ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন - সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( Evolution of Indian Civilization - Short Questions and Answers ) ১। প্রস্তরযুগ বলতে কী বোঝো? প্রস্তরযুগকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী? যে যুগে মানুষ পাথরের হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করত, সেই যুগকে প্রস্তরযুগ বলা হয়। প্রস্তরযুগকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- (১) প্রাচীন প্রস্তরযুগ, (২) মধ্য প্রস্তরযুগ, (৩) নব্য প্রস্তরযুগ। ২। প্রাচীন প্রস্তরযুগ, মধ্য প্রস্তরযুগ ও নব্য প্রস্তরযুগের একটা করে বৈশিষ্ট্য দাও। প্রাচীন প্রস্তরযুগ: প্রাচীন প্রস্তরযুগে মানুষ ছিল খাদ্য-সংগ্রাহক। বলা যেতে পারে-Age of Food-gathering Man. মধ্য প্রস্তরযুগ: মধ্য প্রস্তরযুগে মানুষ খাদ্য-উৎপাদকে পরিণত হয়। এসময়কে বলা হয়-Age of Food-producing Man. নব্য প্রস্তরযুগ: এসময় মানুষ নগর সভ্যতার সাথে পরিচিত হয়। ধাতুর যুগ শুরু হয়। ঐতিহাসিক গর্ডন চাইল্ড এসময়কে বলেছেন-Age of Urban Culture.
পশ্চিমাবায়ু
কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারা বছর ধরে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত বায়ুকে পশ্চিমাবায়ু বলে। পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুপ্রবাহ পশ্চিমাবায়ু (Westerlies) নামে পরিচিত।
ফেরেলের সূত্র অনুসারে, এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যথাক্রমে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু এবং উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূপে প্রবাহিত হয়।
এই বায়ু মধ্য অক্ষাংশীয় অঞ্চলে পশ্চিমদিক থেকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু শীতকালে মহাদেশের পশ্চিম ভাগে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়, কিন্তু এই বায়ু দ্বারা মহাদেশের পূর্বে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হয়। দক্ষিণ গোলার্ধের মধ্য অক্ষাংশে জলভাগ বেশি থাকায় পশ্চিমা বায়ু প্রবলবেগে বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হয়। তাই একে ‘প্রবল পশ্চিমাবায়ু’ ও বলে।
পশ্চিমাবায়ুর বৈশিষ্ট্য—
(১) পশ্চিমাবায়ু উত্তর গোলার্ধে কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় (৩০° উত্তর অক্ষাংশ) থেকে সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় (৬০° উত্তর অক্ষাংশ) হয়ে কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (৬০° দক্ষিণ অক্ষাংশ) দিকে প্রবাহিত হয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরীয় উচ্চচাপ বলয়ের (৩০° দক্ষিণ অক্ষাংশ) দিকে প্রবাহিত হয়।
(২) পশ্চিমাবায়ু উত্তর গোলার্ধে সরাসরি দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত না হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
(৩) পশ্চিমাবায়ু দক্ষিণ গোলার্ধে সরাসরি উত্তর দিক থেকে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়।
(৪) উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি থাকার জন্য পাহাড়-পর্বতে বাধা পায় বলে এই গোলার্ধে প্রবাহিত দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ুর গতিবেগ কিছুটা কম। অন্য দিকে, পশ্চিমাবায়ুর গতিপথে উত্তর গোলার্ধে প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় হয়।
(৫) দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর গোলার্ধের তুলনায় জলভাগ বেশি থাকার জন্য এই গোলার্ধে প্রবাহিত উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ুর গতিবেগ উত্তর গোলার্ধে প্রবাহিত পশ্চিমাবায়ুর তুলনায় অনেক বেশি।
(৬) পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির ফলে বায়ুচাপ বলয়গুলির উত্তর ও দক্ষিণে স্থান পরিবর্তনের ফলে উত্তর গোলার্ধের ৩০° থেকে ৪৫° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অংশে শীতকালে (ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে) দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু প্রবাহিত হয় আর গ্রীষ্মকালে (মার্চ থেকে জুন) প্রবাহিত হয় উত্তর-পূর্ব পশ্চিমাবায়ু।
(৭) শীতকালে জলভাগের চেয়ে স্থলভাগ বেশি শীতল থাকায় পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগ কম থাকার জন্য এই ধরনের বৃষ্টিপাত স্থলভাগের সামান্য অংশেই (৩০°– ৪০° দক্ষিণ অক্ষাংশে) সীমাবদ্ধ থাকে।
(৮) পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্ব অংশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমে যেতে থাকায় মহাদেশগুলির এই অঞ্চলের মধ্যবর্তী বিস্তীর্ণ অংশে নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি দেখতে পাওয়া যায়। এই তৃণভূমি উত্তর আমেরিকায় প্রেইরি, দক্ষিণ আমেরিকায় পম্পাস, রাশিয়া ও ইউরোপে স্টেপস্ এবং অস্ট্রেলিয়ায় ডাউনস্ নামে পরিচিত।
(৯) সমুদ্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় পশ্চিমাবায়ু যথেষ্ট পরিমাণে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে বলে, পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পশ্চিম দিকে তুলনামূলকভাবে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার জন্য এই অঞ্চলে কৃষিকাজের সুযোগ সুবিধা বেশি। বিশেষ করে ভূমধ্যসাগরের নিকটবর্তী অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও উৎপন্ন ফসলের উপর শীতকালীন পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই বেশি হয়।
Comments
Post a Comment