ্নেয়গিরি মেখলা বা কোমর বন্ধনীর আকারে কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যখন অবস্থান করে, তখন তাকে ‘আগ্নেয় মেখলা’ বলা হয়। ভূবিজ্ঞানীর মতে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে ও এশীয় মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে পাত সীমায় ফাটল বরাবর অগ্ন্যুৎপাত ঘটে থাকে এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। 

ষাঁড়াষাঁড়ি বান

ষাঁড়াষাঁড়ি বান              বর্ষাকালে স্বাভাবিক কারণেই নদীতে জলের পরিমাণ ও বেগ বেশি থাকে। এই সময় জোয়ারের জল নদীর    মোহানায় প্রবেশ করলে জোয়ার ও নদীস্রোত—এই বিপরীতমুখী দুই স্রোতের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর ফলে নদীর জল প্রবল শব্দ সহকারে প্রচণ্ড স্ফীত হয়ে ওঠে।  

ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য

  ভরা কোটাল ও মরা কোটালের পার্থক্য Sl. No. ভরা কোটাল মরা কোটাল 1 চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ পৃথিবীর একই স্থানের উপর কার্যকরী হয়, ফলে ভরা কোটালের সৃষ্টি হয়। চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্য সমকোণী অবস্থানে থাকলে পৃথিবীর উপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী হয়, ফলে মরা কোটালের সৃষ্টি হয়। 2 মানবজীবনের উপর ভরা কোটালে (নদী-মোহানা, নৌ-চলাচল, মাছ আহরণ ইত্যাদি)-র প্রভাব বেশি। মানবজীবনের উপর মরা কোটালের প্রভাব কম। 3 ভরা কোটাল হয় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে। মরা কোটাল হয় শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। 4 ভরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতল সবচেয়ে বেশী স্ফীত হয়। মরা কোটালের ক্ষেত্রে সাগর-মহাসাগরের জলতলের স্ফীতি সবচেয়ে কম হয়। 5 অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চাঁদ ও সূর্য অবস্থান করে। পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চাঁদের মাঝে পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমীত...

মালনাদ ও ময়দান

মালনাদ ও ময়দান মালনাদ— কানাড়ি ভাষায় মালনাদকে মাল অর্থাৎ, ‘পাহাড়’, নাদ অর্থাৎ, ‘দেশ’ ‘পাহাড়ি দেশ’ বলা হয়। কর্ণাটক মালভূমির দক্ষিণাংশ ও পশ্চিমাংশের উচ্চতা বেশি এবং এই অঞ্চল কিছুটা বন্ধুর ও পর্বতময়। পর্বতময় এই অঞ্চলকে মালনাদ বলা হয়। এটি ৩২০ কিলোমিটার লম্বা এবং ৩৫ কিলোমিটার চওড়া উঁচুনীচু ঢেউখেলানো প্রকৃতির হয়। এখানকার পাহাড়গুলোর চূড়া গোলাকার। গ্রানাইট ও নাইস পাথরে গড়া এই ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি অঞ্চলটি কর্ণাটক মালভূমির অপেক্ষাকৃত উঁচু অংশ। এখানকার মাটির রং সাধারণত লাল।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো।

মানব জীবনের ওপর পর্বতের প্রভাব উল্লেখ করো। সমুদ্র সমতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু ও বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় স্তূপ যার ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বন্ধুর, ভূমির ঢাল বেশ খাড়া এবং গিরিশৃঙ্গ ও উপত্যকা বর্তমান তাকে পর্বত বলে৷ খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই পর্বত মানুষের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। মানবজীবনে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবগুলি হল—