নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
ভারতীয় সংবিধান
প্রস্তাবনা
“ আমরা , ভারতের জনগণ , ভারতকে সার্বভৌম , সমাজতান্ত্রিক , ধর্মনিরপেক্ষ , গণতান্ত্রিক , সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং তার সকল নাগরিকই যাতে সামাজিক , অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার , চিন্তা , মতপ্রকাশ , বিশ্বাস , ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা , সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযােগের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে , আমাদের গণপরিষদে তাজ , ১৯৪৯ সালের ২৬ শে নভেম্বর , এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ , বিধিবদ্ধ এবং নিজেদের অর্পণ করছি । ”
ভারতীয় নাগরিকের মৌলিক অধিকার
( ভারতীয় সংবিধান , ধারা ১৪-৩০ , ৩২ ও ২২৬)
১। সাম্যের অধিকার
✸আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং আইন সকলকে সমান ভাবে রক্ষা করবে ।
✸জাতি , ধর্ম , বর্ণ , নারী - পুরুষ , জন্মস্থান প্রভৃতি কারণে রাষ্ট্র কোনাে নাগরিকের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না ।
✸ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে যােগ্যতা অনুসারে সকলের সমান অধিকার ।
✸অস্পৃশ্যতা নিষিদ্ধ এবং আইন অনুসারে দণ্ডনীয় অপরাধ ।
২। স্বাধীনতার অধিকার
✸ বাক - স্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের অধিকার ।
✸ শান্তিপূর্ণ ও নিরস্ত্রভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার ।
✸সংঘ ও সমিতি গঠনের অধিকার ।
✸ ভারতের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার ।
✸ভারতের যে - কোনাে স্থানে স্বাধীনভাবে বসবাস করার অধিকার ।
✸ যে - কোনাে জীবিকা, পেশার বা ব্যাবসা - বাণিজ্য করার অধিকার ।
✸ জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার ।
৩।শােষণের বিরুদ্ধে অধিকার
✸ কোনো ব্যক্তিকে ক্রয় , বিক্রয় করা বা বেগার খাটানাে যাবে না ।
✸ চোদ্দো বছরের কমবয়স্ক শিশুদের খনি, কারখানা বা অন্য কোনো বিপদজনক কাজে নিযুক্ত করা যাবে না।
৪। ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার
✸সকল শ্রেণির নাগরিক নিজস্ব ভাষা , লিপি ও সংস্কৃতির বিকাশ ও সংরক্ষণ করতে পারবে ।
✸রাষ্ট্র পরিচালিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনাে শিক্ষা - প্রতিষ্ঠানে শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে কোনাে ব্যক্তিকে ধর্ম, জাতি বা ভাষার অজুহাতে বঞ্চিত করা যাবে না ।
✸ধর্ম অথবা ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলি নিজেদের পছন্দমতাে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে।
৫। সংস্কৃতি ও শিক্ষাবিষয়ক অধিকার
✸স্বতন্ত্র ভাষা, হরফ ও সংস্কৃতিগত সম্প্রদায়ের অধিকার সংরক্ষণ ।
✸ ধর্ম , ভাষা , জাতি , বর্ণগত কারণে শিক্ষালয়ে ভরতির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না ।
✸ ধর্ম ও ভাষাগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পছন্দমতো শিক্ষালয় স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার।
✸ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুদানের ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য করা হবে না ।
৬। সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার
✸মৌলিক অধিকারগুলি বলবৎ ও কার্যকর করার জন্য নাগরিকরা সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের কাছে আবেদন করতে পারবে - প্রয়ােজনে বিশেষ লেখ ( Writ ) জারি করতে পারবে ; হেবিয়াস কর্পস ( Habeas Corpus) , ম্যানডামাস ( Mandamus ) , সার্কশিয়োরী ( Certiorari ) , প্রহিবিশন ( Prohibition ) ও কুয়ো ওয়ারান্টো ( ( Quo-Warranto )
মৌলিক কর্তব্য
(ভারতীয় সংবিধান , ধারা ৫১ এ)
➤ সংবিধানের প্রতি আনুগত্য , সাংবিধানিক আদর্শ ও প্রতিষ্ঠান , জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ।
➤ মহৎ যে সব আদর্শ স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে তাদের লালন ও অনুসরণ ।
➤ ভারতের সার্বভৌমত্ব , ঐক্য ও সংহতি রক্ষা ।
➤ আহ্বান এলে দেশরক্ষা ও জাতির সেবায় আত্মনিয়ােগ ।
➤ ভাষা - ধর্ম - অঞ্চল - শ্রেণি নির্বিশেষে ভারতের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্যচেতনা ও ভ্রাতৃত্ববােধ উদ্বোধন ।
➤ দেশের মিশ্র সংস্কৃতির মূল্যবান উত্তরাধিকারের মাহাত্ম্য উপলব্ধি ও সংরক্ষণ।
➤ আরণ্য , হ্রদ , নদনদী , বন্যজীবনসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষণ ও উন্নয়ন এবং প্রাণীজগতের প্রতি সহানুভূতি পোষণ।
➤ বিজ্ঞানমনস্কতা , মানবতাবাদ , অনুসন্ধান ও সংস্কারের বিকাশ ।
➤ সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা ও হিংসা পরিহার করা ।
➤ জাতি যাতে নিয়ত তার কর্মোদ্যম ও সাফল্যের উচ্চতর স্তরে পৌঁছাতে পারে , জীবনের সর্বক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও সমবেত প্রয়াসে উৎকর্ষের সেই লক্ষ্যে পৌঁছানাের প্রচেষ্টা ।
➤ পিতামাতা / অভিভাবকের দায়িত্ব ৬ – ১৪ বছর বয়স্ক শিশুদের শিক্ষার সুযােগের ব্যবস্থা করা ।
Comments
Post a Comment