টর্নেডো
স্পেনীয় শব্দ ‘টর্নেডো’-র অর্থ ‘বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টি’। টর্নেডো পৃথিবীর প্রবলতম ঝড়। অল্পস্থান ব্যাপী ঘূর্ণবাতকে টর্নেডো বলে। অল্প পরিসরে সংঘটিত হলেও টর্নেডোর শক্তি ও ধ্বংস ক্ষমতা অতি ভীষণ। যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো উপকূল ও মিসিসিপি নদী অববাহিকায় প্রবলতম ঝড় টর্নেডো নামে পরিচিত। অতি অল্পস্থান জুড়ে অত্যন্ত শক্তিশালী নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে টর্নেডোর উৎপত্তি হয়।
টর্নেডোর কেন্দ্রে ঘন কালো মেঘ ফানেলের মতো বা কালো থামের মতো আকৃতি ধারণ করে ভূমি থেকে ঊর্ধ্বাকাশে অবস্থান করে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ব্যাস হয় ১০০-৫০০ কিমির মধ্যে। বাতাস কুণ্ডলী আকারে ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রে প্রবেশ করে এবং প্রায় ৪০ কিমি পর্যন্ত ওপরে ওঠে। এর স্থায়িত্ব মাত্র কয়েক মিনিট হলেও, বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ৩০০-৫০০ কিমি পর্যন্ত হওয়ায় প্রবাহিত অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এর প্রভাবে সমুদ্রে জলস্তম্ভের সৃষ্টি হয়। এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে বায়ু এত প্রবল বেগে ছুটে যায় যে তার টানে অনেক সময় বড় গাছ উপড়ে বহুদূরে গিয়ে পড়ে।
এন্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া প্রায় সর্বত্রই টর্নেডো দেখা গেলেও সবচেয়ে বেশি টর্নেডো সংঘটিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া দক্ষিণ কানাডা, দক্ষিণ এশিয়া (বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারত), দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বমধ্যাংশ, আফ্রিকার দক্ষিণাংশ, উত্তরপশ্চিম এবং দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ, ইটালি, পশ্চিম এবং দক্ষিণপূর্ব অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে টর্নেডো হতে দেখা যায়।
Comments
Post a Comment