ভারতীয় ইতিহাসে এবং জনজীবনে নদনদীর প্রভাব ভারত-একটি নদীমাতৃক দেশ। ভারতীয় সভ্যতার সূচনা ঘটে নদী-অববাহিকা অঞ্চল থেকে। ভারতীয় ইতিহাসের ওপরও সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, গোদাবরী, যমুনা প্রভৃতি নদনদীর যথেষ্ট প্রভাব বর্তমান। নদনদীগুলি ভারতের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিকে সিক্ত করেছে, পলি মৃত্তিকায় উর্বর করেছে, আর শস্য-শ্যামলা করে ভারতীয় কৃষি-অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। অন্য দিকে নদী-উপকূলবর্তী অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে জনপদ, নগর, বাণিজ্যকেন্দ্র বা তীর্থস্থান। (১) সভ্যতার বিকাশ: সিন্ধুনদের অববাহিকাতেই জন্ম নেয় পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা। পঞ্চনদীর তীরে বিকাশ ঘটে বৈদিক সভ্যতার। পরবর্তীকালে গঙ্গা-অববাহিকা ধরে বৈদিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে। সিন্ধু সভ্যতা: ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম এবং অন্যতম উন্নত সভ্যতা সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলির তীরে গড়ে উঠেছিল। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর মতো শহরগুলি নদীর উর্বর পলিমাটি এবং জল সরবরাহকে কাজে লাগিয়ে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল। গঙ্গা সভ্যতা: গঙ্গা নদী এবং তার অববাহিকা বরাবর পরবর্তীকালে বৈদিক সভ্যতা, মহাজনপদ এ...
ভাবর অঞ্চল
উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলের উত্তর প্রান্তে অর্থাৎ, শিবালিক পর্বতের পাদদেশ বরাবর ১০-১৫ কিমি চওড়া, ঢেউখেলানো উচ্চভূমিকে ভাবর অঞ্চল বলা হয়। হিমালয় থেকে আগত অসংখ্য নদনদীবাহিত ছোটো নুড়ি, বালি, পাথর সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণাকার উচ্চভূমির সৃষ্টি করে। এইসব উচ্চভূমি ক্রমাগত সঞ্চয়ের ফলে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উঁচুনীচু , ঢেউখেলানো বিস্তীর্ণ ভূমিরূপের সৃষ্টি করে।
বালি ও পাথরের নুড়ি এই অঞ্চলের মৃত্তিকার প্রধান উপাদান, তাই এই অঞ্চলের মৃত্তিকা অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত হয়। এই কারণেই হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন হওয়া ছোটো ছোটো নদীগুলো ভাবর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসার পর ভূগর্ভস্থ হয়ে অসংখ্য ফল্গুধারার সৃষ্টি করেছে। অঞ্চলটি নুড়ি, পাথরে ঢাকা হওয়ায় নদীগুলি ভূপৃষ্ঠের ওপর দিকে প্রবাহিত হয় না। অনেক সময় নদীগুলি অন্তঃসলিলারূপে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণের তরাই অঞ্চলে পুনরায় ভূপৃষ্ঠের ওপরে প্রবাহিত হতে থাকে। এই অঞ্চলই পাঞ্জাবে ভাবর এবং উত্তরবঙ্গ ও অসমে দুয়ার নামে পরিচিত।
Comments
Post a Comment