নদীর উচ্চপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তার বর্ণনা দাও। অথবা, একটি আদর্শ নদীর বিভিন্ন ক্ষয়কাজের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, নদীপ্রবাহের যে-কোনও একটি অংশে নদীর কার্যের বিবরণ দাও। উচ্চপ্রবাহ বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় করা। এর সঙ্গে বহন ও অতি সামান্য পরিমান সঞ্চয়কার্য ও করে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে এই অংশে নদীপথের ঢাল খুব বেশি হয়, ফলে নদীর স্রোতও খুব বেশি হয়। স্বভাবতই পার্বত্য অঞ্চলে নদী তার প্রবল জলস্রোতের সাহায্যে কঠিন পাথর বা শিলাখণ্ডকে ক্ষয় করে এবং ক্ষয়জাত পদার্থ ও প্রস্তরখণ্ডকে সবেগে বহনও করে। উচ্চ প্রবাহে নদীর এই ক্ষয়কার্য প্রধানত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়া গুলি হলো - অবঘর্ষ ক্ষয়, ঘর্ষণ ক্ষয়, জলপ্রবাহ ক্ষয় ও দ্রবণ ক্ষয়। নদীর ক্ষয়কাজের ফলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, যেমন: (১) ইংরেজি "।" এবং "V" অক্ষরের মতো নদী উপত্যকা: পার্বত্য গতিপথের প্রথম অবস্থায় প্রবল বেগে নদী তার গতিপথের ...
কালবৈশাখী
গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল-মে মাসে) বিকলের দিকে পূর্বভারতে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও বাংলাদেশে মাঝেমাঝে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিমদিক থেকে বজ্রবিদ্যুৎ ও বৃষ্টিপাতসহ এক তীব্র ঝড় সংঘটিত হয়। একেই কালবৈশাখী বলে। ‘কাল’ অর্থ ‘অশুভ’ এবং বৈশাখ মাসে ঘটে বলে একে ‘কালবৈশাখী’ বলে৷ তবে কালবৈশাখী বলা হলেও শুধু বৈশাখ মাস নয়, ফাল্গুনের শেষ থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই ঝড়ের আগমন হয়।
কালবৈশাখী একটি আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ। গ্রীষ্মকালের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসে ছোটোনাগপুর মালভূমি ও পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসন্নিহিত অঞ্চল প্রখর সূর্যতাপে দ্রুত উত্তপ্ত হয়, ফলে সেখানে স্থানীয়ভাবে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে, সেই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রচণ্ড বেগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং উত্তরের শীতল বায়ু ছুটে আসে। এই দুই বিপরীতধর্মী বায়ুপ্রবাহের সংঘর্ষের ফলে এই ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। কালবৈশাখীর ঘূর্ণবাত সাধারণত উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ছুটে আসে, তাই একে ইংরেজিতে ‘Nor Wester’ (নর-ওয়েস্টার) বলা হয়। কালবৈশাখীর বায়ু বেশ ঠান্ডা, তাই এই বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড উষ্ণতা একলাফে অনেকটা কমে যায়। গরমের তীব্রতা কিছুটা কমে। কিন্তু, আরামদায়ক আবহাওয়া সৃষ্টি হলেও তীব্র ঝড়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়। কালবৈশাখীর বৃষ্টিপাত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে আউশ ধান ও পাটচাষের পক্ষে উপকারী হয়।
Comments
Post a Comment