প্রাচীন ভারত ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট (Ancient India and Geographical Context) - প্রশ্নোত্তর ১। ভারতবর্ষকে কে নৃতত্ত্বের যাদুঘর আখ্যা দিয়েছেন? উঃ। ভিনসেন্ট স্মিথ ভারতবর্ষকে 'নৃতত্ত্বের যাদুঘর' বলে আখ্যা দিয়েছেন। ২। দ্রাবিড় সভ্যতা ভারতের কোথায় প্রথম গড়ে ওঠে? উঃ। দ্রাবিড় সভ্যতা প্রথম গড়ে ওঠে দক্ষিণ ভারতে। ৩। 'নাডিক' নামে কারা পরিচিত? উঃ। আর্যরা 'নার্ডিক' নামে পরিচিত। ৪। ভারতের প্রচীনতম লিপি কোনটি? উঃ। ভারতের প্রাচীনতম লিপি হল সিন্ধু লিপি।
আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বত
পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের উত্তপ্ত ও গলিত ম্যাগমা বা লাভা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা ভূস্তরের ফাটল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে ঠাণ্ডা হয়ে জমাট বেঁধে যে শঙ্কু আকৃতির পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে সঞ্চয়জাত পর্বত বা আগ্নেয় পর্বত বলে।
ভূবিজ্ঞানী ম্যাকডোনাল্ডের মতে, দুটি ভূত্বকীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে বা দুটি পাতের বিপরীতমুখী অগ্রসরের ফলে পাতসীমায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। এই ফাটল বরাবর ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে শীতল ও কঠিন হয়ে শিলায় পরিণত হয়। কোনো নির্দিষ্ট স্থানে একই ঘটনা বারবার ঘটলে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি করে। আবার কোনো সময় ভূগর্ভে তাপ বৃদ্ধি পেলে ভূগর্ভস্থ পদার্থসমূহ গলে তরল শিলা স্রোত বা ম্যাগমা সৃষ্টি করে। এই ম্যাগমা ভূগর্ভে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে। চাপের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ম্যাগমা ভূত্বকের কোনো উল্লম্ব ফাটল ধরে ভূপৃষ্ঠে উঠে আসে এবং লাভারূপে ভূপৃষ্ঠে ক্রমাগত জমা হয়ে শঙ্কু আকৃতির আগ্নেয় পর্বত গঠন করে। তবে পরবর্তীকালে বিভিন্ন ক্ষয়কারী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শীর্ষদেশ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে এই ধরনের পর্বত চ্যাপটা আকৃতিতে পরিণত হয়।
আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্য—
(১) অগ্ন্যুৎপাতের সময় ভূগর্ভ হতে উঠে আসা ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের ওপর লাভারূপে সঞ্চিত হয়ে এবং জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি করে।
(২) সাধারণত আগ্নেয় পর্বতকে দেখতে অনেকটা ত্রিভুজ বা শঙ্কুর মতো হয়।
(৩) আগ্নেয় পর্বতের শীর্ষদেশে এক বা একাধিক জ্বালামুখ নামে গহ্বর থাকে যা একেকটি নলের মতো পথের মাধ্যমে ভূগর্ভের ম্যাগমা গহ্বরের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
(৪) পৃথিবীর দুর্বল স্থানসমূহে আগ্নেয় পর্বতের আধিক্য দেখা যায়। যেমন—প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলভাগ এবং আটলান্টিক মহাসাগরের সামুদ্রিক শৈলশিরা অঞ্চল।
(৫) অনেক সময় আগ্নেয় পর্বতগুলো গভীর সমুদ্রতল থেকে সঞ্চিত হতে হতে দ্বীপের মতো সমুদ্রের ওপরে উঠে আসে।
(৬) কখনও কখনও আগ্নেয় পর্বতগুলোতে লাভাস্তরের মধ্যে ছাই এবং প্রস্তরখণ্ড দেখা যায়।
(৭) আগ্নেয় পর্বতের ঢাল খুব বেশি হয় না।
(৮) আগ্নেয় পর্বতের উচ্চতা মাঝারি ধরনের হয়।বারবার অগ্নুৎপাত হলে এর উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
(৯) বেশিরভাগ আগ্নেয় পর্বত শঙ্কু আকৃতির হলেও পরবর্তীকালে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়ের ফলে এর শীর্ষদেশ কিছুটা চ্যাপটা আকৃতিতে পরিণত হয়।
(১০) পরবর্তী অগ্ন্যুৎপাতের প্রবল বিস্ফোরণে অনেক সময় আগ্নেয়গিরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। যেমন—ক্রাকাতোয়া আগ্নেয় পর্বতটি ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে এভাবেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
উদাহরণ—
পৃথিবীর বিভিন্ন আগ্নেয়গিরিগুলি, যেমন–জাপানের ফুজিয়ামা, আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো, ইতালির ভিসুভিয়াস প্রভৃতি আগ্নেয় পর্বতের উদাহরণ।
Comments
Post a Comment