নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
ভূত্বকের আবহবিকার
প্রশ্ন:১
হাইড্রেশন বা জলযােজন কাকে বলে ?
উত্তর:
শিলামধ্যস্থ খনিজের সঙ্গে জল যুক্ত হলে, মূল খনিজ গৌণ খনিজে পরিণত হয়, ফলে শিলাস্তর বিয়ােজিত হয়। রাসায়নিক আবহবিকারের এই প্রক্রিয়াকে হাইড্রেশন বা জলযােজন বলে। এই প্রক্রিয়ায় উৎকৃষ্ট হেমাটাইট আকরিক নিকৃষ্ট লিমােনাইট আকরিকে পরিণত হয়।
প্রশ্ন:২
বৃষ্টিবহুল ও বৃষ্টিহীন অঞ্চলে কীভাবে আবহবিকার ঘটে ?
উত্তর:
বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে প্রচুর আর্দ্রতা ও জৈব পদার্থের উপস্থিতির জন্য রাসায়নিক আবহবিকার এবং বৃষ্টিহীন অঞ্চলে আর্দ্রতার অভাব, জৈব পদার্থের অভাব, উত্তাপের চরম তারতম্য প্রভৃতি কারণে যান্ত্রিক আবহবিকার বেশি কার্যকরী হয়।
প্রশ্ন:৩
আবহবিকারের শ্রেণিবিভাগ করাে।
উত্তর:
আবহবিকারকে প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে যথাক্রমে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়—
(১) যান্ত্রিক আবহবিকার,
(২) রাসায়নিক আবহবিকার,
(৩) জৈবিক আবহবিকার।
জৈবিক আবহবিকারকে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—
(১) জৈব-যান্ত্রিক,
(২) জৈব-রাসায়নিক।
প্রশ্ন:৪
আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন-এর মধ্যে একটি পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
আবহবিকারের ফলে অভ্যন্তরভাগের শিলাস্তর ভূপৃষ্ঠে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে না।
ক্ষয়ীভবনের ফলে অভ্যন্তরভাগের মূল শিলাস্তুর ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন:৫
কার্বোনেশন বা অঙ্গারযােজন কী ?
উত্তর:
শিলা মধ্যস্থ খনিজ, প্রধানত চুনাপাথর জাতীয় খনিজের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইডের সংযােগে শিলার বিয়ােজনকে কার্বোনেশন বলে।
প্রশ্ন:৬
রেগােলিথ কাকে বলে ?
উত্তর:
আবহবিকারের ফলে উৎপন্ন বিভিন্ন আকার ও আয়তনের শিলাচূর্ণ প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা অন্যত্র অপসারিত না হয়ে মূল শিলাস্তরের ওপর সঞ্চিত হতে থাকে। ক্রমাগত সঞ্চয়ের ফলে শিলাচূর্ণের পুরু আস্তরণ সৃষ্টি হয়। একেই রেগােলিথ বলে। কালক্রমে রেগােলিথের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ও হিউমাস যুক্ত হয়ে মাটি তৈরি হয়।
প্রশ্ন:৭
রাসায়নিক আবহবিকার কী কী প্রক্রিয়ায় ঘটে ?
উত্তর:
রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াগুলি হল—
(১) জারণ বা অক্সিডেশন,
(২) অঙ্গারযােজন বা কার্বোনেশন,
(৩) জলযােজন বা হাইড্রেশন,
(৪) আর্দ্রবিশ্লেষণ বা হাইড্রোলিসিস,
( ঙ ) দ্রবণ বা সলিউশন।
প্রশ্ন:৮
অক্সিডেশন বা জারণ কাকে বলে ?
উত্তর:
শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে অক্সিজেন প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে যুক্ত হলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শিলার যে বিকার বা বিকৃতি ঘটে তাকে অক্সিডেশন বা জারণ বলে। প্রধানত লােহাযুক্ত শিলাস্তরেই এই প্রকার আবহবিকার ঘটে থাকে।
প্রশ্ন:৯
কী কী কারণে যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে ?
উত্তর:
ভূবিজ্ঞানী পেরি রাইস যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটার পেছনে প্রধান পাঁচটি কারণ বা শক্তিকে চিহ্নিত করেছেন। এগুলি হল—
(১) তাপের তারতম্যে শিলার সংকোচন ও প্রসারণ,
(২) জল ও তুষারের মিলিত ক্রিয়া,
(৩) বৃষ্টিপাত,
(৪) শিলার বােঝা লাঘবজনিত প্রসারণ,
(৫) শিলাস্তরে আর্দ্রতার তারতম্য।
প্রশ্ন:১০
আবহবিকারকে বিচূর্ণীভবন বা শিলাবিকার বলা হয় কেন ?
উত্তর:
আবহবিকারের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তর যান্ত্রিক বা রাসায়নিক উপায়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়। তাই আবহবিকারের অপর নাম বিচূর্ণীভবন।
অন্যদিকে, আবহবিকারের মাধ্যমে শিলাস্তরের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বিকার বা বিকৃতি ঘটে বলে একে শিলাবিকারও বলে।
Comments
Post a Comment