নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
ভাবর অঞ্চল
উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলের উত্তর প্রান্তে অর্থাৎ, শিবালিক পর্বতের পাদদেশ বরাবর ১০-১৫ কিমি চওড়া, ঢেউখেলানো উচ্চভূমিকে ভাবর অঞ্চল বলা হয়। হিমালয় থেকে আগত অসংখ্য নদনদীবাহিত ছোটো নুড়ি, বালি, পাথর সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণাকার উচ্চভূমির সৃষ্টি করে। এইসব উচ্চভূমি ক্রমাগত সঞ্চয়ের ফলে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উঁচুনীচু , ঢেউখেলানো বিস্তীর্ণ ভূমিরূপের সৃষ্টি করে।
বালি ও পাথরের নুড়ি এই অঞ্চলের মৃত্তিকার প্রধান উপাদান, তাই এই অঞ্চলের মৃত্তিকা অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত হয়। এই কারণেই হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন হওয়া ছোটো ছোটো নদীগুলো ভাবর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসার পর ভূগর্ভস্থ হয়ে অসংখ্য ফল্গুধারার সৃষ্টি করেছে। অঞ্চলটি নুড়ি, পাথরে ঢাকা হওয়ায় নদীগুলি ভূপৃষ্ঠের ওপর দিকে প্রবাহিত হয় না। অনেক সময় নদীগুলি অন্তঃসলিলারূপে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণের তরাই অঞ্চলে পুনরায় ভূপৃষ্ঠের ওপরে প্রবাহিত হতে থাকে। এই অঞ্চলই পাঞ্জাবে ভাবর এবং উত্তরবঙ্গ ও অসমে দুয়ার নামে পরিচিত।
Comments
Post a Comment